বায়োমেট্রিক নিবন্ধনে সমস্যা দ্রুত সারাতে অপারেটরদের নির্দেশ

বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল ফোনের সিম নিবন্ধনে গ্রাহকদের সমস্যা ও ভোগান্তি দ্রুত নিরসন করতে অপারেটরদের নির্দেশ দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 April 2016, 12:41 PM
Updated : 29 April 2016, 02:09 PM

সময় শেষের আগের দিন গ্রাহকদের পক্ষ থেকে সিম পুনঃনিবন্ধনে বিভিন্ন ভোগান্তির অভিযোগের মধ্যে শুক্রবার আগারগাঁওয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যালয়ে অপারেটর প্রতিনিধি ও এনআইডি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে এই নির্দেশ দেন তিনি।

৩০ এপ্রিলের মধ্যে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম পুনঃনিবন্ধনের সময় শেষ হচ্ছে। শেষ মুহূর্তে এসে  স্থানীয় পর‌্যায়ে সিম পুনঃনিবন্ধন কেন্দ্রে দুর্ভোগের অভিযোগ এসেছে।

বৈঠক শেষে এনআইডি উইংয়ের পরিচালক (অপারেশন্স) সৈয়দ মুহাম্মদ মূসা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের সার্ভার সচল রয়েছে; কোনো ধরনের ত্রুটি ছিল না। আমাদের এখানে কোনো সমস্যা নেই।

“তবে সমস্যা যা-ই থাকুক, অপারেটরদের দ্রুত তা সারতে বলা হয়েছে। মোবাইল অপারেটরদের কোনো সমস্যার কারণে নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় ঝামেলা হতে পারে। সেক্ষেত্রে দ্রুততার সঙ্গে সমস্যার সমাধানের নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।”

অপারেটরদের প্রতিনিধিরা বৈঠকে অংশ নিয়ে তাদের অবস্থান তুলে ধরেন বলে জানান তিনি।

“অপারেটররা বলেছে, আঙুলের ছাপ যাছাইয়ে তারা যে পরিমাণ রিকোয়েস্ট পাঠাচ্ছে সে পরিমাণ সাড়া পাচ্ছে না। আমরা বলেছি, তা হওয়ার সুযোগ নেই। বরং আমরাই অপারেটরদের কাছ থেকে পর‌্যাপ্ত পরিমাণ রিকোয়েস্ট পাইনি।”

প্রতি সেকেন্ডে ছয় হাজার সংখ্যক আঙুলের ছাপসহ তথ্য যাছাইয়ের সুযোগ রয়েছে এনআইডির তথ্যভাণ্ডারে।

এনআইডি পরিচালক বলেন, “আমরা যে কোনো ধরনের কাজ মোকাবেলায় প্রস্তুতি রয়েছি। অপারেটরদের যে কোনো সহায়তা দিতে আমাদের কর্মকর্তারাও কাজ করে যাচ্ছে।

“এ পর‌্যন্ত ৮ কোটিরও বেশি গ্রাহকের পুনঃনিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে বলে অপারেটররা জানিয়েছেন। সোয়া কোটিরও বেশি গ্রাহকের আঙুলের ছাপও মেলেনি ইতোমধ্যে, তাদের বিষয়েও করণীয় নির্ধারণ করা হচ্ছে।”

প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে দুই পক্ষের আইটি শাখার কর্মকর্তাদের বৈঠক চলছে বলে জানান এনআইডি উইংয়ের পরিচালক (অপারেশন্স) মূসা।

“এ বিশাল কাজ করতে গিয়ে অপারেটরদের অভিজ্ঞতাগুলো শুনছেন আমাদের লোকজন। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতাও দেবে এআইডি। অপারেটররাও বলেছেন- তারা দ্রুততার সঙ্গে সমস্যা নিরসন করবে।”

পরস্পরের দিকে দোষারোপ

বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সিম পুনঃনিবন্ধনে সৃষ্ট জটিলতার জন্য একে অপরকে দোষারোপ করার চেষ্টা করেছে।

অপারেটরদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এআইডি সার্ভারে যাচাইয়ের জন্য পাঠানো প্রায় তিন লাখ গ্রাহকের তথ্য প্রক্রিয়াধীন বলে সিগন্যাল পাঠানো হচ্ছে। তারা সঠিকভাবে এনআইডির সহায়তা পাচ্ছে না।

তবে এনআইডি উইং বলেছে, তাদের কাছে সহায়তার অনুরোধ আসেনি, পর্যাপ্ত তথ্যও অপারেটররা সরবরাহ করছে না।

এ অবস্থায় প্রতিমন্ত্রী তারানা বলেন, “আমি কোনো অজুহাত শুনতে চাই না। সময় মাত্র একদিন রয়েছে। আর নতুন কোনো অজুহাত না দেখিয়ে রাতের মধ্যে অপারেটরদের সার্ভার ঠিক করতে হবে।”

ইসির এনআইডি উইং তাদের সেবা নিশ্চিতে পাঁচ শতাধিক উপজেলা নির্বাচন অফিস খোলা রাখা ও আইটি কর্মকর্তাদের প্রস্তুত রাখার বিষয়টিও তুলে ধরেছে সভায়।

উপজেলা নির্বাচন অফিসের সামনে অপারেটরদের কোনো সেবা কেন্দ্র না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী।

“আঙুলের ছাপ নিয়ে অনেককে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। গ্রাহকরা উপজলা নির্বাচন অফিসে ছুটছেন। তা হালনাগাদ করার পরই সেখানে সেবা দিতে পারলে ভালো হতো। এখন পর্যন্ত নির্বাচন অফিসে কোনো অপারেটর বসেনি।”

সময় কম হওয়ায় দুর্ভোগ কমাতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।

সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে ইতোমধ্যে যারা সিম পুনঃনিবন্ধন করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানান প্রতিমন্ত্রী। সিম পুনঃনিবন্ধনের সময় বাড়ানো হবে কিনা তা নিয়ে শনিবার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান তিনি।

সেই সঙ্গে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন কাজ শেষ হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তারানা।

এর মধ্যে উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচনী অফিসগুলো রাত ১০টা পর‌্যন্ত খোলা রাখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে অপারেটরদের সেবা কেন্দ্রও খোলা থাকবে।