যুক্তরাজ্য ইইউতে থাকাই ভালো: ক্যামেরনকে হাসিনা

জনগণের বৃহত্তর অর্থনৈতিক স্বার্থের কথা বিবেচনা করে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা উচিত বলে মত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সুমন মাহবুব নাগোয়া থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2016, 08:22 AM
Updated : 27 May 2016, 01:26 PM

জাপানে জি-সেভেন আউটরিচ মিটিংয়ের ফাঁকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নিয়ে এ অভিমত দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুরে জি-সেভেন শীর্ষ সম্মেলনের ভেনু কাশিকো দ্বীপের শিমা কানকো হোটেলের শুবাকি কক্ষে দুই নেতার এই বৈঠক হয়।

পরে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা বা না থাকার বিষয়ে ক্যামেরন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অভিমত জানতে চান। 

এই বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্যে সৃষ্ট বিতর্কের কথাও উল্লেখ করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখন বিশ্বায়নের এই যুগ, যোগাযোগের যুগ। 

“এই যুগে একটি বড় ইউনিয়ন থেকে সরে আসাটা চিন্তা করার বিষয়।”

যুক্তরাজ্যে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এটি ব্রিটিশ জনগণের সিন্ধান্ত। তবে তিনি মনে করেন, যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে থাকা উচিত।

প্রবাসী বাংলাদেশি এবং জনগণের বৃহত্তর অর্থনৈতিক স্বার্থের কথা চিন্তা করে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা উচিত। কিন্তু ব্রিটিশ জনগণকেই সব শেষ সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার বিষয়ে সে দেশের তিন এমপি টিউলিপ সিদ্দিক, রূপা হক এবং রুশনারা আলীর জনমত সৃষ্টি করার বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। 

এছাড়া বৈঠকে বিনিয়োগ বাড়ানোসহ দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।  

ব্রিটেনের অর্থনীতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের বিষয় নিয়েও কথা বলেন দুই দেশের দুই সরকার প্রধান।

বৈঠকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সাতে উন্নীত হওয়ার পেছনের ইতিহাস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জানতে চেয়ে তার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসাও করেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী।

ক্যামরন বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের উন্নয়নে অংশীদার হতে চায়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, মূখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ ও পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।

এর আগে ২০১৪ সালের জুলাই মাসে শেখ হাসিনা গার্ল সামিটে যোগ দিতে লন্ডন গেলে সেখানে ডেভিড ক্যামেরনের বাসভবন ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে তাদের মধ্যে বৈঠক হয়।

অর্থনীতি, সামাজিক ও নারী উন্নয়নে বাংলাদেশের অগ্রগতির ‘ভূয়সী প্রশংসা’ করে সেই বৈঠকে শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।

এই সাফল্য কীভাবে এল- তা দেখতে বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন ক্যামেরন।

গতবছর যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে ক্যামেরনের দল কনজারভেটিভ পার্টি পুনর্নির্বাচিত হলে তাকে অভিনন্দন  জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জি সেভেন আউটরিচ মিটিংয়ে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার জাপানের নাগোয়ায় পৌঁছান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার তিনি ইসে-শিমায় জি-সেভেন আউটরিচ মিটিংয়ে যোগ দেন। ক্যামেরনসহ জি-সেভেনের সাত দেশের শীর্ষ নেতারাও ওই বৈঠকে অংশ নেন।