বিচারপতি সিনহা ঠিক পথে: সাবেক প্রধান বিচারপতি মাহমুদুল আমিন

বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর সমালোচনার মধ্যে থাকা প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা সমর্থন পেয়েছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি মাহমুদুল আমিন চৌধুরীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2016, 08:01 PM
Updated : 9 Feb 2016, 08:01 PM

‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও বিরাজমান পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় মঙ্গলবার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি প্রধান বিচারপতির কাজে সহায়তা করতে আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানান।

বিচারপতি মাহমুদুল আমিন আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, “এখন প্রধান বিচারপতি জুডিশিয়ারিটা সঠিক রাস্তায় নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আপনাদের উচিত তাকে সাপোর্ট করা।

“আপনারা এখন এক হন, দেশটাকে রক্ষা করেন। রাজনীতি বাইরে করেন, অসুবিধা নাই। এখনও সময় আছে আপনারা জুডিশিয়ারিকে বাঁচাতে আন্দোলন করেন। আর বর্তমান প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগকে সঠিক রাস্তায় নেওয়ার যে চেষ্টা করছেন, তাকে আপনারা সমর্থন করেন।”

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সুপ্রিম কোর্ট শাখা এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেছেন, “আপনারা রাজনীতি করুন, মন্ত্রিত্ব করুন। তবে দালালি করবেন না। বিচার বিভাগ বাঁচাতে দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থাকুন।”

অবসরের পর রায় লেখা ‘সংবিধান পরিপন্থি’ বলে প্রধান বিচারপতি মত প্রকাশের পর তার অবস্থান নিয়ে সমালোচনামুখর সদ্য বিদায়ী বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী।

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা

সাবেক প্রধান বিচারপতি মাহমুদুল আমিন বলেন, “আমাদের সময়ে ছিল হাই কোর্ট বিভাগে এজলাসে বসে বিচারকরা রায় ঘোষণা করবেন, আইনজীবীরা নোট নেবেন। কোনো বিষয় ভুল হলে আইনজীবীরা তা বলবেন।

“আর আপিল বিভাগ শুধু আদেশ অংশ (ভারডিক্ট) ঘোষণা করবেন। পরে পূর্ণাঙ্গ রায় দেবেন। এটা যৌক্তিক সময়ের মধ্যে হতে হবে। তাই আমি মনে করি না যে অবসরের পর রায় লেখা বেআইনি। তবে অবসরের পর রায় লিখতে হলে কোনো ভাবেই আদেশ অংশ পরিবর্তন করা যাবে না।”

“বছর খানেক পরে যদি রাতের অন্ধকারে আমি রায়ের আদেশের অংশবিশেষ পরিবর্তন করে ফেলি, তবে তা হবে ফৌজদারি অপরাধ।.. আদেশের অংশ পরিবর্তন করতে হলে রিভিউ করতে হবে। এ কারণেই হয়ত প্রধান বিচারপতি বলেছেন অবসরের পর লেখা বেআইনি।”

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীর তৎপরতার প্রসঙ্গে সাবেক প্রধান বিচারপতি  বলেন, “উনি কি মনে করছেন (বিচারপতি চৌধুরী) এটা বললে উনার মর্যাদা ও সুনাম বাড়বে? না।”

অবসরের পর রায় লেখা নিয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়নের করা উচিত বলে মত দেন বিচারপতি মাহমুদুল আমিন।

অবসরের পর রায় লেখা নিয়ে বর্তমান প্রধান বিচারপতি বাণী নিয়ে সংসদে আলোচনার প্রসঙ্গও টানেন তিনি।

“যখন উনি বলল বেআইনি, তখন তো এটা নিয়ে সংসদে আলোচনা করার কিছু ছিল না। আমাদের সংসদের সদস্যরা বা মন্ত্রী, এটা নিয়ে এত গাত্রদাহ কেন ?..উনাদের নজেল অব ল’, নলেজ অব ইথিকস উনাদের নিচে, এটা প্রমাণ করে দিলেন। বক্তৃতা দেওয়ার সময় তো মনে থাকে না কী বলছেন।”