সুপ্রিম কোর্টের অনলাইনে প্রকাশিত আগামী সোমবারের কার্যতালিকায় পূর্ণাঙ্গ রায় না হওয়া এই মামলাগুলো রাখার বিষয়টি দেখা যায়।
প্রধান বিচারপতির একান্ত সচিব (আপিল বিভাগ) মো. আনিসুর রহমান বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়া ১৬৮টি মামলা পুনঃশুনানির জন্য রাখা হয়েছে।”
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে ১৬৯ থেকে ২৭৫ পর্যন্ত ক্রমিকে থাকা ১০৭টি মামলা পুনঃশুনানির জন্য রাখা হয়েছে।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা নেতৃত্বাধীন অন্য বেঞ্চের তালিকার ২১২ থেকে ২৭২ নম্বর ক্রমিকে পুনঃশুনানির জন্য এসেছে ৬১টি মামলা।
এই দুই বেঞ্চে অন্য বিচারকদের সঙ্গে ছিলেন অবসরে যাওয়া দুই বিচারক সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন এবং বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
সুপ্রিম কোর্টের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘১৬১টি মামলা যে বেঞ্চে নিষ্পত্তি হয়েছিল, সেই বেঞ্চে বিচারক হিসাবে বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীও ছিলেন। আর ৭টি মামলায় বিচারক হিসাবে ছিলেন অবসরে যাওয়া প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন।”
এই ১৬৮ মামলার সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষিত হলেও পূর্ণাঙ্গ রায় এখনও প্রকাশিত হয়নি বলে জানান তিনি।
বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন বাংলাদেশের ২০তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে অবসরে যান। শামসুদ্দিন চৌধুরী অবসরে যান গত অক্টোবরে।
যে মামলাগুলো পুনঃশুনানিতে উঠছে, তা ২০১৩ সাল থেকে এই দুই বিচারকের অবসর নেওয়ার আগ পর্যন্তের বলে জানা যায়।
পুনঃশুনানির উদ্যোগের প্রতিক্রিয়ায় বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী রাতে একাত্তর টেলিভিশনে এক অনুষ্ঠানে বলেন, এটি ‘নজিরবিহীন’ এবং ‘পরিহাসের মতো’।
এর ফলে আদালতের ‘মূল্যবান সময় নষ্ট হবে’ বলেও মন্তব্য করেন অবসরে যাওয়া আপিল বিভাগের এই বিচারক।
অবসরের পর রায় লেখা নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে অবসরের পর লেখা নিজের রায় ও আদেশগুলো গত ফেব্রুয়ারিতে জমা দিয়েছিলেন প্রধান বিচাপতি এস কে সিনহার সমালোচক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী।
বিচারপতি এস কে সিনহা তার প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার বছর পূর্তিতে গত মাসে দেওয়া এক বাণীতে বিচারকদের অবসরের পর রায় লেখা ‘সংবিধান পরিপন্থি’ বলার পর তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়।
বিচারপতি শামসুদ্দিনকে কেন্দ্র করে তার ওই বক্তব্য ছিল ধরে নিয়ে আইনপ্রণেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বিচার বিভাগের ‘কোন্দল’ প্রকাশ্যে এনে উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য বিচারপতি এস কে সিনহার সমালোচনাও করেন।
এরমধ্যে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী তার অবসরের পর লেখা রায় নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন। তা নিয়ে আলোচনার মধ্যে ফেব্রুয়ারি ও মার্চে তিনি ওই সব রায় জমা দেন।
এই বিতর্কের মধ্যে একটি মামলায় আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর্যবেক্ষণে রায়ে দ্রুত সহ করতে বিচারকদের তাগিদ দিয়ে বলা হয়, ব্যতিক্রমী মামলার ক্ষেত্রেও রায় ঘোষণার ছয় মাসের মধ্যে তাতে সই করতে হবে।