বাংলাদেশের সঙ্গে ‘সুসম্পর্ক চায়’ মিয়ানমার

বাংলাদেশের সঙ্গে ‘কোনো বিরোধ’ দেখেন না জানিয়ে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইউ থিন উ বলেছেন, তার দেশের নতুন সরকার প্রতিবেশী সব দেশের সঙ্গে ‌‘সুসম্পর্ক’ গড়ে তুলতে চায়।

নুরুল ইসলাম হাসিব ইয়াঙ্গুন থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 May 2016, 04:54 PM
Updated : 2 May 2016, 04:54 PM

দীর্ঘ সামরিক শাসন পেরিয়ে গণতন্ত্রের পথে পা রাখা দেশটির ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ অব ডেমোক্রেসির (এনএলডি) ৮৯ বছর বয়সী এই প্রধান পৃষ্ঠপোষক ‘শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থান’ই তার দলের মূলনীতি বলে জানান।

সোমবার ইয়াঙ্গুনে এনএলডি প্রধান কার্যালয়ে একদল বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে থিন বলেন, “আমি আশা করি, সব সমস্যা শান্তিপূর্ণভাবে সমাধা হবে।”

প্রতিবেশী মিয়ানমারের সঙ্গে বেশকিছু বিষয় অমীমাংসিত রয়েছে বাংলাদেশের। এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে, দেশটির ৫ লাখের বেশি মুসলিম নাগরিকের বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া।

তাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ বারবার আহ্বান জানিয়ে এলেও মিয়ানমারের সামরিক শাসকরা তাতে কান দেয়নি। সু চির দলের নতুন সরকারের অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়।  

এনএলডি নির্বাচনে জয়ী হয়ে মাসখানেক হল সরকার গঠন করেছে, যাতে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে প্রধানমন্ত্রী হতে না পেরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন সু চি।

মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক যুগের শুরুর পর প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে দূরত্ব ঘোচাতে চায় বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে ইয়াঙ্গুনের বাংলাদেশ চ্যান্সেরিতে শনিবার প্রথমবারের মতো বাংলা নতুন বছরকে আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপন করা হয়েছে।

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপনের সঙ্গী হয়ে এনএলডি সহ প্রতিষ্ঠাতা থিন উ দুই দেশের সংস্কৃতির সাদৃশ্য দেখে অভিভূত হন। দুই দেশের মানুষের মধ্যে দৃঢ় যোগাযোগ স্থাপনে সোমবার একই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা বলেন তিনি।

স্বাধীনতার আগে বাংলাদেশ পাকিস্তানের শোষণের শিকার হয়েছে উল্লেখ মিয়ানমারও সামরিক শাসনে একই ধরনের শোষণের মধ্য দিয়ে গেছে বলে জানান থিন উ।

এই প্রসঙ্গে পাকিস্তানি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথাও স্মরণ করেন মিয়ানমারের এই নেতা।

নাফ নদীর সীমানা চিহ্নিত করণের পর দুই দেশের মধ্যে ‘আর কোনো বিরোধ’ নেই বলে মনে করেন তিনি।

সামরিক বাহিনীতে দীর্ঘদিন চাকরি করেও গণতন্ত্রের পক্ষ নেও থিন উ সেনা কর্মকর্তা হিসেবে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে দায়িত্ব পালনের কথা স্মরণ করেন।

সু চির কাছে সব প্রতিবেশীই সমান

মিয়ানমারের বর্তমান সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েও কার্যত ক্ষমতাবান অং সান সু চি তার ‘জনবান্ধব’ পররাষ্ট্রনীতিতে সব প্রতিবেশীর সঙ্গে ‌‘সুসম্পর্ক’র ওপর জোর দিচ্ছেন বলে দেশটির সরকারের নীতি নির্ধারকরা জানিয়েছেন।

সফররত বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ঢাকায় মিয়ানমারের সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং দেশটির ইনস্টিটিউট অব স্ট্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের নির্বাহী কমিটির (এমআইএসআইএস) বর্তমান সদস্য ইউ ওয়াইন লুইন বলেন, “তার (সু চি) কাছে সব প্রতিবেশী সমান।”

বাংলাদেশের সঙ্গে জ্বালানি ও নিরাপত্তা খাতে সহযোগিতা তৈরিতে সামনের সপ্তাহে এমআইএসআইএস’র একট প্রতিনিধিদলকে আগামী সপ্তাহে ঢাকা সফরে পাঠানো হচ্ছে বলে জানান সংস্থাটির চেয়ারম্যান নুউন্ট মং শেইন।