আইনি লড়াই শেষ: নিজামীর আইনজীবী

সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না, সে সিদ্ধান্ত তিনি এবং তার পরিবারই নেবেন বলে জানিয়েছেন এই জামায়াত নেতার একজন আইনজীবী। 

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2016, 06:11 AM
Updated : 5 May 2016, 06:11 AM

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বৃহস্পতিবার নিজামীর রিভিউ খারিজ করে রায় দেয়। এর ফলে যুদ্ধাপরাধের দায়ে সর্বোচ্চ সাজার আদেশ পাওয়া জামায়াত আমিরের সামনে কেবল কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনার কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার সুযোগ বাকি থাকে।

রায়ের পর  তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নিজামীর আইনজীবী এস এম শাজাহান সাংবাদিকদের বলেন, “আইনি লড়াই শেষ। তিনি মার্সি চাইবেন কি না- এটা তার এবং তার পরিবারের সিদ্ধান্তের বিষয়।”

এখন রিভিউ খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে তা নিজামীকে জানিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ জানতে চাইবে- তিনি ক্ষমার আবেদন করবেন কি না। 

তিনি তা না চাইলে বা রাষ্ট্রপতির ক্ষমা না পেলে সরকার দিনক্ষণ ঠিক করে কারা কর্তৃপক্ষকে ফাঁসি কার্যকরের নির্দেশ দেবে। তার আগে স্বজনেরা কারাগারে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাত করতে পারবেন।

একাত্তরের হত্যা, ধর্ষণ এবং বুদ্ধিজীবী গণহত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিজামীকে প্রাণদণ্ড দেয়। গত ৬ জানুয়ারি আপিলের রায়েও ওই সাজা বহাল রাখা হলে রিভিউয়ের আবেদন করেন নিজামী।

জামায়াত আমির নিজামী একাত্তরে ছিলেন দলটির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নাজিমে আলা বা সভাপতি এবং সেই সূত্রে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত আল বদর বাহিনীর প্রধান।

তার পরিকল্পনা, নির্দেশনা ও নেতৃত্বেই যে আলবদর বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়ন করেছিল- এই মামলার বিচারে তা প্রমাণিত হয়।

৭২ বছর বয়সী নিজামী হলেন বাংলাদেশের মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করা তৃতীয় ব্যক্তি, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে যার সামনে অপেক্ষা করছে ফাঁসির দড়ি।

পাবনা-১ আসন থেকে তিনবার সাংসদ নির্বাচিত হওয়া নিজামীকে ২০০১ সালে মন্ত্রিত্ব দেন বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া। প্রথমে দুই বছর কৃষি মন্ত্রীর দায়িত্বে থেকে সরকারের পরের তিন বছর ছিলেন শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্বে।

ওই সময়েই ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার জন্য পাচারের পথে চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়ে, যে মামলার রায়ে গতবছর নিজামীর ফাঁসির আদেশ হয়। কন্টেইনার ডিপোর ইজারা নিয়ে গেটকো দুর্নীতি মামলারও আসামি সাবেক শিল্পমন্ত্রী নিজামী।