বরিশালে ফল বিভ্রাটের দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: শিক্ষামন্ত্রী

বরিশালে ‘হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা’ বিষয়ে ফল বিপর্যয়ের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 May 2016, 11:37 AM
Updated : 16 May 2016, 11:37 AM

সোমবার মন্ত্রণালয়ে নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান।

বরিশালে পরীক্ষকের ভুলের কারণে ফল প্রকাশের আনন্দের মুহূর্ত বিষাদে পরিণত হওয়া এবং এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “এটা খুবই দুঃখজনক। সেই জন্যই আমি ফলের সময় বলেছি, যারা কোন কারণে পাস করতে পারেননি, তারা যেন হতাশ না হন, মন খারাপ না করেন।

“পরীক্ষা যেহেতু, সকলেই লোক পাস করতে পারেন না। কিছু ফেল করে, সেই হারও কমে আসছে। এখন অনেক বেশি পাস করছে। সেইভাবে একটা অগ্রগতি হচ্ছে, সেটাই আমরা আশা করি, আমরা চাই সবাই পাস করুক। সেই জায়গায় কেউ ফেল করবে কেন? ফেল করার জন্য কেউতো আসে নাই।

“এইগুলোর মধ্যেই নানা ঘটনা ঘটে। এইগুলোকে আমাদের সেইভাবেই সমাধান করতে হবে, যাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।”

বরিশাল বোর্ডে অকৃতকার্য হওয়া এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার পর পুনঃমূল্যায়নে জানা যায় পরীক্ষকের ভুলের কারণে ওই শিক্ষার্থী ফেল করেছিল।

এ বিষয়টি সামনে এনে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “দায়টা কার সেটা আমি এখন বলে দিতে পারি না। দায়টা কার- সেটা আমরা বের করবো। বোর্ডকে বলা হয়েছে, ইনকোয়ারি করতেছে, তদন্ত করে রিপোর্ট দিলে তার ভিত্তিতে হবে। আমিতো এখানে বসে একটা রায় দিতে পারি না। আমরা আইনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেটা করার জন্য আমরা ইতিমধ্যেই শিক্ষা বোর্ডকে বলেছি।”

বরিশালে এবারের এসএসসির প্রকাশিত ফলে হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ে বহু শিক্ষার্থী ফেল করলেও পুনঃমূল্যায়নে অন্তত ২ হাজার জনের ফল সংশোধন হয়।

সংশোধনের পর বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুণ কুমার গাইন দুই দিন আগে জানান, এ বোর্ডে এ বছর এসএসসিতে হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষার্থী ছিল ১০ হাজার ৪৯২ জন। তাদের মধ্যে ৫৮০৯ জনই ফল পুনর্বিবেচনা ও যাচাইয়ের আবেদন করলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়।”

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সংশোধনে ১৯৯৪ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। তাদের মধ্যে অকৃতকার্য থেকে কৃতকার্য হয়েছে ১১৪১ জন।”

প্রথম প্রকাশিত ফল ভুল হওয়া প্রসঙ্গে বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক বলেন, নৈর্ব্যক্তিক উত্তরপত্র মূল্যায়নের সময় দুই প্রধান পরীক্ষক ‘খ’ ও ‘গ’ সেট গুলিয়ে ফেলেন। তারা ‘খ’ সেট প্রশ্নের মূল্যায়ন করেন ‘গ’ সেটের উত্তরপত্রের মাধ্যমে আর ‘গ’ সেটের মূল্যায়ন করেন ‘খ’ সেটের উত্তরপত্রের মাধ্যমে।”

ওই দুই পরীক্ষক হলেন বরিশাল নগরীর ব্রজমোহন স্কুলের শিক্ষক জুরানচন্দ্র চক্রবর্তী ও বরগুনার বিবিচিনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিরেন চক্রবর্তী।

তদন্তে তাদের কাজে গাফিলতির প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান বোর্ড চেয়ারম্যান।

অপরদিকে, ফেল করার খবর শুনে আত্মহত্যা করা শিক্ষার্থী সর্বজিৎ ঘোষের নাম পাসের তালিকায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

সর্বজিতের বাবা শেখর ঘোষ বলেন, সংশোধনের পর সর্বজিৎ জিপিএ-৪.৬৭ পেয়েছে। সে বরিশাল উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল।