একুশে পদক নিলেন ১৬ জন

বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘গৌরবোজ্জল ও প্রশংসনীয়’ অবদানের জন্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, সাহিত্যিক হায়াৎ মামুদ, সাংবাদিক তোয়াব খান ও কণ্ঠশিল্পী শাহীন সামাদসহ ১৬ জন এবার একুশে পদক পেয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Feb 2016, 06:49 AM
Updated : 28 July 2016, 06:13 PM

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মনোনীত ও তাদের প্রতিনিধিদের হাতে পদক তুলে দেন।

পদক বিজয়ী প্রত্যেককে ১৮ ক্যারেট মানের ৩৫ গ্রাম স্বর্ণপদক এবং নগদ দুই লাখ করে টাকা দেওয়া হয়।

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, ডা. সাইদ হায়দার ও ড. জসীম উদ্দিন আহমেদ একুশে পেয়েছেন ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য। ভাষা সংগ্রামী সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া এবার মরণোত্তর এ পুরস্কার পেয়েছেনে।

শিল্পকলায় অভিনেত্রী জাহানারা আহমেদ, শাস্ত্রীয় সংগীতগুরু পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী, সংগীত শিল্পী শাহীন সামাদ, নৃত্যশিল্পী আমানুল হক এবার একুশে পদক পেয়েছেন। এছাড়া চিত্রশিল্পী কাজী আনোয়ার হোসেন মরণোত্তর এ পুরস্কার পান।

মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য এ বছর একুশে পদক দেওয়া হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি মফিদুল হককে। আর সাংবাদিকতায় এ পদক পেয়েছেন দৈনিক জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খান।

গবেষণায় বিশেষ অবদান রাখায় অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ এবং মংছেনচীং মংছিন ২০১৬ সালের একুশে পদক পেয়েছেন।

আর ভাষা ও সাহিত্যে জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ ও হাবীবুল্লাহ সিরাজী এবার একুশে পদক পেয়েছেন।

বিচারপতি কাজী এবাদুল হক

ভাষা সৈনিক কাজী এবাদুল হকের জন্ম ১৯৩৬ সালের ১ জানুয়ারি, ফেনী জেলায়।

হাই কোর্টের বিচারপতি থাকাকালে বাংলা ভাষায় রায় লিখে তিনি আলোড়ন তোলেন। হাই কোর্ট বিভাগে ১০ বছর দায়িত্ব পালনের পর আপিল বিভাগেও তিনি এক বছর বিচারিক দায়িত্ব পালন করেন।

সাবেক এই বিচারপতি বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছেন।

ডা. সাঈদ হায়দার

বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৫২ সালের আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া সাঈদ হায়দার ওই সময় ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্র।

ভাষার জন্য আত্মদানের প্রথম স্মারক- প্রথম শহীদ মিনারের নকশাকারদের একজন তিনি। তার জন্ম ১৯২৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পাবনায়।

পেশায় চিকিৎসক সাঈদ হায়দার ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, চিকিৎসা ও রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য নিয়ে বেশ কয়েকটি বইও লিখেছেন।

সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া

বৃহত্তর বরিশালে ভাষা আন্দোলনের সময় সম্মিলিত ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের যে শাখা হয়েছিল, তার আহ্বায়ক ছিলেন সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া। ভাষা আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় দুই বছর কারাগারে কাটাতে হয়েছিল তাকে।

১৯৫২-৫৩ সালে বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ ছাত্র সংসদের প্রথম নির্বাচিত সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক।

কর্মজীবনে তিনি দৈনিক আজাদ ও দৈনিক ভোরের কাগজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

সৈয়দ গোলাম কিবরিয়ার জন্ম ১৯৩৩ সালের ১৭ জানুয়ারি, মাদারীপুরে।

জসীম উদ্দিন আহমেদ

পরমাণু বিজ্ঞানী জসীম উদ্দিন আহমেদের জন্ম ১৯৩৩ সালের ১ জানুয়ারি কুমিল্লায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে তিনি ভাষা আন্দোলনে অংশ নেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে বিক্ষোভেও তিনি ছিলেন।

