বিশ্বের নানা দেশের মতো বাংলাদেশেও ১ মে রোববার আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস তথা মে দিবস পালিত হবে। দিনটি সাধারণ ছুটির দিন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার বাণীতে মহান মে দিবসকে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে এক ‘অনন্য গৌরবময়’ দিন অভিহিত করে ১৩০ বছর আগের সেই রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শ্রমিক সংগঠনের বিজয় মুহূর্তকে স্মরণ করেন।
আবদুল হামিদ বলেন, “এজন্য উৎপাদনশীলতা ও শ্রমিকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ, ন্যায্য মজুরি, শ্রমিকদের অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিতকরণসহ সুস্থ শিল্পসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা খুবই জরুরি বলে আমি মনে করি।”
শ্রমিকসহ মেহনতি মানুষের জন্য শোষণমুক্ত, মর্যাদাসম্পন্ন ও সামাজিক ন্যায়বিচার ভিত্তিক একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অঙ্গীকার ছিল মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি বলেন, “সে লক্ষ্যে বর্তমান সরকার শ্রমিকদের কল্যাণে তাদের অধিকার ও জীবনমান উন্ন্য়ন, ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, নিরাপদ কর্মপরিবেশ, শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছে। দেশের মেহনতি শ্রমজীবী মানুষ এর সুফল পাচ্ছেন।”
সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তুলতে শিল্পোদ্যোক্তা, মালিক ও শ্রমিকের সম্মিলিত প্রয়াস আশা করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরে হে মার্কেটের শ্রমিকরা শ্রমের ন্যায্য মূল্য এবং আট ঘণ্টা কাজের সময় নির্ধারণ করার দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলে।
১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই ফ্রান্সের প্যারিসে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে শিকাগোর শ্রমিকদের সংগ্রামী ঐক্যের অর্জনকে স্বীকৃতি দিয়ে ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস ঘোষণা করা হয়।
১৮৯০ সাল থেকে সারাবিশ্বে শ্রমিক সংহতির আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে মে মাসের ১ তারিখে 'মে দিবস' পালিত হচ্ছে।
দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মেহনতি মানুষের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে শিকাগো শহরে আত্মাহুতি দেওয়া শ্রমিকদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন বঞ্চিত ও মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন জানিয়ে বাণীতে শেখ হাসিনা বলেন, “তিনি পরিত্যক্ত কল-কারখানা জাতীয়করণ করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করে আমরা দেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ও কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।”
মহান মে দিবসের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে মে দিবস উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বাংলাদেশি শ্রমিক-কর্মচারীসহ বিশ্বের সব খেটে খাওয়া মানুষের উত্তরোত্তর সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও সাফল্য কামনা করেছেন।