যৌন হয়রানি: আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বরখাস্ত

যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠার পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এক শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে রাজধানীর আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2016, 07:07 AM
Updated : 30 April 2016, 02:22 PM

বরখাস্ত মাহফুজুর রশিদ ফেরদৌস বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টির তড়িৎ কৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের দায়িত্বও পালন করছিলেন।

যৌন হয়রানির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ফেরদৌসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এম এম শফিক উল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবিতে শনিবার সকাল ১০টা থেকে প্রতিষ্ঠানটির তেজগাঁও ক্যাম্পাসের সামনে বিক্ষোভ করছিল শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী তড়িৎ কৌশল বিভাগের ছাত্র মোহাইমিনুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ডিপার্টমেন্টের ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। এর আগেও কয়েকবার তিনি একই কাজ করেছেন।

“সর্বশেষ এ সংক্রান্ত একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করেছিলাম। এরপর তিনি ওই ছাত্রীকে চাপ নিয়ে মিথ্যা বিবৃতি লিখিয়ে নেন। আমাদের দাবি, অবিলম্বে এই শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করতে হবে এবং আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।”

এই বিক্ষোভের মধ্যে বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করেন উপাচার্য। এরপর তিনি শিক্ষক ফেরদৌসকে সাময়িক বরখাস্তের কথা জানালেও শিক্ষার্থীরা তাকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করার দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকে।

উপাচার্য তখন বলেন, “কাউকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হলে কিছু নিয়মকানুন আছে। আর তার একটি প্রাথমিক ধাপ বরখাস্ত।”

এরপর শিক্ষার্থীরা কিছুটা শান্ত হয়।

উপাচার্য শফিকউল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির দুটি ‘বেনামী অভিযোগ’ পাওয়া গেছে। তাছাড়া একজন ছাত্রীর কাছ থেকে নির্দোষিতার পক্ষে জবানবন্দি নেওয়ার চেষ্টার একটি ভিডিও কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে।

“তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তার পেছনে আর কেউ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।”

শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল দাবি করেন, তাদের কাছে অনেক প্রমাণ আছে যে ওই শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে নানা কৌশলে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে আসছিলেন। কমিটির কাছে একাধিক ছাত্রী জবানবন্দি দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েও রেখেছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে শিক্ষক ফেরদৌসকে ফোন করা হলে সাংবাদিকের পরিচয় পাওয়ার পরেই অন্য প্রান্ত থেকে একজন বলেন,“স্যার ব্যস্ত আছেন। এখন কথা বলতে পারবেন না।”

কে কথা বলছেন- জানতে চাইলে বলা হয়, “আমি স্যারের পিএস বলছি।”

পরে নাম জানতে চাইলে ফোন কেটে দেওয়া হয়।

উপাচার্যের এপিএস নজরুল ইসলামের কক্ষে বসে ফেরদৌসের সাথে এসব কথা বলার পর তার কাছে ফেরদৌসের পিএস’এর নাম জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফেরদৌস সাহেবের তো পিএস থাকার কথা নয়।”