১৯৬৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে জসীম উদ্দিন ঢাকা আণবিক শক্তি কমিশনে যোগ দেন। ১৯৭০ সালে তিনি সরকারিভাবে যোগ দেন জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি এজেন্সিতে।

ভিয়েনায় ২৪ বছর দায়িত্ব পালন করে আণবিক বিকিকরণ নিরাপত্তা বিভাগের প্রধানের পদ থেকে ১৯৯৪ সালে অবসরে যান জসীম উদ্দিন।

ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ছাড়াও কবিতা, গবেষণা প্রবন্ধ মিলিয়ে প্রায় তিন ডজন বই লিখেছেন জসীম উদ্দিন। 

জাহানারা আহমেদ

ষাটের দশক থেকে চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় বাংলাদেশে টিভি নাটকের একজন পরিচিত মুখ ছিলেন অভিনয়শিল্পী জাহানারা আহমেদ।

এই দীর্ঘ সময় অসংখ্য জনপ্রিয় নাটক-সিনেমায় তাকে দর্শক দেখেছে। বহু নাটকে মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করায় তার মাতৃরূপটি দর্শকের স্মৃতিতে স্থায়ী হয়ে গেছে।   

‘সকাল সন্ধ্যা’, ‘সংসপ্তক’, ‘রামের সুমতি’, ‘পুরনো বাক্স’, ‘অসমাপ্ত কাহিনী’, ‘কুহেলিকা’, ‘চোখের বালি’, ‘বেলা অবেলা’সহ বহু নাটকে জাহানারা আহমেদের অভিনয় প্রশংসা কুড়িয়েছে।

১৯৩৭ সালে ফরিদপুরে জন্ম নেওয়া এই অভিনেত্রী টেলিভিশনের পাশাপাশি বেতার ও চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন। অভিনয়ের জন্য বিভিন্ন পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।

পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী

রাজশাহী বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের নিয়মিত উচ্চাঙ্গ সংগীত শিল্পী অমরেশ রায় ‘সংগীতাশ্রম’ নামে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা।

সংগীতে তার হাতেখড়ি উপমহাদেশের প্রখ্যাত সুরকার সুধীর লাল চক্রবর্তীর কাছে। পরে হরিহর শুক্লা, নিখিলচন্দ্র সেন ও মানস চক্রবর্তীর কাছে উচ্চাঙ্গ সংগীতের তালিম নেন।

২০০০ সালে দিনাজপুরের প্রাচীনতম সংগীত প্রতিষ্ঠান নবরূপীর পক্ষ থেকে অমরেশ রায় চৌধুরীকে পণ্ডিত উপাধি দেওয়া হয়। তার জন্ম ১৯২৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরে।

শাহীন সামাদ

নজরুল সংগীত শিল্পী শাহীন সামাদ একাত্তরের স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের একজন শব্দ সৈনিক।

১৯৫২ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ায় জন্ম নিলেও তার শৈশব কেটেছে ভারতের জলপাইগুড়িতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সাবেক এই ছাত্রী ছায়ানটে সংগীতের শিক্ষকতাও করেছেন।

‘জাতীয় প্রেসক্লাব পুরস্কার-২০০০’, ‘কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পুরস্কার-২০০৯’, ‘বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনার (কলকাতা) পুরস্কার-১৯৯৯’, ‘বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ পুরস্কার-২০০৯’ সহ বিভিন্ন সম্মাননা পেয়েছেন এই শিল্পী।

আমানুল হক

বাংলাদেশের প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী বুলবুল চৌধুরীর কাছে নাচ শেখা আমানুল হকের নির্দেশনায় স্বাধীন বাংলাদেশে মঞ্চস্থ হয় এ জাতির স্বাধীনতার সংগ্রাম নিয়ে প্রথম নৃত্যনাট্য ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’।

নৃত্যের অঙ্গনে পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ে ‘জ্বলছে আগুন ক্ষেতে খামারে’, ‘হরতাল’, ‘ওরা কাজ করে’ ও ‘দিগন্তে নতুন সূর্য’সহ বিভিন্ন নৃত্যনাট্যে বাঙালির মুক্তির আকাঙ্খার কথা বার বার উঠে এসেছে। 

তাসের দেশ, সোনা ঝরা সন্ধ্যা, আমার স্বদেশ আমার ভালবাসা, বিক্ষুব্ধসহ আরও বহু নৃত্যনাট্য মঞ্চস্থ হয়েছে তার নির্দেশনায়।

১৯৩৮ সালের ১২ অগাস্ট জন্ম নেওয়া আমানুল হকের বাড়ি সিরাজগঞ্জে।

কাজী আনোয়ার হোসেন

১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটি থেকে স্নাতক করা কাজী আনোয়ার হোসেনের হাত দিয়ে বৈচিত্র্যময় বহু চিত্রকর্ম এসেছে।

তার ছবির প্রিয় বিষয় ছিল বাংলাদেশের নৌকা। এ কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই শিল্পীকে আদর করে ‘নৌকা আনোয়ার’ বলে ডাকতেন।

ক্যানভাস হিসেবে দিয়াশলাইয়ের খাপের কাঠের অংশের ওপর নৌকা এবং ব্যতিক্রমভাবে নদীর দৃশ্যও চিত্রায়িত করেছেন আনোয়ার হোসেন। ছবির উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করেছেন গাছের পাতা, ছাল, মাছের কাটা, হাড়, টুকরা কাপড়।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দেশ বিদেশে ২২টির বেশি একক ও যৌথ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে তার ছবি। বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘরসহ দেশের অনেক আর্ট গ্যালারিতে তার ছবি রয়েছে।

২০০৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রংতুলি হাতেই মারা যান কাজী আনোয়ার হোসেন। তার জন্ম ১৯৪১ সালের ১৪ জানুয়ারি গোপালগঞ্জে।

মফিদুল হক

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি মফিদুল হক সাহিত্য প্রকাশ-এর পরিচালক। একাত্তরে ছাত্র ইউনিয়ন ও কমিউনিস্ট পার্টির গেরিলা তৎপরতায় সক্রিয় ছিলেন তিনি।

তিনি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলার্সের সদস্য ও ‘সেন্টার ফর দা স্টাডি অব জেনোসাইড অ্যান্ড জাস্টিস’-এর প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, গণহত্যা ও বিচার বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন তিনি।

মফিদুলের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘মনোজগতে উপনিবেশ: তথ্য-সাম্রাজ্যবাদের ইতিবৃত্ত’, ‘নারীমুক্তির পথিকৃৎ’, ‘দেশভাগ, সাম্প্রদায়িকতা ও সম্প্রীতির সাধনা’, ‘লালনকে কে বাঁচাবে’, ‘আশেক লেনের গৃহ’, ‘প্রতিকৃতি ও প্রয়াতজন কথা’, ‘বঙ্গবন্ধু-বিষয়ক আরো একটি বই’, ‘টুকরো কথার ঝাঁপি: বাঙালির বিপ্লব-সাধনা’।

প্রবন্ধসাহিত্যের জন্য ২০১৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান মফিদুল হক।

তোয়াব খান

বর্ষীয়ান সাংবাদিক তোয়াব খান বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সেক্রেটারি ছিলেন। পরে রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ এবং প্রথম অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদের প্রেস সচিবের দায়িত্বেও দেখা গেছে তাকে।

বাংলাদেশের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ও পিআইবির মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেছেন ১৯৫৫ সালে সাংবাদিকতায় আসা তোয়াব খান।

১৯৬১ সালে দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক হওয়ার পর ১৯৬৪ সালে তোয়াব খান যোগ দেন দৈনিক পাকিস্তানে।

মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক তোয়াব খানের লেখনী ও উপস্থাপনায় নিয়মিত প্রচারিত হতো 'পিন্ডির প্রলাপ'। ১৯৭২ সালে তিনি দৈনিক বাংলার সম্পাদক হন।

তিনি যখন দৈনিক জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদকের দায়িত্ব নেন, তখনই বাংলাদেশে প্রথম চাররঙা সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়।

তোয়াব খানের জন্ম ১৯৩৪ সালের ২৪ এপ্রিল, সাতক্ষীরায়।

এ বি এম আবদুল্লাহ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ চিকিৎসা ও শিক্ষকতার পাশাপাশি লেখালেখি করেন।

ওষুধের ভুল ব্যবহার, অপচিকিৎসার কুফল, চিকিৎসক এবং রোগীর সম্পর্ক নিয়ে সংবাদপত্রে নিয়মিত নিবন্ধ লেখেন তিনি।

১৯৫৪ সালের ১ জানুয়ারি জামালপুরে জন্ম নেওয়া আবদুল্লা স্বাধীনতার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রথম ব্যাচের ছাত্র। ১৯৯২ সালে লন্ডনের রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ান থেকে এমআরসিপি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

চিকিৎসা শাস্ত্র নিয়ে তার লেখা পাঁচটি বইয়ের মধ্যে একটি ২০১৩ সালে ইউজিসি পুরস্কার পায়।

মংছেনচীং মংছিন

পেশায় সাংবাদিক মংছেনচীং মংছিন একজন প্রাবন্ধিক ও গবেষক। বাংলাদেশের আদিবাসী সম্প্রদায় এবং তাদের উৎসব ও সংস্কৃতি নিয়ে কয়েকটি গবেষণাগ্রন্থসহ তার বইয়ের সংখ্যা নয়টি।

১৯৬১ সালের ১৬ জুলাই কক্সবাজারে জন্ম নেওয়া মংছেনচীং মংছিনের স্ত্রী শোভা ত্রিপুরাও লেখালেখি করেন।

জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত

কুষ্টিয়ায় জন্ম হলেও কথা সাহিত্যিক জ্যোতিপ্রকাশ দত্তের শৈশব, কৈশোর কেটেছে পাবনা ও বগুড়ায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নেওয়ার পর তিনি সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে ডিপ্লোমা করেন।

১৯৬৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গণযোগাযোগে মাস্টার্স ও সাংবাদিকতায় পিএইচডি করা জ্যোতিপ্রকাশ বাংলা একাডেমি ও বাংলাদেশ অবজারভারে কাজ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা ও গণসংযোগ পেশাতেও ছিলেন তিনি।

এনজিও প্রশিকার তথ্য পরিচালক জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত ঢাকার ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগে কাজ করছেন খণ্ডকালীন অধ্যাপক হিসেবে।

তার জন্ম ১৯৩৭ সালের ৮ জানুয়ারি।

হায়াৎ মামুদ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বদ্যিালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সাবেক এই অধ্যাপকের জন্ম ১৯৩৯ সালের ২ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়।

১৯৫০ সালের ঢাকায় আসা হায়াৎ মামুদ ১৯৭৮ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়ে ২০০৪ সালে অবসরে যান।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মানববিদ্যা ও সমাজবিজ্ঞান ইন্সটিটিউটেও খণ্ডকালীন শিক্ষকতায় যুক্ত ছিলেন তিনি।

শিশুসাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত এই লেখক রুশ ফেডারেশনের পুশকিন পুরস্কারও পেয়েছেন।

সৃজনশীল রচনা, অনুবাদ, গবেষণা, শিশুসাহিত্য, জীবনীগ্রন্থ, সাহিত্য-সমালোচনা মিলিয়ে তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ষাটের কাছাকাছি।

হাবীবুল্লাহ সিরাজী

জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি হাবীবুল্লাহ সিরাজী বাংলা একাডেমির একজন ফেলো।

যন্ত্রকৌশলে স্নাতক এই লেখকের ২৭টি কাব্য, দুইটি উপন্যাস এবং সাতটি শিশুতোষ ছড়া ও কবিতার বই রয়েছে।

১৯৯১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং ১৯৮৯ সালে আলাওল সাহিত্য পুরস্কার পাওয়া এই সাহিত্যিকের জন্ম ১৯৪৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর, ফরিদপুরে।