৪ রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড, একজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড

একাত্তরে অপহরণ, নির্যাতন, হত্যার মতো যুদ্ধাপরাধের দায়ে কিশোরগঞ্জের চার রাজাকার সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত; একজনের হয়েছে আমৃত্যু কারাদণ্ড।

সুলাইমান নিলয়বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 May 2016, 06:44 AM
Updated : 3 May 2016, 06:44 AM

বিচারপতি আনোয়ারুল হক নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করে।

পাঁচ যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ফাঁসির আসামি কিশোরগঞ্জের আইনজীবী শামসুদ্দিন আহমেদই কেবল রায়ের সময় কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

শামসুদ্দিনের ভাই সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মো. নাসিরউদ্দিন আহমেদ, রাজাকার কমান্ডার গাজী আব্দুল মান্নান, আজহারুল ইসলাম ও হাফিজউদ্দিন মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

এদের মধ্যে আজহারুলকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত; বাকিদের হয়েছে মৃত্যুদণ্ড।

একাত্তরে এই পাঁচ আসামি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর সহযোগিতায় গঠিত রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন।

সে সময় কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার বিদ্যানগর, আয়লা, ফতেপুর বিল, কিরাটন বিলসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামে তারা যেসব মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড ঘটান, তা এ মামলার বিচারে উঠে এসেছে।

রায়ে বলা হয়েছে,সরকার ফাঁসিতে ঝুলিয়ে বা গুলি করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের রায় কার্যকর করতে পারবে।

পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র সচিব ও পুলিশ মহাপরিদর্শককে প্রয়োজনে ইন্টারপোলের সহযোগিতা নিয়ে পলাতকদের গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

রায় ঘোষণার পর আদালতে উপস্থিত একমাত্র আসামি শামসুদ্দিন বলেন, “ফলস উইটনেস, ফলস জাজমেন্ট…..। বানানো সাক্ষীর বিচার।”

অন্যদিকে এই যুদ্ধাপরাধীর হাতে একাত্তরে নিহত পরেশের বন্ধু ও মামলার সাক্ষী আব্দুর রশীদ ভূইয়া রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার বন্ধুকে হত্যার পর তার লাশ দাহ করতে নিষেধ করা হয়েছিল। তা না হলে পুরো গ্রাম পুড়িয়ে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়েছিল।”

এই রায়ে হতাশা প্রকাশ করে পাঁচ আসামির দুই আইনজীবী রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘ন্যায়বিচার না পাওয়ায়’ তারা সংক্ষুব্ধ। অন্যদিকে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন আসামিদের সাজার আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করে এই রায়কে উৎসর্গ করেছে যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবির আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে।

কিশোরগঞ্জ শহরে মুক্তিযোদ্ধারা আনন্দ মিছিল করেছেন

পাঁচ আসামির জেলা কিশোরগঞ্জে রায়ের পর
হয়েছে। অবিলম্বে রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন একাত্তরে এই যুদ্ধাপরাধীদের হাতে নিহতদের স্বজনরা।

শামসুদ্দিন আহমেদের আইনজীবী মাসুদ রানা জানিয়েছেন, আলোচনা করে আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। এজন্য তারা সময় পাবেন এক মাস। তবে আত্মসমর্পণ না করলে পলাতক চার আসামি সেই সুযোগ পাবেন না।    

ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত রায় আসা ২৩টি মামলার ৩১ আসামির মধ্যে মোট ২২ যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ সাজার আদেশ হলো।

কার কেমন সাজা

এ মামলায় প্রসিকিউশনের আনা সাতটি অভিযোগের মধ্যে ১, ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায় পাঁচ যুদ্ধাপরাধীর সবাই ছিলেন আসামি।

এছাড়া ২ নম্বর অভিযোগে হত্যার ঘটনায় নাসির; ৫ নম্বর অভিযোগে হত্যার ঘটনায় শামসুদ্দিন; ৬ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যা এবং ৭ নম্বর অভিযোগে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মান্নানকে আসামি করা হয়।

 

ঘটনা

অভিযোগ

আসামি

রায়

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থানার বিদ্যানগর ও আয়লা গ্রামের ৮ জনকে হত্যা।

অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা

শামসুদ্দিন আহমেদ,  নাসিরউদ্দিন আহমেদ, আব্দুল মান্নান, আজহারুল ইসলাম ও হাফিজউদ্দিন।

# শামসুদ্দিন, নাসিরউদ্দিন ও মান্নানের মৃত্যুদণ্ড

# আজহারুল ও হাফিজের আমৃত্যু কারাদণ্ড

আয়লা গ্রামের মিয়া হোসেনকে হত্যা।

হত্যা

নাসিরউদ্দিন আহমেদ

মৃত্যুদণ্ড

একই উপজেলার মো. আব্দুল গফুরকে অপহরণ, পরে খুদির জঙ্গল ব্রিজে নিয়ে হত্যা।

অপহরণ, হত্যা

পাঁচজনের সবাই আসামি

# হাফিজের মৃত্যুদণ্ড

# শামসুদ্দিন, নাসিরউদ্দিন ও আজহারুলের আমৃত্যু কারাদণ্ড

# মান্নান খালাস

করিমগঞ্জ ডাকবাংলোতে শান্তি কমিটির কার্যালয়ে আতকাপাড়া গ্রামে মো. ফজলুর রহমান মাস্টারকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যা।

অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা

পাঁচজনের সবাই আসামি

পাঁচ আসামির সবার আমৃত্যু কারাদণ্ড

রামনগর গ্রামের পরেশ চন্দ্র সরকারকে হত্যা।

হত্যা

শামসুদ্দিন আহমেদ

মৃত্যুদণ্ড

পূর্ব নবাইদ কালিপুর গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক ও রূপালীকে অপহরণ করে নির্যাতন ও হত্যা।

অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা

গাজী আব্দুল মান্নান

আমৃত্যু কারাদণ্ড

আতকাপাড়া গ্রামে আক্রমণ করে ২০-২৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ।

অগ্নিসংযোগ

গাজী আব্দুল মান্নান

৫ বছর কারাদণ্ড

‘যুদ্ধ ছিল রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে’

একাত্তরে সংঘটিত যুদ্ধকে অনেকে পাকিস্তানের ‘গৃহযুদ্ধ’ বলতে চাইলেও ঐতিহাসিক ওই ঘটনাটি যে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তান রাষ্ট্রের যুদ্ধ ছিল, তা ট্রাইব্যুনালের এ রায়ে উঠে এসেছে।

আদালত বলেছে, স্বাধীনতা ঘোষণা এবং পৃথক জন্মভূমি বাংলাদেশের জন্মের পর দখলদার পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী এবং তাদেরকে সহযোগিতার জন্য গঠিত সশস্ত্র মিলিশিয়া বাহিনী বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে বেসামরিক জনগণকে টার্গেট করে বর্বর নৃশংস কার্যক্রম শুরু করে। এভাবে তারা একটি আন্তঃরাষ্ট্রীয় যুদ্ধ বা সশস্ত্র সংঘাতে নিজেদেরকে ‍যুক্ত করে।

“বেসামরিক লোকজনকে লক্ষ্য করে অভিযুক্তদের দ্বারা সংগঠিত এই নৃশংস কাজ দুটি রাষ্ট্রের মধ্যকার যুদ্ধ বা সংঘাতে জেনেভা কনভেনশন বা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন বা যুদ্ধের আইনে উল্লেখিত নিজ ভূমিতে ‘প্রোটেকশন অব সিভিলিয়ান’ ধারণার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।”

প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ রায়ের পর বলেন, “রায়ের বেশ কয়েক জায়গায় বিচারকরা বলেছেন, এটা ছিল দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে সশস্ত্র সংঘাত। রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে যুদ্ধ। এর মাধ্যমে যারা এটাকে একটি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলতেন, তারা সেটি আর বলতে পারবেন না।”

আদালতকক্ষের চিত্র

চার আসামি পলাতক থাকায় কেবল শামসুদ্দিনকেই সকালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে করে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসা হয়। কিছু সময় ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় রেখে সকাল সাড়ে ১০টার পর তাকে তোলা হয় কাঠগড়ায়। এর পরপরই তিন বিচারক আসন গ্রহণ করেন।

ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের সূচনা বক্তব্যের পর ৩৩০ পৃষ্ঠার রায়ের সংক্ষিপ্ত সার পড়া শুরু করেন বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদী। এরপর বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম রায়ের আরেকটি অংশ পড়েন। সবশেষে সাজা ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান।

বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রায় ঘোষণা শেষে কাঠগড়ায় উপস্থিত একমাত্র আসামি শামসুদ্দিন কথা বলতে শুরু করলে সক্রিয় হয়ে ওঠেন পাশে থাকা পুলিশ সদস্যরা।

তারা তাকে কাঠগড়া থেকে নামিয়ে আনার জন্য হাত ধরে তাগাদা দিলে শামসুদ্দিন বলেন,“আসছি তো।”

পরে তাকে কিছু সময় ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় রেখে প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। শামসুদ্দিনের পরিবারের কয়েকজন সদস্যকেও আদালতে দেখা যায়।

মামলা বৃত্তান্ত

# প্রসিকিউশনের তদন্ত দল ২০১৩ সালের ৬ জুন এই পাঁচ যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। এক বছর পাঁচ মাস ১৮দিন পর গতবছর ২৪ নভেম্বর তদন্ত কাজ শেষ হয়।

# তদন্ত চলার মধ্যেই ২০১৪ সালের ২৭ নভেম্বর ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার তারেরঘাট সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল শামসুদ্দিন আহমেদকে  গ্রেপ্তার করে।

# ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন গতবছর ১০ মে এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করলে তিন দিন পর আদালত তা আমলে নেয়।

# অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে গতবছর ১২ অক্টোবর পাঁচ আসামির যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু করে আদালত।

# রাষ্ট্রপক্ষে ২৫ জন এ মামলায় সাক্ষ্য দেন। আসামিপক্ষে কোনো সাক্ষী ছিল না।

# শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন।

# আসামি শামসুদ্দিনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম মাসুদ রানা। পলাতক অপর চারজনের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আব্দুস শুকুর খান শুনানিতে অংশ নেন।

# প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে গত ১১ এপ্রিল আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখে।

রায়ের পর কিশোরগঞ্জের যুদ্ধাপরাধী শামসুদ্দিন আহমেদ

শামসুদ্দিন আহমেদ

স্কুল রেকর্ডের তথ্য অনুযায়ী কিশোরগঞ্জ জেলা বারের সদস্য শামসুদ্দিন আহমেদের জন্ম ১৯৫৬ সালে। বাড়ি করিমগঞ্জ উপজেলার করিমগঞ্জ মধ্যপাড়া (ডুলিপাড়া) গ্রামে।

একাত্তরে তিনি রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়ে করিমগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায় যুদ্ধাপরাধে লিপ্ত হন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বেশ কিছুদিন পলাতক থেকে আবারও সমাজের মূল ধারায় মিশে যান শামসুদ্দিন। ১৯৮২ সালে বিএ ডিগ্রি নেওয়ার পর ১৯৯১ সালে এলএলবি করেন। তার চার বছর পর তিনি ময়মনসিংহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বিএড ডিগ্রি পান।

এই লেখাপড়ার পাশাপাশি ১৯৮৫ সাল থেকেই নিয়ামতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কাজ করে আসছিলেন একাত্তরের এই যুদ্ধাপরাধী। তামোনি ভূইয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে ২০০৪ সালে তিনি অবসরে যান।

শিক্ষকতা থেকে অবসরের পর শামসুদ্দিন ময়মনসিংহ জেলা বারে অ্যাডভোকেট হিসেবে এনরোলমেন্ট পান। 

চার পলাতক যুদ্ধাপরাধী- মো. নাসিরউদ্দিন আহমেদ, হাফিজউদ্দিন, গাজী আব্দুল মান্নান ও আজহারুল ইসলাম

নাসিরউদ্দিন আহমেদ

শামসুদ্দিনের বড় ভাই নাসিরউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন সাবেক ক্যাপ্টেন। স্কুলের রেকর্ড অনুযায়ী, তার জন্ম ১৯৫৪ সালে।

প্রসিকিউশনের তথ্য অনুযায়ী, জঙ্গলবাড়ি হাই স্কুল থেকে নাসিরউদ্দিনের এসএসসি পাশের পরপরই দেশে শুরু হয় স্বাধীনতার যুদ্ধ। আর তিনি তখন যোগ দেন রাজাকারের দলে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, শামসুদ্দিন ও নাসিরউদ্দিন দুই ভাই সে সময় ট্রেইনিং নেন রাজাকার কমান্ডার গাজী আব্দুল মান্নানের কাছ থেকে। নানা মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটিয়ে ছোট ভাইয়ের মতো স্বাধীনতার পর তিনিও আত্মগোপনে যান।

পরে একময় স্বাধীন বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে যোগ দেন একাত্তরের রাজাকার নাসিরউদ্দিন।  এ কারণে এলাকার মানুষ তাকে ক্যাপ্টেন নাসির নামেও চেনে।

‘অনৈতিক কর্মকাণ্ডের’ অভিযোগে ২০০২ সালে সেনাবাহিনী থেকে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।

গাজী আব্দুল মান্নান

জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী, গাজী আব্দুল মান্নানের জন্ম ১৯২৭ সালে করিমগঞ্জের চরপাড়া গ্রামে।

অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা এই মান্নানই একাত্তরে স্থানীয় রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার বনে যান এবং রীতিমতো সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন।

সহযোগীদের নিয়ে তিনি নিজের এলাকায় নানা মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটান বলে আদালতের নথিতে উঠে এসেছে।   

হাফিজউদ্দিন

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার খুদির জঙ্গল গ্রামের হাফিজউদ্দিনের জন্ম ১৯৪৯ সালে। লেখাপড়া করেছেন মাদ্রাসায়।  

একাত্তরে তিনিও রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতায় নানা যুদ্ধাপরাধ ঘটনা বলে উল্লেখ করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে।

আজহারুল ইসলাম

জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী, আজহারুল ইসলামের জন্ম ১৯৫৬ সালে, করিমগঞ্জের হাইধনখালি গ্রামে।

হাফিজউদ্দিনের মতো তিনিও মাদ্রাসায় পড়েছেন এবং একাত্তরে রাজাকারের দলে যোগ দিয়ে যুদ্ধাপরাধে যুক্ত হয়েছেন বলে প্রসিকিউশনের তথ্য।