ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাই কমিশনারকে তলব

সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যে ঢাকায় পাকিস্তানের হাই কমিশনারকে তলবের পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে ইসলামাবাদ; তলব করা হয়েছে দেশটিতে বাংলাদেশের হাই কমিশনারকে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2016, 03:51 PM
Updated : 8 Feb 2016, 04:37 PM

ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সোহরাব হোসেনকে সোমবার তলব করা হয় বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “আজ বিকালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বাংলাদেশের হাই কমিশনারকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন।”

ঢাকায় পাকিস্তানের হাই কমিশনার সুজা আলমকে গত ২ ফেব্রুয়ারি তলব করেছিল বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তার এক সপ্তাহের মধ্যে পাল্টা পদক্ষেপ নিল ইসলামাবাদ।

এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার গুলশানে সন্দেহজনক গতিবিধির জন্য পাকিস্তান দূতাবাসের এক কর্মকর্তাকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করার পর ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাই কমিশনের এক কর্মকর্তাকেও তুলে নেওয়া হয়।

পাকিস্তানের দূতাবাস কর্মকর্তার সঙ্গে থাকা অবৈধ ভারতীয় রুপি জব্দ করে ছেড়ে দেওয়ার পর ইসলামাবাদে বাংলাদেশি কর্মকর্তাও ছাড়া পান।

ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতেই পরদিন সুজা আলমকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে নেওয়া হয়েছিল। হাই কমিশনের কর্মীকে ‘আটকে রাখার প্রতিবাদ জানিয়ে’ একটি চিঠিও তার হাতে দেওয়া হয়।  

২৫ বছরের শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটাতে সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ আলাদা হওয়ার পর সম্প্রতি একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে ইসলামাবাদের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্কে টানাপড়েন সৃষ্টি হয়।

মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া দল আওয়ামী লীগের শাসনকালে একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর হয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচার শুরুর পর থেকে ইসলামাবাদ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছে।

সোহরাব হোসেন

এর মধ্যে ঢাকায় পাকিস্তানি দূতাবাসের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পাওয়ার পর তা এই টানাপড়েনে নতুন মাত্রা দেয়।

জঙ্গি অর্থায়নে জড়িত সন্দেহে গত বছরের জানুয়ারিতে পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তা মাযহার খানকে বাংলাদেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এরপর পাকিস্তান হাই কমিশনের কূটনীতিক ফারিনা আরশাদের বিরুদ্ধেও জঙ্গি ‘যোগসাজশের’ অভিযোগ উঠলে গত বছরের শেষ দিকে তাকে প্রত্যাহার করা হয়।

এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও বাংলাদেশের এক কূটনীতিককে সে দেশ থেকে ফেরত নেওয়ার অনুরোধ জানায়।

যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর গত কয়েক বছর ধরে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য চলছে। তার মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের দাবিও বাংলাদেশে জোরালভাবে উঠছে।

সংসদে এই দাবি উঠার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বলেন, সম্পর্ক ছিন্ন করার মতো পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি।

অন্যদিকে ঢাকায় পাকিস্তানের দূত সুজা আলম বলেন, সার্কভুক্ত দুই দেশের সম্পর্কের উত্তরোত্তর উন্নতি ঘটবে বলে তিনি আশাবাদী।