শেষ মুহূর্তের প্রচারে ৭২৯ ইউপির প্রার্থীরা

পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা শেষ হচ্ছে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে। ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছেন ৩ হাজারেরও বেশি চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য প্রার্থীরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2016, 06:20 PM
Updated : 25 May 2016, 06:20 PM

দলভিত্তিক তৃণমূলের এ নির্বাচনে আগের চার ধাপের মতোই এবারও সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা ও নানা অভিযোগের মধ্যে শনিবার ৭২৯ ইউপিতে ভোট হতে যাচ্ছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, জেলায় জেলায় পৌঁছে গেছে নির্বাচনী সামগ্রী। নিরাপত্তা প্রহরায় শুক্রবার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা কেন্দ্রে কেন্দ্রে নিয়ে যাবে এসব সরঞ্জাম। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নির্বাচনী এলাকায় টহলে থাকবে।

নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আর দুটি ধাপের ভোট বাকি রয়েছে। শেষটা ভালো করতে যা যা করা দরকার করছি।

“যেসব অভিযোগ পাচ্ছি তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছি। গোলযোগ-সহিংসতা যারা করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।”

ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে গত সাড়ে তিন মাসে নির্বাচনী সহিংসতায় অন্তত ৭৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সংঘর্ষ-হামলার ঘটনা ঘটছে প্রায় প্রতিদিনই।

আগামী ১০ দিনের মধ্যে শেষ দুই ধাপের ভোট রয়েছে। ২৮ মে পঞ্চম ধাপে ও ৪ জুন ষষ্ঠ ধাপে প্রায় দেড় হাজার ইউপিতে ভোট হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মিজানুর রহমান শেলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সহিংসতা ও অনিয়মের সার্বিক চিত্রের নেতিবাচক প্রভাব আগামীতেও পড়বে। তা না হলে নির্বাচনেও আগ্রহ হারাবে মানুষ।

“ইসিকেই প্রমাণ করতে হবে-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভোট সম্ভব। মানুষের আস্থা অর্জনে ইসিকে এখনই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।”

বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, আর সুষ্ঠু ভোটের কোনো সম্ভাবনা আর নেই, এখন চলছে ‘ভোট ডাকাতি’।

বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তায় ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা কেন্দ্র দখল করে জয় নিশ্চিত করছে।

বারবার ইসিতে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ বলছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ইসি সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। শেষ দুই ধাপে আরো কঠোর থাকবে তারা। সহিংসতা রোধে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে সজাগ থাকতে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ-সচিব ফরহাদ আহম্মদ খান জানান, বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে প্রচার শেষের পর অননুমোদিত যান চলাচলেও থাকবে নিষেধজ্ঞা।

তিনি জানান, গত মার্চেই উপকূলীয় এলাকার ইউপির নির্বাচন শেষ হয়েছে। এ জন্যে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর কারণে কোনো ইউপির ভোট এখনও বন্ধ করতে হয়নি।

পঞ্চম ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৭২৯ ইউপিতে প্রতিদ্বন্দ্বী আছেন ৩ হাজার ২৫৪ জন। এর মধ্যে ১৫টি দলের প্রার্থী ১ হাজার ৭২৭ জন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ১ হাজার ৫২৭ জন।

এ ধাপে নৌকা প্রতীকের ৪২ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছে ৭২৬ ইউপিতে, ৬২৯ ইউপিতে রয়েছে বিএনপির প্রার্থী।

এছাড়া জাতীয় পার্টি ১৭৭টি, জাসদ ২১টি, বিকল্পধারা ২টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ১৩টি, ইসলামী আন্দোলন ১২২টি, জেপি ২টি, ইসলামী ফ্রন্ট ১১টি, এলডিপি ৬টি, সিপিবি ৫টি, জেএসডি ১টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ৬টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ৭টি এবং অপর একটি দল ১ ইউপিতে প্রার্থী দিয়েছে।

আগামী ৪ জুন ষষ্ঠ ও শেষ ধাপে ৭২৭ ইউপির ভোট হওয়ার কথা।

চার হাজারের বেশি ইউপির মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার ইউপির ভোট শেষ হয়েছে চার ধাপে। এই চার ধাপে ১৮৩৬ ইউপিতে আওয়ামী লীগের ও ২৪৩ ইউপিতে বিএনপির প্রার্থী জয় পেয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনের হিসাবে প্রথম ধাপে ৭৪ শতাংশ, দ্বিতীয় ধাপে ৭৮ শতাংশ, তৃতীয় ধাপে ৭৬ শতাংশ এবং চতুর্থ ধাপে ৭৭ শতাংশ ভোট পড়েছে।