‘দ্য ববস’ প্রতিযোগিতার সিটিজেন জার্নালিজম বা নাগরিক সাংবাদিকতা বিভাগে তথ্যচিত্রটি জুরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে বলে ডয়চে ভেলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
‘নাস্তিকের ধর্মকথা’ ছদ্মনামের এক ব্লগার ও তার স্ত্রীর তৈরি করা ‘রেজার’স এজ’-এ বাংলাদেশে ব্লগার-অ্যাক্টিভিস্টদের ওপর হামলায় ‘রাজনীতিবিদরা কীভাবে উৎসাহ জোগাচ্ছেন’ তা তুলে ধরা হয়েছে।
সোমবার জার্মানির বার্লিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ববস-এর জুরিমণ্ডলী প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন৷
প্রতিযোগিতায় এবার ‘প্রগতির জন্য প্রযুক্তি’ বিভাগে ইরানের অ্যাপ ‘গেরশাদ’, ‘সামাজিক পরিবর্তন’ বিভাগে ভারতের এসিড হামলা বিরোধী প্রচারণা, ‘শিল্প ও সংস্কৃতি’ বিভাগে জার্মানির ‘সেন্টার ফর পলিটিক্যাল বিউটি’ জুরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে।
দ্য ববস-এর ‘শিল্প ও সংস্কৃতি’ বিভাগে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ভোটে ‘ইউজার অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে বাংলাদেশের আলোকচিত্রী জিএমবি আকাশের ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট৷ আর ‘বাংলা ভাষা’ বিভাগে এই পুরস্কার জিতেছে ‘জার্মান প্রবাসে’ ওয়েবসাইট৷
আগামী জুন মাসে জার্মানির বন শহরে অনুষ্ঠেয় গ্লোবাল মিডিয়া ফোরামে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে৷
‘রেজার’স এজ’র পুরস্কার জয়ের প্রতিক্রিয়ায় এর নির্মাতা ডয়চে ভেলেকে বলেন, “ডকুমেন্টারিটি আমাদের কাছে কেবলই একটি ডকুমেন্টারি বা শিল্প প্রচেষ্টা নয়, বরং অ্যাক্টিভিজমের মাধ্যম৷ বর্তমানে বাংলাদেশে যেভাবে একের পর এক মুক্তমনা, নাস্তিক, সেক্যুলার লেখক, ব্লগার, প্রকাশক হত্যার
মহোৎসব শুরু হয়েছে, সেই প্রেক্ষাপটকে আমরা তুলে ধরতে চেয়েছি এর মাধ্যমে।”
এ বছর এ প্রতিযোগিতার বাংলা ভাষার বিচারক ছিলেন ব্লগার বন্যা আহমেদ, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় সন্ত্রাসীর চাপাতির আঘাতে স্বামী অভিজিৎ রায়কে হারান যিনি। ওই হামলায় বন্যাও আহত হন।
অভিজিৎ-বন্যার মুক্তমনা ব্লগ গেল বছর পেয়েছিল ‘দ্য ববস- সেরা অনলাইন অ্যাক্টিভিজম’ পুরস্কার।
বন্যা আহমেদ বলেন, “পরপর দুই বছর বাংলাদেশের ব্লগারদের প্রকল্পকে স্বীকৃতি দেওয়ার অর্থ হচ্ছে সেখানকার পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি৷ বরং অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে৷
“গত কয়েকদিনে চারটি চাপাতি হামলার ঘটনা ঘটেছে৷ মুক্তমনা অ্যাক্টিভিস্ট, লেখক, ব্লগার, শিক্ষক, সংখ্যালঘু- কেউই দেশটির কোথাও আর নিরাপদে নেই।”
পুরস্কার বিজয়ী প্রকল্পগুলো সম্পর্কে ডয়চে ভেলের মহাপরিচালক পেটার লিমবুর্গ বলেন, “ডয়চে ভেলে বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গোটা বিশ্বে বাকস্বাধীনতাকে উৎসাহ দিচ্ছে৷ দ্য ববস প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা বাকস্বাধীনতা রক্ষার বৈচিত্র্যময় এবং মহৎ বিভিন্ন উদ্যোগকে স্বীকৃতি দিচ্ছি৷ বিজয়ী এসব উদ্যোগ অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করতে পারে৷ কাজের ক্ষেত্রে ভিন্নতা থাকলেও এসব উদ্যোগ মূলত নিপীড়িত মানুষদের সহায়তায় কাজ করছে।”
আয়োজকরা জানান, চলতি বছর এ প্রতিযোগিতায় দুই হাজার ৩০০ মনোনয়ন জমা পড়ে৷ এগুলোর মধ্য থেকে ১২৬টি প্রকল্পকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়, যার মধ্য থেকে চারটি প্রকল্প জুরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে।
‘ইউজার অ্যাওয়ার্ড’র বিজয়ী নির্ধারণে এক লাখের বেশি অনলাইন ভোট পড়ে।