দুই শিশু খুনের দায়ে ৩ জনের ফাঁসির রায়

বরগুনার আলোচিত শিশু রবিউল আউয়াল হত্যাকাণ্ডের দায়ে একমাত্র আসামির মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। নেত্রকোনায় শিশু শুকুর আলী হত্যামামলায় তিনজনের ফাঁসির রায় এসেছে আদালত থেকে।

বরগুনা ও নেত্রকোনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2016, 04:47 PM
Updated : 31 May 2016, 04:53 PM

দশ মাস আগে বরগুনার সোনাকাটা ইউনিয়নের ছোট আমখোলা গ্রামে রবিউল হত্যাকাণ্ডের পর তা সারাদেশেই আলোচনার সৃষ্টি করেছিল।

মঙ্গলবার বরগুনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মাদ আবু তাহের আসামি মিরাজ হোসেনের উপস্থিতিতে মামলার রায় দেন।

একই গ্রামের বাসিন্দা মিরাজকে (৪৫) ২০ লাখ টাকা জরিমানাও দিতে হবে, যা অনাদায়ে আরও সাত বছর কারাভোগ করতে হবে।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত বছরের ৩ অগাস্ট রাতে খালে পেতে রাখা জালের মাছ চুরির অভিযোগ তুলে দুলাল মৃধার ছেলে রবিউলকে (১০) পিটিয়ে হত্যা করে লাশ পাশের খালে ফেলে রাখা হয়।

পরদিন বিকালে লকরার খালে রবিউলের লাশ পাওয়া যায়।

দণ্ডিত মিরাজ হোসেন

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি এপিপি আখতারুজ্জামান বাহাদুর সাংবাদিকদের জানান, ওই ঘটনায় ৫ অগাস্ট রবিউলের বাবা দুলাল বাদী হয়ে তালতলী থানায় মিরাজকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

মামলার পরপরই মিরাজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২৩ অগাস্ট মিরাজকে একমাত্র আসামি করে পুলিশ অভিযোগপত্র দেয়।

এই মামলায় রবিউলের বাবা-মা, পুলিশ, চিকিৎসক এবং সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানসহ মোট ২৬ জন সাক্ষ্য দেন বলে এপিপি জানান।

রবিউল স্থানীয় ফরাজী বাড়ি দাখিল মাদ্রাসায় চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। রবিউলের বড় বোন দশম শ্রেণির ছাত্রী। ছোট বোন সবে হাঁটতে শিখেছে।

তালতলীর ফকিরহাট বাজারে রবিউলের বাবা দুলাল মৃধার খুচরা যন্ত্রাংশের একটি দোকান আছে।

নেত্রকোণার কেন্দুয়ার শিশু শুকুর আলীকে অপহরণের পর হত্যার দুই বছর আগের মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে মঙ্গলবার রায় দেন জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ কে এম আবুল কাশেম।

দণ্ডিতরা হলেন- কেন্দুয়া উপজেলার চিতুয়া নওপাড়ার শামীম খান (২০) ও সোহাগ (২০) এবং তারাকান্দির রাজীবপুর গ্রামের শরীফুজ্জামান হুমায়ুন (২০)।

রায় ঘোষণার সময় শামীম ও সোহাগ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। হুমায়ুন পলাতক।

কেন্দুয়া উপজেলার চিতুয়া নওপাড়া গ্রামের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র শুকুর আলী (১২) ২০১৪ সালের ৯ জুন বিকালে বাড়ির পাশে বাজারে ওষুধ আনতে যাওয়ার পর অপহৃত হয়।

পরে তার পরিবারের মোবাইল ফোনে কল করে ছয় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। পুলিশ মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে দুজনকে গ্রেপ্তার করে।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি পিপি জি এম খান পাঠান বিমল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আসামিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ২ জুলাই বাড়ির পাশের সুতি নদীর তলদেশ থেকে শুকুরের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ৫ অগাস্ট তিন আসামির নামে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।