শীতের জড়তা ভেঙে কৃষ্ণচূড়া-পলাশের রাঙা হাসিতে বাতাসের ফিসফাসে বাজে রবি-গানের সুর- আজি খুলিয়ো হৃদয়দল খুলিয়ো/আজি ভুলিয়ো আপন পর ভুলিয়ো।
বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী, শনিবার ফাল্গুনের প্রথম দিন। নবযৌবনের ঋতুকে বরণ করে নিতে ফাগুনের প্রথম প্রভাতেই শুরু হয় উৎসব।
রাজধানীর শাহবাগ, চারুকলা, টিএসসি, পাবলিক লাইব্রেরি আর উদ্যানে উদ্যানে নর-নারীর বাসন্তিসাজ মনে করিয়ে দিল- ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক, আজ বসন্ত।
ফাগুনের প্রথম প্রহর সকাল ৭টায় ‘এসো প্রাণের উৎসবে’ আহ্বানে যন্ত্রসঙ্গীতের মূর্ছনায় বসন্তকে বরণ করে নেওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলার আয়োজনে।
বসন্তকে অভ্যর্থনা জানাতে আসা তরুণ-তরুণীদের সাজাতে চারুকলার বাইরের ফুলের দোকানিরা ছিলেন প্রস্তুত। টিএসটি মোড় পর্যন্ত রাস্তার পাশে বসা ফুলের দোকানে ভিড় ছিল উপচে পড়া।
বাসন্তি সাজ নেওয়া তরুণী জান্নাতুল ইয়াসমিন যেমন বললেন, “প্রথমেই হাসি দিয়ে বলেন আজ পয়লা ফাল্গুন; ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। এইদিনে বসন্তে ফুল দিয়ে সাজ ভালোই লাগে। তাই ফুল কিনছি। আরও ভালো করে সাজবো, একদিনেই তো।’’
শুধু কি তরুণ-তরুণী? আনন্দে ভেসেছেন সব বয়সের মানুষই। অনেকে এসেছেন পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে।
দেশের খ্যাতিমান শিল্পীদের পরিবেশনার পাশাপাশি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা পরিবেশন করে বসন্তের গান, আবৃত্তি, নাচ।
সকাল ৯টার দিকে বসন্ত কথন পর্বে বকুলতলার উৎসব মঞ্চে আসেন দুই বাংলার অতিথি শিল্পীরা। এর পরে ছোট শিশুরা অতিথি এবং বটতলায় উপস্থিত দর্শকদের প্রীতি বন্ধনি বিনিময় হিসেবে ফুলের রাঁখি পরিয়ে দেয়। ভালবাসা, সম্প্রীতির বন্ধনের পাশাপাশি চলে আবির বিনিময়ও।
সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পর সকাল সোয়া ১০টার দিকে চারুকলার বকুতলা থেকে একটি বর্ণিল শোভাযাত্রা বের হয়।