সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় সমালোচনার মুখে থাকা পুলিশ বাহিনীর এই সদস্যের বিরুদ্ধে যুবদলের এক নেতার স্ত্রী ওই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির অভিযোগ তুললে তার বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ হয়।
ওই ছাত্রী মামলা করার পর আদালতের আদেশ পেয়ে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শেখ হাফিজুর রহমান তদন্ত শেষে ঢাকার ৪ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বুধবার তার প্রতিবেদন জমা দেন।
প্রতিবেদনে তিনি এসআই রতন হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন বলে আদালতের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
ওই আদালতের কর্মকর্তা সোহেল আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হাকিম ইমদাদুল হক তদন্তে বাদী এবং অন্য চারজনের সাক্ষ্য নিয়েছেন। এর মধ্যে দুজন সাক্ষী নিরপেক্ষ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকার ৪ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি ফোরকান মিয়া জানান, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি এ বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নেওয়ার দিন রেখেছেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সালেহ উদ্দিন।
গত ৩১ জানুয়ারি মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদের কাছে একটি দোকানে নিয়ে এসআই রতন হালদার বেসরকারি আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ ওঠার পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
রতন হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে ঢাকা মহানগর পুলিশ এবং পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের পক্ষ থেকেও দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
ঘটনার পরদিন ওই ছাত্রী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। তখন আদালত অভিযোগটি গ্রহণ করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয়।
ওই তরুণীর অভিযোগ, ৩১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রিকশায় বাসায় ফেরার সময় শিয়া মসজিদের কাছে তাকে আটকান এসআই রতন। এরপর তাকে একটি দোকানের ভিতরে নিয়ে সবাইকে বের করে দিয়ে স্বামীর খোঁজ জানতে তাকে তল্লাশি করা হয়।
“আমি বারবার মহিলা পুলিশ বা আশপাশের কোনো মহিলার সামনে অথবা থানায় নিয়ে তল্লাশি করার অনুরোধ জানালেও সে তা করেনি। এ সময় অশ্লীল কথা-বার্তা বলা ছাড়াও উনি আমাকে হোটেলের পতিতা এবং ইয়াবা ব্যবসায়ী বানানোর চেষ্টা করেন,” সাংবাদিকদের বলেন ওই তরুণী।
ওই তরুণীর স্বামী যুবদল নেতা নাশকতার একটি মামলার আসামি। তবে তিনি জামিনে রয়েছেন বলে এসআই রতন সেদিনই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে স্বীকার করেছিলেন।
তবে যৌন হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেছিলেন, “হঠাৎ দেখা হওয়ায় রিকশা থামিয়ে তার স্বামীর খোঁজ জানতে চেয়েছি, এর চেয়ে বেশি কিছু না।”
স্বামীর মামলার কারণে ওই তরুণী আগে একবার থানায় যাওয়ার পর পরিচয় হয়েছিল বলে জানান এই এসআই।