কলেজ ভর্তির আবেদন বৃহস্পতিবার থেকে

অনলাইনের পাশাপাশি এসএমএসের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কলেজে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। চলবে ৯ জুন রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2016, 11:04 AM
Updated : 25 May 2016, 11:04 AM

এবার ২০টি কলেজকে পছন্দক্রমে রাখা যাবে। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত টেলিটকের প্রি-পেইড সিম ব্যবহার করে আবেদন ফি জমা দিতে হবে।

এরই মধ্যে অনলাইন ও এসএমএসে আবেদন গ্রহণ ও মেধাতালিকা তৈরির সব প্রস্তুতি শেষ করেছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি।

কমিটির কলেজ পরিদর্শক মো. আশফাকুস সালেহীন বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা শতভাগ প্রস্তুতি নিয়েছি, আশা করছি সব ঠিকভাবে হবে।”

একাদশে ভর্তিতে কারিগরি সহযোগিতার দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদও আশা করছেন এবার ঝামেলা ছাড়াই পুরো প্রক্রিয়া শেষ হবে।

গত বছর প্রথমবারের মত সব কলেজকে বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইন ও এসএমএসে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হয়।

তবে কারিগটি জটিলতার কারণে বিড়ম্বনার শিকার হন অনেক শিক্ষার্থী; বিজ্ঞানের কলেজে বাণিজ্যের শিক্ষার্থী সুযোগ পাওয়ার ঘটনাও ঘটে।

জটিলতা কাটিয়ে নির্ধারিত সময়ের তিন দিন পর সেবছর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছুদের মেধা তালিকা প্রকাশ করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটি।

এবার একবারেই কলেজে ভর্তির মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে কমিটি। আর মেধাতালিকা থেকে ভর্তি শেষে অপেক্ষমান থাকা শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাবেন।

একাদশ শ্রেণির ভর্তির নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, অনলাইন বা এসএমএসে কোনো অসত্য তথ্য দিয়ে আবেদন করলে তা বাতিল ছাড়াও চূড়ান্ত ভর্তি বাতিল করা হবে।

“অনলাইন বা এসএমএসে আবেদনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত একই মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে।”

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, একজন আবেদনকারী যতগুলো কলেজে আবেদন করবে সব কলেজেই তার মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে।

“এসএমএসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভর্তির ফল জানিয়ে দেওয়ার সঙ্গে একটি গোপন পিন নম্বর দেওয়া হবে। কলেজে কর্তৃপক্ষ এই পিন এন্ট্রি করে শিক্ষার্থীর ভর্তি নিশ্চিত করবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ ভর্তি নিশ্চিত করলে শিক্ষার্থী তার মোবাইলে একটি এসএমএস পাবেন।”

ভর্তির প্রস্তুতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আসফাকুস সালেহীন বলেন, যে কলেজের জন্য যতগুলো আবেদন পড়বে ওই কলেজ কর্তৃপক্ষকে সেই তালিকা দিয়ে দেওয়া হবে। এবার চূড়ান্ত তালিকা একবারই প্রকাশ করা হবে।

“সব কলেজের আসন সংখ্যার সমান সংখ্যক শিক্ষার্থীকে ওই কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত তালিকায় রাখা হবে, বাকিরা থাকবেন অপেক্ষমান।”

উদাহরণ হিসেবে আশফাকুস বলেন, কোনো কলেজে ৬০০ আসনের বিপরীতে ৫ হাজার আবদেন পড়লে মেধানুযায়ী ৬০০ জনকে নির্বাচিত তালিকায় রাখা হবে, বাকিরা থাকবেন অপেক্ষমান।

অনলাইনে সর্বোচ্চ ১০টি এবং এসএমএসের মাধ্যমে সর্বোর্চ ১০টি মোট ২০ কলেজে আবেদন করা যাবে বলেও জানান আশফাকুস।

তিনি জানান, ভর্তির জন্য মনোনীত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে ১৬ জুন। আসনের বিপরীতে নির্বাচিত তালিকা থেকে ১৮ থেকে ২২ জুন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। অপেক্ষমান তালিকা থেকে ভর্তি ২৩ থেকে ৩০ জুন।

এবার ১০ জুলাই একাদশে ক্লাস শুরুর পর ১০ থেকে ২০ জুলাই বিলম্ব ফি দিয়ে ভর্তি হতে পারবে শিক্ষার্থীরা।

আশফাকুস জানান, ভর্তির তালিকা শিক্ষার্থীদের এসএমএসে জানিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া ওয়েবসাইট থেকেও শিক্ষার্থীরা তালিকা জানতে পারবেন।

অভিভাবকদের সঙ্গে পরামর্শ করে শিক্ষার্থীদের আগেই কলেজ পছন্দ করে রাখার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এতে ভুল হওয়ার সম্ভবনা থাকবে না।

বুয়েটের অধ্যাপক কায়কোবাদ বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আশা করছি সব কিছু ঠিক মত হবে, আপনারা সহায্য করবেন।”

আবেদন পদ্ধতি

অনলাইনে আবেদনের আগে টেলিটকের প্রি-পেইড মোবাইল ব্যবহার করে ১৫০ টাকা আবেদন ফি জমা দিতে হবে।

এজন্য CAD লিখে স্পেস দিয়ে WEB লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নাম লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে পাসের সাল লিখে স্পেস দিয়ে রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।

ফিরতি এসএমএসে আবেদনকারীর নাম, শিক্ষা বোর্ড, পাসের সাল ও রোল নম্বর জানিয়ে ১৫০ টাকা আবেদন ফি কেটে নেওয়া হবে জানিয়ে একটি পিন নম্বর দেওয়া হবে।

ফি দিতে সম্মত থাকলে মেসেজ অপশনে গিয়ে CAD লিখে স্পেস দিয়ে YES লিখে স্পেস দিয়ে পিন নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে যোগাযোগের জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত একটি মোবাইল নম্বর লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফি জমা হলে প্রার্থীর মোবাইলে নিশ্চিতকরণ ট্রানজেকশন আইডিসহ এসএমএস আসবে।

মোবাইলে টাকা জমা দেওয়ার পর www.xiclassadmission.gov.bd গিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করে আবেদন করতে হবে।

টেলিটকের প্রি-পেইড মোবাইল ব্যবহার করে এসএমএসের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে আবেদন করা যাবে।

এসএমএসে আবেদন করতে ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে CAD লিখে স্পেস দিয়ে ভর্তিচ্ছু কলেজ বা মাদ্রাসার EIIN নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ভর্তিচ্ছু গ্রুপের কি-ওয়ার্ডের দুই অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে পাসের সাল লিখে স্পেস দিয়ে রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ভর্তিচ্ছু শিফটের নামের প্রথম অক্ষর (শিফট না থাকলে N দিতে হবে) লিখে স্পেস দিয়ে ভার্সনের প্রথম অক্ষর লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।

আগের বছরের মতো মাধ্যমিকের ফলের ভিত্তিতে এবারও একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।

মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ৮৮ দশমিক ২৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৯ হাজার ৭৬১ জন।