শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে একটি শো-রুম উদ্বোধন শেষে কলাবাগানের ওই জোড়া খুনের তদন্তের অগ্রগতি জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমরা ঠিক পথে এগোচ্ছি, তা আমরা আপনাদের জানাবো।”
গত বছরের কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের মতো সোমবার বিকালে কলাবাগানের লেক সার্কাস এলাকায় পার্সেল দেওয়ার কথা বলে বাসায় ঢুকে কুপিয়ে খুন করা হয় ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সাবেক প্রটোকল অ্যাসিসটেন্ট জুলহাজ জুলহাজ (৩৫) ও তার বন্ধু তনয়কে (২৬)।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনির খালাত ভাই জুলহাজ সমকামীদের অধিকারের পক্ষের সাময়িকী ‘রূপবান’ সম্পাদনায় যুক্ত ছিলেন।
ওই খুনের ঘটনায় জুলহাজের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনকে আসামি করে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা করেন। বুধবার তার তদন্তভার পায় ডিবি পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত কাউকে সনাক্ত করা গেছে কি না- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবো না। পরে আপনাদের জানাবো।”
তিনি বলেন, “আপনারা বিভিন্ন পত্রিকায় দেখেছেন, আমরা এগুলো আর এখন কিছু বলছে চাচ্ছি না। কয়েকদিন পর সব জানাবো।
এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আল কায়দার নামে বার্তা এলেও তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের।
জুলহাজের আগে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশে মুক্তমনা লেখক, ব্লগার, শিক্ষক, অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ও ভিন্ন মতাবলম্বীদের ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডের অধিকাংশ ঘটনার দায় স্বীকারের বার্তা এসেছে আইএসের নামে। এসব দাবিও খারিজ করে সরকার বলে আসছে, বাংলাদেশে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক এই জঙ্গি গোষ্ঠীর কোনো অস্তিত্ব নেই।
ধানমন্ডির বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ ধরনের ‘টার্গেট কিলিং’ এর যত ঘটনা ঘটেছে তাতে জড়িত প্রায় সবাইকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল।
“যতগুলো টার্গেট কিলিং হয়েছে ব্লাগারসহ, এগুলোর প্রায় সবগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে। কয়েকজনকে ধরেছি। তারা বিচারের মুখোমুখি। কয়েকজন অতি শিগগির ধরা পড়বে।”
জুলহাজ ও তনয়কে খুন করে যাওয়ার সময় এক পুলিশ এবং এক নিরাপত্তাকর্মীকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকশ’ গজ দূরে ডলফিন রোডের এক বাসার সিসিটিভিতে পাঁচ যুবককে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দৌড়ে যাওয়া যুবকরাই লেক সার্কাস রোডে খুন করে সেই রাস্তা দিয়ে পালায়।
জুলহাজ হত্যা তদন্তে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র; খুনিদের গ্রেপ্তারের আহ্বান জানিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোনও করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি।