নিজেদের বিভক্তিকে দায়ী করলেন সাংবাদিক নেতা

সাগর-রুনিসহ বিভিন্ন সাংবাদিক খুনের বিচার না হওয়ার জন্য নিজেদের বিভেদকে দায়ী করেছেন একজন সাংবাদিক ইউনিয়ন নেতা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Feb 2016, 12:48 PM
Updated : 14 Feb 2016, 12:56 PM

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের মহাসচিব ওমর ফারুক বলেছেন, “এক সময় সাংবাদিকদের কোনো প্রকার ক্ষতি করে কেউ পার পেত না, কারণ সাংবাদিকদের মধ্যে একতা ছিল।

“এখন আমরা বহু ভাগে বিভক্ত, তাই পার পেয়ে যায়। সকল খুনের বিচার হয়, কিন্তু দেশে সাংবাদিক খুনের বিচার হয় না। নিজেদের মধ্যে এই বিভক্তির কারণে আমরা বিচার আদায় করতে পারছি না।”

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি খুনের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় একথা বলেন বিএফইউজের আওয়ামী লীগ সমর্থিত অংশের এই নেতা।

ঐক্যবদ্ধ সাংবাদিক ইউনিয়ন বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলনে সক্রিয় ছিল। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে বিজয়ের পর ইউনিয়নে বিভেদ সৃষ্টি হয়; এক অংশে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা, অন্য অংশে বিএনপি সমর্থকরা।

২০১২ সালে সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি খুনের পর বিভক্ত ইউনিয়নগুলো একসঙ্গে কর্মসূচি পালন শুরু করলেও কিছু দিন পর আর তা দেখা যায়নি।

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের চার বছর পেরুলেও তদন্ত এখনও শেষ করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিচার নিয়ে হতাশায় রয়েছে নিহতদের পরিবার।

নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় সব সাংবাদিকদের এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওমর ফারুক বলেন, “স্বাধীন বাংলাদেশে সাংবাদিক হত্যার বিচার হয় না, তা হতে পারে না। আমরা এক হতে না পারলে সামনে আরও বিপদ আছে।”

‘চাকরি ও জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় সাংবাদিকরা : অনিশ্চয়তায় সাংবাদিকদের পরিবার’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে দ্য ইকোনোমি টুডে ডটনিউজ।

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধে অনলাইন সংবাদ মাধ্যমটির প্রধান সম্পাদক রহমান মুস্তাফিজ বাংলাদেশে সাংবাদিকদের উপর নির্যাতনের ঘটনাগুলো তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, গত দেড় দশকে বাংলাদেশে সাংবাদিক নিহত হয়েছেন ২৩ জন। এর মধ্যে ২০০১-০১৬ সালে নিহত হন ১৪ জন, তারপর থেকে এই পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৯ জন। এই দেড় দশকে আহত হন ৫৬১ জন সাংবাদিক।

খুন ছাড়াও চাকরি নিয়ে সাংবাদিকদের পরিবারের ভোগান্তির চিত্রও তুলে ধরেন রহমান মুস্তাফিজ।

“যখন তখন চাকরিচ্যুতির আতঙ্কে সারাক্ষণই থাকতে হয় সংবাদকর্মীদের। নিয়মিত বেতন না পাওয়ার সমস্যার পাশাপাশি বেতন চাইতে গিয়ে চাকরি হারানোর ঘটনাও ঘটে নিয়মিত।”

শঙ্কা মাথায় নিয়ে শতভাগ মনযোগ দিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে বলে রহমান মুস্তাফিজের মত। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, এই অনিশ্চয়তা সাংবাদিকদের নৈতিকতা বিসর্জনের পথেও ঠেলে দিতে পারে।

বিষয়গুলো গণমাধ্যমের মালিক পক্ষের পাশাপাশি রাষ্ট্রের কর্ণধারদের বিবেচনার আহ্বানও জানান তিনি।