তিনটি আইন হালনাগাদের খসড়ায় মন্ত্রিসভার সায়

বিভিন্ন সময়ে প্রণীত তিনটি আইনকে বর্তমান সময়ের আলোকে হালনাগাদ করতে সেগুলোর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2016, 10:55 AM
Updated : 30 May 2016, 10:55 AM

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে বাংলাদেশ পেটেন্ট আইন, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন আইন এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন আইনের খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের নতুন আইনের খসড়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান।

পেটেন্ট আইন

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৯১১ সালের পেটেন্টস অ্যান্ড ডিজাইন অ্যাক্টকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে হালনাগাদ করা হচ্ছে।

“এখন ট্রিপস চুক্তির (ডব্লিউটিওর বাণিজ্য-বিষয়ক মেধাস্বত্ব আইন) বিষয় রয়েছে, ফলে আইনটি আপডেট করা দরকার ছিল। ট্রিপসের সঙ্গে ম্যাচ করার জন্য আইনটিকে সময় উপযোগী করা হবে।”

নতুন আইনে ৭টি অধ্যায় ও ২৯টি ধারা রয়েছে জানিয়ে শফিউল বলেন, ট্রিপস চুক্তির আলোকে আগের আইনের পেটেন্টগুলোকে আরও সুনির্দিষ্ট করে নতুন বিষয় সংযোজন করা হয়েছে। আইনটিকে ট্রিপসের সঙ্গে সংগতিপূর্ণভাবে তৈরি করা হয়েছে।           

বিএসটিআই আইন

শফিউল আলম জানান, মার্শাল ল’ আমলে প্রণীত (১৯৮৫ সাল) অর্ডিনেন্সের আলোকে বিএসটিআই চলছিল, তাই এটাকে পরিবর্তন করতে হচ্ছে।

নতুন করে আইন প্রণয়নের যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, “ফিল্ডে অনেক পরিবর্তন এসেছে, নতুন ধারণাও এসেছে। এসব জিনিস নতুন আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

“আগের বিএসটিআই অর্ডিনেন্সের বিষয়গুলো নতুন আইনে রয়েছে, এর সঙ্গে নতুন ধারণাগুলো যুক্ত করা হয়েছে।”

নতুন কী কী বিষয় যুক্ত হয়েছে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “বিএসটিআই আইনে মানের বিষয়ে বলা আছে বিদেশি স্টান্ডার্ডে হতে হবে, এখন এটাকে আন্তর্জাতিক স্টান্ডার্ড করার প্রস্তাব করা হয়েছে।”

নতুন বিএসটিআই আইনে বার্ষিক প্রতিবেদন দেওয়া, বাজেট, নিরীক্ষা-হিসাব, সংস্থার গঠন ও পরিচালনা, স্টান্ডার্ড মান কীভাবে ব্যবহার করা হবে, লাইসেন্স কীভাবে দেওয়া হবে- সেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলেও জানান শফিউল আলম।

পরমাণু শক্তি কমিশন আইন

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন আইন ২০১৬ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৯৭৩ সালের রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ অনুযায়ী বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন চলছিল। ওই অধ্যাদেশকে হালনাগাদ করে নতুন আইন করা হচ্ছে।

“নতুন আইন অনুযায়ী একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সার্বক্ষণিক সদস্য নিয়ে পরমাণু শক্তি কমিশন গঠন করা হবে। চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মেয়াদ হবে তিন বছর।”

এই কমিশনকে প্রতি বছর একবার সরকারের কাছে বার্ষিক প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার ট্রাস্ট আইন

বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ট্রাস্ট আইন-২০১৬ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

শফিউল বলেন, “দি বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফান্ড ছিল সেটাকে নতুন আইন করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কারের বেসিক বিষয়গুলোকেই আইনে রূপান্তর করা হচ্ছে।”

বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে স্বাক্ষরিত ভিসা অব্যাহতি চুক্তি অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশের কূটনৈতিক, বিশেষ ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীরা কুয়েতে ভিসা অব্যাহতি পাবেন। কুয়েতের এই তিন শ্রেণির নাগরিকরাও বাংলাদেশে অনুরূপ সুবিধা পাচ্ছেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, কুয়েতে বাংলাদেশ সেনবাহিনীর কনটিনজেন্ট সেখানে অব্যাহত রাখতে একটি চুক্তির খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

এছাড়া সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জন্য আরেকটি চুক্তির খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেয়েছে।

এই চুক্তি হলে আর্কাইভ, গ্রন্থাগার, আর্টস, শিশু সংস্কৃতি, চারুকলা নিয়ে উভয় দেশ পারস্পারিক জ্ঞান বিনিময় করতে পারবে বলে জানান শফিউল আলম।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, কক্সবাজারের মহেশখালীতে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে মালয়েশিয়ার দুটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির জন্য একটি খসড়া প্রস্তাবও অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।