গ্যাসের সন্ধানে পাঁচ বছরে ১০০ কূপ: তৌফিক

গ্যাস সঙ্কট নিরসনে পাঁচ বছরে একশ’ অনুসন্ধান কূপ খনন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 March 2016, 02:23 PM
Updated : 5 March 2016, 02:23 PM

শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) মিলনায়তনে ‘সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি একথা জানান।

এসব কূপ থেকে গ্যাস পাওয়ার আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, “দেশে আবিষ্কৃত গ্যাসের যে মজুদ আছে তা খুব বেশি দিন যাবে না। ঠিক কতো বছর চলবে, তাও নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না।

“তাই নতুন গাস ক্ষেত্র আবিষ্কারের জন্য আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ১০০টি কূপ খননের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গড়ে প্রতিবছর ২০টি কূপ খনন করা হবে।”

জ্বালানির যোগানের ওপর দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নির্ভর করছে মন্তব্য করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “বিকল্প উৎস হিসেবে প্রতিবেশী ভারতের ত্রিপুরা ও মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে গ্যাস আমদানির বিষয়ে আলোচনা চলছে। এছাড়া তরল গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য সরকার অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু করেছে।”

দক্ষিণ কোরিয়ায় গ্যাস নেই উল্লেখ করে তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বলেন, “কিন্তু দেশটি সবকিছু সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করে সফল হয়েছে। আমাদেরও দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সকল বিষয় সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে।”

তিনি জানান, গভীর সমুদ্রেও গ্যাস অনুসন্ধান চলছে। কনোকো ফিলিপসসহ কয়েকটি কোম্পানি গ্যাস অনুসন্ধান করছে। তবে তাতেও গ্যাস পেতে ১০ বছর লেগে যেতে পারে।

সেমিনারে ব্যবসায়ী সমাজের গ্যাস সংযোগ না পাওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, “আপনারা স্পেশাল ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগ করেন। সেসব জায়গায় গ্যাস-বিদ্যুতের যোগান দেওয়া সহজ।”

সরকার গ্যাস-বিদ্যুতে ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “শিল্প খাতেও অব্যাহতভাবে ভর্তুকি রাখতে হবে। বিশ্ব ব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এই ভর্তুকির বিরোধিতা করছে। কিন্তু আমরা তাদের কথা শুনব না।”

জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, এখন দেশের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। মাতারবাড়িতে জাপানের অর্থায়নে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে ২০১৯ সালে উৎপাদন শুরু হবে। প্রকল্পটির ঠিকাদার নিয়োগ হয়ে গেছে। প্রকল্পটির উৎপাদন শুরু হলে দেশে আর বিদ্যুৎ সমস্যা থাকবে না বলে মনে করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ম তামিম বলেন, “দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশে উন্নীত করতে হলে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে।”

তিনি জানান, এ মাইলফলক অর্জনে চারটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- সমন্বিত মূল্যে আমদানিকৃত এলএনজি সরবরাহ, কয়লা আমদানি ও এজন্য বন্দর, রেল এবং স্টক ইয়ার্ড প্রস্তুত, গ্যাসে ভর্তুকি দিয়ে মূল্য নির্ধারণ এবং ক্রয় কার্যক্রমের উন্নয়ন করা।

সভাপতির বক্তব্যে ডিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হোসাইন খালেদ বলেন, “সরকার শিল্প খাতে গ্যাস সংযোগ দিতে পারছে না। কিন্তু গ্যাস সংযোগ ছাড়া আমরা কীভাবে শিল্প স্থাপন করব।”

ব্যবসায়ীরা তিতাস ও বখরাবাদ গ্যাস কোম্পানির কাছে প্রায় ২ হাজার শিল্প-কারখানায় গ্যাস সংযোগের আবেদন করলেও কোনো সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।