সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে মা সালেহা বেগম বলেন, “তপুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে একাধিকবার ষড়যন্ত্র হয়। ষড়যন্ত্রকারীরা কোনোভাবে সফল হতে না পেরে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে হত্যার উদ্দেশ্যে তপুকে গুম করার ষড়যন্ত্র করে।”
তপুর তিন বোন রওশন আরা আক্তার, শামীম আরা আক্তার, সুরাইয়া আক্তার, ভাই মইনুল হোসেন অপু, নানি নজিবেননেসাও সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন।
গত ২৬ জানুয়ারি রাত ১১টায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ১১ নম্বর রোডের, ডি ব্লকের ৩৫৩ নম্বর বাড়ি এ-৩ নম্বর ফ্লাট থেকে তপুকে তিনজন লোক তুলে নেয়। তারা ডিবির পরিচয় দিয়েছিল বলে দাবি তপুর পরিবারের।
এরপর পুলিশসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেও ক্ষমতাসীন দল সমর্থক এই ছাত্রনেতার সন্ধান আর পায়নি তার পরিবার।
ছেলেকে অপহরণের অভিযোগ এনে সালেহা গত ১ ফেব্রুয়ারি ভাটারা থানায় একটি মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় ইমন, তাজুল, শিবলু, তানিম, রইস উদ্দিন রইস, অর্নব, জুয়েল ও নিশি নামে আটজনকে।
বন্ধু তাজুলের পরিচিত অর্ণবের বাড়ি থেকেই তপুকে তুলে নেওয়া হয়েছিল বলে পরিবারের দাবি। অর্ণব গুলশান থানা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি।
এজাহারে বলা হয়, গত ২৬ জানুয়ারি তপু চাঁদপুর থেকে ফিরে তাজুলের সঙ্গে অর্ণবের বাসায় গিয়েছিল। রাত ১০টার দিকে তাজুল বেরিয়ে আসার পর তিনজন লোক ডিবি পরিচয়ে ওই বাসা থেকে তপুকে তুলে নেয়।
ইমনই এই খবর তপুর ভাই মইনুলকে জানিয়েছিলেন বলে বলা হয় এজাহারে।
তপুর পরিবারের সংবাদ সম্মেলনের পর যোগাযোগ করা হলে অর্ণব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই রাতে আমি বাসায়ই ছিলাম না, চাঁদপুর হাজীগঞ্জ ছিলাম। তপুর সঙ্গে সরাসরি কোনো সম্পর্কও আমার ছিল না।”
তাজুলকে নিজের বন্ধু দাবি করে তিনি বলেন, “নিশি নামের মেয়েটি না কি বলছে, তার চোখের সামনেই তপুকে গোয়েন্দা পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমার বাসায় কোনো নারী এসেছে বা পুলিশের কেউ এসেছে, তা বাড়ির কেয়ারটেকার ও দারোয়ান কেউই দেখল না।”
তপুর বোন সুরাইয়া সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত মাসেও রামপুরার একটি মামলায় তপুকে খুঁজতে তার বাসায় এসেছিল গোয়েন্দা পুলিশ। তারা এখন বাসায় আসে না। তপুর কোনো খোঁজ করে না।
“আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি, তপুকে গুম করার উদ্দেশ্যে তুলে নেওয়া হয়েছে।”
এই বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের গণমাধ্যম শাখার উপ মিশনার শেখ মারুফ হাসান সরদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তপুকে গ্রেপ্তারের কোনো খবর জানা নেই।”
ডিএমপির গুলশান বিভাগের সহকারী কমিশনার রফিকুল ইসলামও বলেন, তারা তপুকে গ্রেপ্তার করেননি।
ভাটারা থানার ওসি নুরুল মোত্তাকিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তপুর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।”
তপুর পরিবারের মামলার কোনো আসামিও গ্রেপ্তার হয়নি।
ওসি বলেন, “তাদের সঙ্গে তপুর কী ধরনের সম্পর্ক ছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”