বাংলাদেশের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে মত দেবে না ইইউ

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পদ্ধতি নিয়ে কোনো সুপারিশ করবে না ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Feb 2016, 01:27 PM
Updated : 12 Feb 2016, 03:59 PM

শুক্রবার তিন দিনের সফর শেষে ঢাকা ছাড়ার আগে সাংবাদিক সম্মেলনে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এ অবস্থান তুলে ধরেন দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক প্রতিনিধি দলের প্রধান জিন লাম্বার্ট।

‘বাংলাদেশের নির্বাচন অনুষ্ঠানের পদ্ধতি’ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা কোনো সুপারিশ করব না। এটা বাংলাদেশের জনগণের ঠিক করার বিষয়।

তবে এ বিষয়ে যতো দ্রুত আলোচনা হবে, ততোটাই উত্তম সমাধান মিলবে বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশে ব্লগার ও অন্যান্য মুক্ত চিন্তার মানুষ যাতে নিজের মতপ্রকাশকে ‘নিরাপদ’ ও ‘মূল্যবান’ মনে করেন, এমন পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান লাম্বার্ট।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি তুলে বিএনপির বর্জন করা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দল পাঠায়নি ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

ঢাকায় ইইউ রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদন বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের অংশ হিসেবে’ প্রতিনিধি দলটি সফরে আসে।

লাম্বার্টের নেতৃত্বে চার সদস্যের দলে ব্রিটেনের লেবার পার্টির নেতা ও প্রতিনিধি দলের সহ-প্রধান রিচার্ড হোয়িট, স্লোভাকিয়ার ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেট পার্টির নেতা আইভান স্তেফানেস ও যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ পার্টির বাণিজ্য বিষয়ক কমিটির সদস্য সাজ্জাদ করিম ছিলেন।

সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসনসহ রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে দেখা করে প্রতিনিধি দল।

এছাড়াও তারা ব্যবসায়ী নেতা, সুশীল সমাজ ও এনজিওর সদস্যদের সঙ্গে কথা দেখা করেন।

লাম্বার্ট বলেন, এসব বৈঠকে তারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মানবাধিকার, বাণিজ্য, তৈরি পোশাক শিল্প ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের সময় নির্বাচনের বিষয় তিনি তুলেননি উল্লেখ করে লাম্বার্ট বলেন, বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে তারা ‘নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী’ নির্বাচন কমিশনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করছেন।

তিনি বলেন, সরকার পরিবর্তনের সময় একটি অন্তর্বতীকালীন প্রক্রিয়া এমন বিষয় যা ‘নির্বাচনের যতো আগে সম্ভব আলোচনা করতে হবে’।

রাজনীতিবিদরা ছাড়াও এবিষয়ে যাদের আগ্রহ আছে বা ধারণা আছে তারাও আলোচনার অংশ হতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে প্রতিনিধি দল ব্লগারদের হত্যার বিষয়টি তুলে ধরের তদন্ত যাতে ব্যাপকভাবে চলমান থাকে সেই প্রত্যাশার কথা বলেছে।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে লাম্বার্ট বলেন, “আমরা অনেক সমস্যার কথা জানি। তবে নিজেদের গণতান্ত্রিক পদ্ধতি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী থাকা জনগণের জন্য জরুরি।”

সাংবাদিক সম্মেলনের পর সরবরাহ করা এক লিখিত বিবৃতিতে তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, “দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তাদের গুরুতর উদ্বেগ রয়েছে।”

বিবৃতিতে ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচন যাতে ‘অবাধ ও সুষ্ঠ’ হয় সে বিষয়ে প্রত্যাশার কথাও বলা হয়েছে।

আন্তর্জাতিকভাবে উগ্রপন্থার কারণ খুঁজে বের করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ‘আরও যৌথ উদ্যোগে’ কাজ করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানিয়েছে প্রতিনিধি দল।