নারায়ণগঞ্জে লাঞ্ছিত শিক্ষক ঢাকা মেডিকেলে

নারায়ণগঞ্জে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে মারধর ও লাঞ্ছনার শিকার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে উন্নত ‍চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকও নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 May 2016, 09:37 AM
Updated : 20 May 2016, 01:20 PM

শুক্রবার দুপুরের আগে নারায়ণগঞ্জের খানপুর হাসপাতাল থেকে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয় বলে হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কের সহকারী সিদ্দিকুর রহমান জানান।

মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক মো. রফিক জানান, বেলা ১টার দিকে শ্যামল কান্তি ভক্তকে মেডিসিন বিভাগের একটি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।

গত শুক্রবার ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে স্থানীয় একদল লোক মারধর করে। পরে স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমান তাকে কান ধরিয়ে উঠ-বস করান। ওইদিনই অসুস্থ অবস্থায় তাকে খানপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “হাসপাতালে ২০ নম্বর ওয়ার্ডে শ্যামল কান্তি ভক্তের চিকিৎসা চলছিল। তার স্ত্রী সবিতা রাণীর আবেদনে উন্নত চিকিৎসার জন্য বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালের একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।”

নারায়গঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান বলেন, তারা পুলিশি পাহারায় শ্যামল কান্তিকে ঢাকা মেডিকেলে পৌঁছে দিয়েছেন।

শ্যামল কান্তিকে কান ধরে উঠ-বস করানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়। দোষীদের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যেই স্কুল কর্তৃপক্ষ উল্টো প্রধান শিক্ষক শ্যামলকে চাকরিচ্যুত করে।

এরপর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রাথমিক তদন্তে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় এবং তাকে বরখাস্তের প্রক্রিয়া সঠিক না হওয়ায় ওই স্কুল কমিটিই বাতিল ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বরখাস্তের আদেশও অবৈধ ঘোষণা করেন।

একই দিনে সংবাদ সম্মেলন করে সাংসদ সেলিম ওসমান দাবি করেন, শিক্ষক শ্যামল কান্তি নিজেই সেদিন কান ধরেছিলেন।

এ কথা অস্বীকার করে শ্যামল কান্তি হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

নিরাপত্তাহীনতার কারণেই তাকে নারায়াণগঞ্জ থেকে সরিয়ে নেওয়া হল কিনা জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, “তেমন কিছু নয়। চিকিৎসকদের পরামর্শেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।”