বুলেট ট্রেন, পাতাল রেল দূরে নয়: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশে উচ্চ গতির বুলেট ট্রেন ও পাতাল রেল চালুর আশার কথা শুনিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 June 2016, 10:23 AM
Updated : 25 June 2016, 04:17 PM

ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে নতুন ট্রেন সার্ভিস ‘সোনার বাংলা’ এক্সপ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাম্প্রতিক জাপান সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, “আমাদের দেশে কবে হাই স্পিড বুলেট ট্রেন করতে পারব?

“সেই দিন বেশি দূরে না। ইনশাল্লাহ, আমরা বাংলাদেশে করতে পারব।”

পাতাল ট্রেনের সম্ভাব্যতা যাচাই চলার কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আগামীতে পাতাল রেলও করতে পারব।”

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে শনিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে নতুন এই ট্রেন উদ্বোধন করেন।

চট্টগ্রামের পথে ১৬ বগির এই নতুন আন্তঃনগর ট্রেনটি পাঁচ ঘণ্টা ৪০ মিনিটে গন্তব্যে পৌঁছাবে, শুধু ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশনে থামবে।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ইন্দোনেশিয়া থেকে ১০০টি মিটার গেজ এবং ৫০টি ব্রড গেজ যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহ করা হয়েছে। 

অন্যদিকে ভারতীয় ঋণ সহায়তার আওতায় সে দেশ থেকে ১২০টি ব্রড গেজ যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহ করা হয়েছে।

ভারতীয় ঋণ সহায়তার অধিকাংশ রেলের উন্নয়নে ব্যয় করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আঞ্চলিক সহযোগিতার নিদর্শন হিসেবে ভারত সরকার ২০১০ সালে বাংলাদেশকে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ প্রদান করে।

“এ ঋণ চুক্তির আওতায় এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার এবং ভারত সরকার ৭৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ১৪টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এছাড়া ভারত সরকার আরও ২ বিলিয়ন ডলারের দ্বিতীয় ঋণ মঞ্জুর করেছে। এই অর্থের দ্বারা আরও তিনটি নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।”

ঢাকা-রাজশাহী রুটে চলমান সিল্কসিটি ট্রেনে নতুন কোচ দিয়ে তা নতুন আঙ্গিকে চালু করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের লক্ষ্য সারাদেশে রেললাইন চালু করা; যেন দুর্গম এলাকায় রেল যেতে পারে।

“কোনো কাজই কঠিন না। বরিশালবাসী রেললাইন দেখে নাই। ওখানেও রেললাইন করব।”

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট ২০০৯ সালে সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর এ পর্যন্ত ৬২ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে রেলওয়ের ৫৫টি নতুন প্রকল্প এবং ৪২ হাজার ৬০১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৫টি সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন করেছে।

সরকার রেলের বন্ধ শাখা লাইন চালু, ডাবল লাইন নির্মাণ ও নতুন রেললাইন নির্মাণের পাশাপাশি রেলওয়ের জনবল ও রোলিং স্টক সঙ্কট দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

এ পর্যন্ত ৯৮টি নতুন ট্রেন চালু এবং ২৬টি ট্রেনের সার্ভিস বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশকে ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কে যুক্ত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।

বর্তমান সরকারের সময়ে নতুন ২০টি মিটার গেজ এবং ২৬টি ব্রড গেজ লোকোমোটিভ, ১২০টি ব্রড গেজ যাত্রীবাহী গাড়ি, ১৬৫টি ব্রড গেজ ও ৮১টি মিটার গেজ ট্যাংক ওয়াগন, ২৭০টি মিটার গেজ ফ্লাট ওয়াগন এবং ২০ সেট মিটার গেজ ডেমু সংগ্রহ করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, রেল সচিব ফিরোজ সালাহ্ উদ্দিন এবং রেলওয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন।

অন্যদের মধ্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক, স্থানীয় সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরী ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক উপস্থিত ছিলেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী ‘সোনার বাংলা’ এক্সপ্রেস সার্ভিসের কোচগুলো ঘুরে দেখেন।