তিনি বলেছেন, “আমি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর সব শান্তিরক্ষীকে বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে পেশাদারিত্ব, সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা বজায় রাখার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
“আপনারা বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে একটি শান্তিকামী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবেন, বিশ্বে বাংলাদেশের পতাকাকে সমুন্নত রাখবেন। আপনারা বাংলাদেশের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করবেন এবং কর্মের মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর করবেন- এই আমাদের প্রত্যাশা।”
রোববার ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০১৬’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষায় কর্মরতদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানিয়ে ২০০৩ সাল থেকে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস পালন করা হচ্ছে।
বর্তমানে শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত বাংলাদেশির সংখ্যা সাত হাজার ২০০ জন। তাদের মধ্যে ছয় হাজার ৮৯ জন সশস্ত্র বাহিনীর ও এক হাজার ১১১ জন পুলিশের সদস্য।
শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ১৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেন, “অতি সম্প্রতি আমরা জাতিসংঘ সদরদপ্তর এবং শান্তিরক্ষা মিশনসমূহে উচ্চপর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে আমাদের সামরিক অফিসারদেরকে নিযুক্তি প্রদানের জন্য আরও কিছু প্রস্তাবনা পেয়েছি। এখানে আমি উল্লেখ করতে চাই যে, এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল ও বলিষ্ঠ কূটনৈতিক এবং ব্যক্তিগত প্রচেষ্টারই ফল।”
শান্তিরক্ষা মিশনে নারীদের সংখ্যা বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনী তাদের মহিলা শান্তিরক্ষীদের অংশগ্রহণ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করে চলেছে। জাতিসংঘ বর্তমানে মহিলা প্রতিনিধিত্বের উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করছে। বাংলাদেশও এ বিষয়ে পিছিয়ে নেই।
“জাতিসংঘ সদরদপ্তরে উচ্চপর্যায়ের নিযুক্তিতে আমাদের মহিলা শান্তিরক্ষীদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে আমাদের বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিতে হবে।”
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ওই অনুষ্ঠানে ছয় শহীদ শান্তিরক্ষীর পরিবার এবং ৩০ জন আহত শান্তিরক্ষীকে সম্মাননা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক ও বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী রবার্ট ডি. ওয়াটকিনস বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কঙ্গো, মালি ও লেবাননে কর্মরত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সঙ্গে কথাও বলেন রাষ্ট্রপতি।
এসময় তিনি তাদের খোঁজ-খবর নেন। এর আগে তিনি শহীদ ও যুদ্ধাহত শান্তিরক্ষী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ছবি তোলেন।