সোনা উদ্ধার: আদালত অবমাননা থেকে রেহাই ২ পুলিশ কর্মকর্তার

হাই কোর্টে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিয়ে ও দুঃখ প্রকাশ করে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেলেন রাজধানীর বিমানবন্দর থানার ওসিসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 May 2016, 12:06 PM
Updated : 29 May 2016, 12:06 PM

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ দুই পুলিশ কর্মকর্তার দাখিল করা লিখিত ব্যাখা ও দুঃখ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার এ আদেশ দেয়।

সাত কেজি সোনা উদ্ধারের এক মামলায় দুই বছর পেরিয়ে গেলেও তদন্তের বিষয়ে আদালতের নির্দেশ অনুসারে ব্যাখ্যা ও প্রতিবেদন না দেওয়ায় ১০ মে হাই কোর্ট তাদের প্রতি আদালত অবমাননার রুল দেয়। সেইসঙ্গে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে ২৯ মে তাদের আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিল।

এদিন বিমানবন্দর থানার ওসি ফরমান আলী এবং ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করে।

এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “লিখিত ব্যাখ্যায় দুই কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তার আসামি আল আমিনের ১৬৪ ধারায় নেওয়া জবানবন্দিতে কয়েকজনের নাম এসেছে। তাদের নাম পাওয়া গেলেও ঠিকানা সংগ্রহ করতে দেরি হওয়ায় চার্জশিট দাখিলে বিলম্ব হচ্ছে। এ জন্য মৌখিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন ওই দুই কর্মকর্তা।”

হাই কোর্ট এই দুই কর্মকর্তাকে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে সোনা উদ্ধারের ওই মামলায় দ্রুত অভিযোগপত্র দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে।

পাশাপাশি আদালত আসামি আল আমিনের জামিন আবেদন (রুল ডিসচার্জ) খারিজ করে দিয়েছে বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২২ আগস্ট ৭ কেজি সোনাসহ আল আমিনকে বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় সেদিনই আল আমিনসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা করে কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা।

এরপর নিম্ন আদালতে জামিন নাকচ হওয়ার পর আসামি আল আমিন হাই কোর্টে চলতি বছরের এপ্রিলে জামিন চেয়ে আবেদন করে। এ আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে ১৩ এপ্রিল হাই কোর্ট তার জামিন প্রশ্নে রুল দেয়। কেন তাকে (আল আমিন) জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।

একইসঙ্গে ১৩ এপ্রিল হাই কোর্ট দুই বছরেও মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হওয়ার বিষয়ে ১০ মের মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তাকে ব্যাখ্যা জানিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয়। বিমানবন্দর থানার ওসিকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়।

এ নির্দেশনা অনুসারে ধার্য তারিখে তদন্তের বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হওয়ায় হাই কোর্ট ১০ মে ওই দুই কর্মকর্তার প্রতি আদালত অবমাননার রুল এবং তাদের তলবে আদেশ দেয়। এ নির্দেশনা অনুসারে রোববার ওই দুই কর্মকর্তা আদালতে হাজির হন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান কবীর। আসামি আল আমিনের পক্ষে এর আগে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী খায়রুল আলম।

খায়রুল আলম ১০ মে জানিয়েছিলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইনে ওই মামলাটি করা হয়। ওই আইনের মামলায় ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নিয়ম থাকলেও দুই বছরেও তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়নি। এসব যুক্তিতে জামিনের আবেদনটি করা হয়।