আদালতের রায় দেখে ব্যবস্থা নেব: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা ও ১৬৭ ধারা প্রয়োগের বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ে নীতিমালা প্রকাশের পর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2016, 09:08 AM
Updated : 24 May 2016, 12:32 PM

বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার ও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ওই দুটি ধারা প্রয়োগের বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল মঙ্গলবার খারিজ করে দিয়ে একটি নীতিমালা দেওয়ার কথা জানায় সুপ্রিম কোর্ট।

এর পর দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছেন, সেখানে আমাদের আর বলার কিছু নেই। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।

“সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা আসলে আমরা দেখতে পাব- কোথায় আমাদের ঘাটতি হচ্ছে। সেটা আমরা দেখে ব্যবস্থা নেব।” 

শফিক রেহমানকে ‘সাংবাদিক পরিচয়ে’ গ্রেপ্তার করার বিষয়ে জানতে চাইলে তা অস্বীকার করে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে, বাহিনীর প্রধান তার পরিচয় দিয়েই তাকে (শফিক রেহমানকে) গ্রেপ্তার করেন।

“সাদা পোশাকে কাউকে গ্রেপ্তারের সময় আপনারা দেখেছেন এসবি লেখা থাকে, ডিবি লেখা থাকে, র‌্যাব লেখা থাকে ও পুলিশ লেখা ‘কটি’ থাকে। যখন তারা কাজে যায় ‘কটি’ ঝুলিয়ে যায়।

তবে ‘৫৪ ধারার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে’ জানিয়ে মন্ত্রী দাবি করেন, তিনি ভালভাবে দেখাশোনা করছেন বলে সবকিছু ভালভাবেই চলছে।”

১৯৯৮ সালে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে বেসরকারি ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র শামীম রেজা রুবেলকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করার পর ওই বছরের ২৩ জুলাই মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশ-কার্যালয়ে তার মৃত্যু হয়।

ওই ঘটনার পর বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানের নেতৃত্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। তদন্ত শেষে কমিটি ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের পক্ষে কয়েকটি সুপারিশ করে।

সেসব সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন করে। তার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল হাই কোর্ট এ বিষয়ে কয়েকদফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেয়।

রায়ে ছয় মাসের মধ্যে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার ও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে প্রচলিত বিধি সংশোধন করার পাশাপাশি ওই ধারা সংশোধনের আগে কয়েক দফা নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয় সরকারকে।

রাষ্ট্রপক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করলে ২০০৪ সালে তা মঞ্জুর হয়। তবে হাই কোর্টের নির্দেশনা সে সময় স্থগিত করা হয়নি।

এর ধারাবাহিকতায় গত ২২ মার্চ আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়। দুই কার্যদিবস শুনানি করে গত ১৭ মে আদালত রায়ের জন্য মঙ্গলবার দিন ঠিক করে দেয়।