মোড় বদলের সাক্ষী হলাম: ইনু

গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানে সহায়তায় গণমাধ্যমের প্রকাশনায় ‘বস্তুনিষ্ঠতা ও নৈতিকতা’র বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2016, 11:33 AM
Updated : 15 March 2016, 01:30 PM

মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, এক্ষেত্রে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে কাজ করে যাচ্ছে।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে মিলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রকাশিত বার্ষিক সাময়িকী ‘টার্নিং পয়েন্টস’-এর মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

হাসানুল হক ইনু বলেন, “আমরা বাংলাদেশে আর অগণতান্ত্রিকতার চর্চা দেখতে চাই না। অগণতান্ত্রিক সরকারও দেখতে চাই না। অতীতের মতো সামরিক হস্তক্ষেপও দেখতে চাই না। অথবা সাম্প্রদায়িকতা সমর্থিত কোনো সরকারও দেখতে চাই না।”

“এরকম পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানে সহায়তা করতে গণমাধ্যমের প্রকাশনায় বস্তুনিষ্ঠতা ও নৈতিকতার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতাও দরকার।

“প্রত্যেক সমাজেরই একটা গণ্ডি থাকে। সুতরাং গণমাধ্যমের একটা দায়বদ্ধতা আছে। দায়বদ্ধতা আছে এদেশের ইতিহাসের প্রতি, নারীর সম্মানের প্রতি, শিশুর নিরাপত্তার প্রতি, রাষ্ট্রীয় ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার প্রতি এবং প্রত্যেকটি মানুষের ব্যক্তিগত জীবন-যাপনের গোপনীয়তার প্রতি।”

ইনু বলেন, “এই দায়বদ্ধতাকে মাথায় রেখে নিজের বিবেক-বুদ্ধি দ্বারা পরিচালিত হয়ে নৈতিকতার বিষয়টা মাথায় রেখে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সরবরাহ করা একটা চ্যালেঞ্জ। এবং সেই চ্যালেঞ্জটাই ১০ বছর ধরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম পালন করছে। এজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।”

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ও নিউ ইয়র্ক টাইমসের যৌথ প্রযোজনায় টার্নিং পয়েন্টস প্রকাশ হওয়াকে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের জন্য ‘বিরাট ও বিশাল’ ঘটনা বলে অভিহিত করে মন্ত্রী।

হাসানুল হক ইনু বলেন, “অত্যন্ত মোড় বদলকারী ঘটনার সাক্ষী হতে আজকে এখানে এসেছি। আমি মনে করি, এটা বাংলাদেশের গণমাধ্যমের জন্য বিরল সম্মানজনক একটি অবস্থান যে, বাংলাদেশের গণমাধ্যমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতো পত্রিকা একসঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

“যৌথ এই প্রকাশনা এটাই প্রমাণ করে, বাংলাদেশের গণমাধ্যম আইনগতভাবে সবরকম স্বাধীনতা ভোগ করছে।”

নিউ ইয়র্ক টাইমসের ১৬৫ বছরের ইতিহাস টেনে তিনি বলেন, “এ পত্রিকাটি বস্তুনিষ্ঠতা, নৈতিকতা ও সততার জন্য পৃথিবীতে পরিচিত লাভ করেছে।

“ঠিক তেমনিভাবে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রায় ১০ বছর পার করেছে। আমার দৃষ্টিতে তারা বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখে এবং নৈতিকতার বিষয়টা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে অনুসরণ করে।”

তথ্যমন্ত্রী গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিকাশের ক্ষেত্রে গণমাধ্যম ও গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যের কথাও তুলে ধরেন।  

তিনি বলেন, “আমরা যখন অতীতের স্বৈরতন্ত্র, উপনিবেশতন্ত্র, সামরিকতন্ত্র, সাম্প্রদায়িকতার থেকে ক্রমাগত গণতন্ত্রের দিকে উত্তরণ পর্বে আছি সেইখানে এই গণতন্ত্রের যাত্রাপথে আমাদের অতীতের এই উপনিবেশ, সামরিক শাসন ও সাম্প্রদায়িকতার জঞ্জালগুলো আমাদের মাঝে আছে।

“এটা একটা চ্যালেঞ্জ যে, গণতন্ত্রের যাত্রায় যখন গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিচ্ছি তখন গণমাধ্যমকেও একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপে ক্রমাগত শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করানো হবে।”

অতীতের জঞ্জালগুলো মুছে ফেলার জন্য গণতান্ত্রিক শক্তি ও গণমাধ্যমকে হাত ধরাধরি করেই এগিয়ে যাওয়া উচিত বলে মনে করেন ইনু।

“বাংলাদেশে আমার জানা মতে, দেখা মতে বিকাশমান গণমাধ্যম, প্রসারমান গণমাধ্যম গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে অনেকটা হাত ধরাধরি করে পাশাপাশি অবস্থান নিয়ে অতীতের জঞ্জালের বিরুদ্ধে একটা শক্ত অবস্থান নিচ্ছে। এটা একটা ভাল খবর এবং সুখবর।”

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর সঞ্চালনায় প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী; এক সময়ের সাড়া জাগানো চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও সাবেক সাংসদ সারাহ বেগম কবরী, সংসদ সদস্য মাহজাবিন খালেদ বেবী ও সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ।

টার্নিং পয়েন্টসের এ সংখ্যার লেখকদের মধ্যে ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং প্রচারাভিযানের বাংলাদেশ সমন্বয়ক খুশি কবির; উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট সেলিমা আহমাদ; বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কন্ট্রিবিউটিং এডিটর আফসান চৌধুরী; এবং বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।