ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাত ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর।
থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনীম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নন হজকিন্স লিম্ফোমা নামের এক ধরনের ক্যান্সারসহ বেশ কিছু শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন অধ্যাপক খালেদা একরাম। গত দশ দিন ধরে তিনি ব্যাংকক জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।”
গত ১৩ মে রাতে খালেদা একরামকে চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ব্যাংককে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৭ মে থেকে নেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে।
শেষ সময়ে ব্যক্তিগতভাবে এই শিক্ষকের দেখভাল করেন বুয়েটের সাবেক ছাত্রী সাঈদা মুনা তাসনীম।
তিনি বলেন, “শিক্ষক হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত উঁচু মানের এবং দারুণ করিৎকর্মা।”
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুয়েট উপাচার্যের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এই শিক্ষকের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বিশেষ তহবিল থেকে ২০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন।
স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক খালেদা একরামকে ২০১৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বুয়েটের উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
১৯৫০ সালের ৬ অগাস্ট ঢাকায় জন্ম নেওয়া খালেদা ইকরামের বাড়ি বগুড়ায়। ১৯৭৪ সালে বুয়েট থেকে স্থাপত্যে ডিগ্রি নেওয়ার পর ১৯৮০ সালে ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াই থেকে নগর পরিকল্পনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন।
এরপর ১৯৯২ সালে সুইডেনে স্থাপত্য ও উন্নয়ন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেন খালেদা ইকরাম। বুয়েটে তিনি শিক্ষকতায় যুক্ত ছিলেন ১৯৭৪ সাল থেকেই।
অধ্যাপক খালেদা একরাম বাংলাদেশের কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পাওয়া দ্বিতীয় নারী উপাচার্য। আর বুয়েটে তিনিই প্রথম।
থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছে, বুধবার বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে খালেদা একরামের মরদেহ দেশে পাঠানো হবে।
দুপুর নাগাদ মরদেহ বাংলাদেশে পৌঁছাবে জানিয়ে বুয়েটের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য জেবুন নাসরীন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রথমে কফিন বুয়েট ক্যাম্পাসে তার বাসভবনে নেওয়া হবে। এরপর শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে স্থাপত্য বিভাগে।
বিকালে বুয়েট কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে জানাজা শেষে পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বনানী কবরস্থানে খালেদা একরামকে দাফন করা হবে বলে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য জানান।