বেসিক ব্যাংক: তদন্ত প্রতিবেদন চায় হাই কোর্ট

রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের করা তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলেছে হাই কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2016, 08:43 AM
Updated : 9 Feb 2016, 09:59 AM

এবিষয়ে এক রিট আবেদনের ওপর দেওয়া রুল শুনানির সময় মঙ্গলবার বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি মাহমুদুল হকের বেঞ্চ এ আদেশ দেয় বলে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন।

তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে বেসিক ব্যাংককে একসপ্তাহ এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চার সপ্তাহ সময় দিয়েছে হাই কোর্ট।

ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের কর্মকাণ্ড নিয়ে চালানো অনুসন্ধান প্রতিবেদনও একই সময়ের মধ্যে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

আর্থিক কেলেঙ্কারি, নিয়োগ, পদোন্নতিতে দুর্নীতি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, মহা হিসাব নিরীক্ষকের (সিএজি) কার্যালয় ও বেসিক ব্যাংকের প্রতিবেদন নিয়ে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর ও পরিচালনা পর্ষদকে বাদ দিয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরে দুদকের করা মামলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নোয়াখালীর হারুনুর রশীদ এক রিট আবেদন করেন।

রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৬ নভেম্বর রুল দেয় হাই কোর্ট।

রুলে প্রতিবেদনে অভিযোগের মুখে থাকা মূখ্য অপরাধীদের বাদ দিয়ে ৫৬টি মামলা করা কেন বে-আইনি ঘোষণা হবে না এবং ন্যায় বিচারের স্বার্থে দুদককে বেসিক ব্যংকের ঋণ কেলেঙ্কারি বিষয়ে অধিক তদন্তের নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে তা জানতে চাওয়া হয়।

দুদক চেয়ারম্যান, অর্থসচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়, যার ওপর শুনানি শেষে মঙ্গলবার আদেশ আসে।

শুনানিতে রিট আবেদনকারী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও ব্যারিস্টার মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ; দুদকের পক্ষে আইনজীবী শফিুকল ইসলাম।

আদালতের আহ্বানে দুদকের কৌসুঁলি খুরশীদ আলম খানও বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে বেসিক ব্যাংকের গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখা থেকে মোট সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে।

ব্যাংকের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদ নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বিধিবহির্ভূতভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ঋণ অনুমোদন করাতেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি সঙ্কটে পড়ে বলে অভিযোগ ওঠে।  

চার বছর অনুসন্ধানের পর ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির ঋণ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে ১৫৬ জনকে আসামি করে মোট ৫৬টি মামলা করে দুদক।

মামলায় বেসিক ব্যাংকের ২৬ কর্মকর্তাকে আসামি করা হলেও ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু ও পরিচালনা পর্ষদের কোনো সদস্যকে রাখা হয়নি।

ব্যাংক কর্মকর্তার বাইরে অপর আসামিরা ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত।

বেসিক ব্যাংক বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে ঋণ কেলেঙ্কারিতে শেখ আব্দুল হাইয়ের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল বলে গণমাধ্যমে খবর আসে।

তবে ‘পর্যাপ্ত প্রমাণ না পাওয়ায়’ এসব মামলায় আসামির তালিকায় পরিচালনা পর্ষদের কোনো সদস্যের নাম দেয়নি দুদক।