‘মহিয়সী দুই নারী এখনও আলোকবর্তিকা’

মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর বাংলাদেশের সামাজিক-রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে  যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রেক্ষাপট রচনার জন্য কবি বেগম সুফিয়া কামাল ও শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে স্মরণ করেছেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2016, 09:45 AM
Updated : 24 June 2016, 09:45 AM

বাঙালির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অগ্রণী দুই মহিয়সী নারীকে ‘আলোকবর্তিকা’ উল্লেখ করে তারা বলেছেন, দেশের ক্রান্তিকালে দুই নারীকে আবারও জাগিয়ে তুলতে হবে গণমানুষের অন্তরে।

বেগম সুফিয়া কামালের জন্মদিন এবং জাহানারা ইমামের মৃত্যুবার্ষিকীতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর শুক্রবার সকালে আয়োজন করেছিল এক স্মরণসভা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি প্রকৌশলী রবিউল হুসাইন বলেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে দেশ যখন অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল, তখন মহিয়সী দুই নারী আমাদের পথ দেখিয়েছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাওয়ার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিলেন। মানুষের মনে বিচারের দাবিটি প্রোথিত করেছেন তারাই।”

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী বলেন, “সমাজের নানা কুসংস্কারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে তারা সমাজকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। সমাজে, রাষ্ট্রে নানা কাজে যখন বিপন্নতা নেমে এসেছিলে, তখন তারা দুজন অগ্রপথিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।”

সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের নানা প্রেক্ষাপটে কবি সুফিয়া কামালের প্রজ্ঞার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সুফিয়া কামাল একজন কবি বা সংস্কৃতিকর্মী ছিলেন শুধু তাই নয়, সমাজের নানা সঙ্কটে তিনি ভীষণ সক্রিয় এক কর্মী ছিলেন।”

সুফিয়া কামালের পরামর্শে ১৯৯২ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইস্যুতে গঠিত গণআদালতের আহ্বায়কের ভূমিকা নিয়েছিলেন জাহানারা ইমাম।

“কোনো রাজনৈতিক আন্দোলনে যুক্ত না হয়েও জাহানারা ইমাম সবার মধ্যে আন্দোলন ছড়িয়ে দিলেন। মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে তার উত্থানে সেদিন প্রকম্পিত হয়েছিল সারাদেশ। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিলেন যুদ্ধাপরাধবিরোধী গণজাগরণ,” বলেন কামাল লোহানী। 

শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় কার্যকরের জন্য সুফিয়া কামাল, জাহানারা ইমামের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানের কথাও স্মরণ করেন এই সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।

“বেগম সুফিয়া কামাল, জাহানারা ইমাম ও শেখ হাসিনা- এই ব্যক্তিত্ব আমাদের রাজনীতির অঙ্গনে সৌরভ ছড়িয়েছেন। তাদের জন্য আন্দোলন দেশজুড়ে বিস্তৃত হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মতো বিশাল অর্জন তো তাদের জন্যই সম্ভব হল।”

স্মরণসভায় সুফিয়া কামালের কবিতা আবৃত্তি করেন তামান্না সারোয়ার নীপা, জাহানারা ইমামের রচনাবলী থেকে পাঠ করেন মাহমুদা সিদ্দিকা সুমী। মৈত্রী শিশুদলের বৃন্দ আবৃত্তির পর সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী সংগীত পরিবেশনা করে।