‘শর্ত দিয়েও মেয়েদের বিয়ের বয়স কমানো যাবে না’

কোনো ধরনের শর্ত রেখেও মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ এর নিচে আনার বিপক্ষে অবস্থান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই সংসদ সদস্য।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2016, 10:32 AM
Updated : 30 April 2016, 11:01 AM

শনিবার সংসদ ভবনে এক মতবিনিময় সভায় সিরাজগঞ্জের সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত এবং সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সানজিদা খানম তাদের অবস্থান জানান। 

ডা. হাবিবে মিল্লাত বলেন, “১৮ বছরের নিচে কোনো মেয়ের বিয়ে দেওয়া যাবে না। খুব শিগগিরই এ সংক্রান্ত আইন সংসদে আসবে। সেখানে কোনো ‘কিন্তু’ বা ‘শর্ত’ যোগ করা যাবে না।”

“আইনের মাধ্যমে নারীদের বিয়ের বয়স ১৮ বছর করার ক্ষেত্রে আরও কঠোর হতে হবে। আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের এই অবস্থান আরও স্পষ্ট করতে হবে,” বলেন অ্যাডভোকেট সানজিদা।

মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর থেকে কমানো যায় কি না- ২০১৩ সালে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে তা পর্যালোচনার কথা উঠার পর থেকে তার বিরোধিতা চলছে বিভিন্ন মহল থেকে।

ওই সময় মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ জানিয়েছিলেন, বিয়ের বয়স কমানোর কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

তবে এর পরে গত বছরের অক্টোবরে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর রেখেই ‘বিশেষ পরিস্থিতির’ ক্ষেত্রে তা ১৬ বছর করার প্রস্তাব সম্বলিত আইনের একটি খসড়া করা হয়েছে।

এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে মাতৃমৃত্যু রোধ ও বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের দুই সংসদ সদস্য তাদের আপত্তি তুলে ধরেন।

জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের অর্থায়নে এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘স্ট্রেংদেনিং পার্লামেন্ট’স ক্যাপাসিটি ইন ইন্টিগ্রেটেড পপুলেশন ইস্যু ইনটু ডেভেলপমেন্ট (এসপিসিপিডি)’ শীর্ষক প্রকল্প এই মতবিনিময় সভা আয়োজন করে।

মাতৃস্বাস্থ্য উন্নয়ন ও মাতৃরোধ প্রতিরোধ, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ এবং যুব উন্নয়ন বিষয়ে সংসদ সদস্যদের সাথে নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রকল্পটি কাজ করছে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা মাতৃস্বাস্থ্য ও মাতৃমৃত্যু রোধ এবং বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে গণমাধ্যমে আরও সক্রিয় ভূমিকা আশা করেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতি সংসদের প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ বলেন, “আমরা গণমাধ্যমের কাছে আশা করি তারা যেন বাল্যবিবাহ সম্পর্কিত আইনের কঠোর দিকগুলো আরও ফলাও করে প্রচার করে। যৌন নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করুক।”

যেসব এলাকায় গণমাধ্যমের প্রচার কম, সে সব এলাকায় বাল্যবিয়ের প্রবণতা বেশি বলে একটি গবেষণায় উঠে আসার কথাও জানান তিনি।

সংসদের মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি রেবেকা মমিন, সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব গোলাম কিবরিয়া, এসপিসিপিডির প্রকল্প পরিচালক কামাল বিল্লাহ।