ষড়যন্ত্র ঠেকাতে সজাগ থাকতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা পুনরায় প্রকাশ করে তা মোকাবেলায় সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Feb 2016, 01:19 PM
Updated : 11 Feb 2016, 02:42 PM

তিনি বলেছেন, “অনেক সময় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক ধরনের ষড়যন্ত্র থাকে। বিশেষ করে দেশ যখন উন্নয়নের পথে এগিয়ে যায়, তখন অনেকের আমাদের দেশের প্রতি দৃষ্টি পড়ে।

“দেশি-বিদেশি নানা চক্রান্ত চলতে পারে। এখানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জনগণের সচেতনতা।”

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩৬তম জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার গাজীপুরের শফিপুরে আনসার একাডেমিতে বাহিনীর দরবারে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও বলেছিলেন, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তৎপরতা চালানো হচ্ছে।

যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া এবং ঢাকায় দেশটির কূটনীতিকদের ‘জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার’ দিকে ইঙ্গিত করে একথা বলেন তিনি।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কেন মানুষ জঙ্গি হবে? কেন মানুষ সন্ত্রাসী হবে?

“ইসলাম শান্তির ধর্ম, আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। আত্মঘাতী হামলা, মানুষ হত্যা- এটা তো কখনও ধর্ম সমর্থন দেয়নি। মানুষ কেন সে পথে যাবে?”

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে উগ্রপন্থিদের তৎপরতার বিষয়টি তুলে ধরে বাংলাদেশ সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত বাহিনী হিসেবে আনসার ও ভিডিপির গুরুত্বও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

দরবারে প্রশ্নোত্তর পর্বের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী আনসার সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, “মন খুলে বলতে পারেন। আমাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখবেন না। আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। জাতির পিতার কন্যা। সে হিসাবে দেখবেন।”

এই বাহিনীর উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “আপনাদের উন্নয়নে আমাদের সরকার যত কাজ করেছে, আর কেউ করেনি।”

“ব্যাটালিয়ন আনসার হয়ে গেছে। আপনাদের আধুনিক প্রশিক্ষণের জন্য যা করার করব,” আরও করার আশ্বাসও দেন তিনি।

আনসারকে আধুনিক অস্ত্র দেওয়া, আইন ও বিধি বিধানের ঘাটতি পূরণেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি। ব্যাটালিয়ন আনসারদের চাকরি স্থায়ীকরণের মেয়াদ শূন্য বছরে আনতে আইন সংশোধন প্রক্রিয়াধীন বলেও তিনি জানান।

আনসার-ভিডিপি একাডেমিতে হাসপাতাল স্থাপনসহ সারাদেশে বেশকিছু বহুতল এস এম ব্যারাক নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, প্রায় ১৭২ কোটি টাকায় ১৫টি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে আধুনিক কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।

গ্রামীণ সমবায়ের সঙ্গে আনসারকে সম্পৃক্ত করার পরামর্শও দেন সরকার প্রধান।

খেলাধুলায় আনসার সদস্যদের কৃতিত্বের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক কমপিটিশন হচ্ছে, আনসার গোল্ড মেডেল নিয়ে আসছে। সেটা তো গর্বের বিষয়। পরপর চারবার বাংলাদেশ গেমসে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। কেউ পারেনি।”

আনসার একাডেমিতে ক্রীড়া অবকাঠামো উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীকে দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, নারীর অগ্রযাত্রা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কর্মী বাহিনী হিসেবে প্রথম সারিতে দেখতে চাই।”