স্কুলে ফি বৃদ্ধির ‘যৌক্তিক’ কারণ পেলে পুনর্বিবেচনা: শিক্ষামন্ত্রী

‘যৌক্তিক’ কারণ দেখাতে পারলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বেতন বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

নিজস্ব প্রতিদেকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2016, 12:32 PM
Updated : 8 Feb 2016, 12:32 PM

সচিবালয়ে সোমবার এক সভায় তিনি বলেন, অতিরিক্ত অর্থ আদায় বে-আইনি, নীতিমালার লঙ্ঘন; এটা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

“কোনো স্কুল যদি ফি বাড়ানোর যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারে তাহলে আমাদের জানাবেন। আমরা বৈঠক করে পুনর্বিবেচনা (ফি) করতে পারব।”

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন মন্ত্রণালয় নিজ থেকে পর্যালোচনা করবে জানিয়ে নাহিদ বলেন, “এর পরও যদি কেউ তাদের যুক্তি আমাদের জানায় আমরা তা বিবেচনায় নেব।

“কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা না হয়েছে ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই এই সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য।”

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড (মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি) প্রবিধানমালা অনুযায়ী, সরকারের নির্দেশনা সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্যদ বেতন ও ফি’র হার নির্ধারণ করতে পারে।

তবে এই নির্দেশনা ছাড়াই চলতি বছরের শুরুতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৭০ থেকে ১০০ শতাংশ ফি বাড়ায়, যার প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন অভিভাবকরা।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় আদায় করা বাড়তি ফি ফেরতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাত কার্যদিবস সময় বেঁধে দেয়।

অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপিরা থাকায় ওইসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “যে যে অবস্থায়ই থাকেন না কেন, যতই ক্ষমতাসীন ব্যক্তিই হোন না কেন আইনের ঊর্ধ্বে কেউ না। আমরা আশা করব সবাই নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হবেন।”

“প্রতিটি স্কুল নিজের কার্যপরিধির মধ্যে অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে। দায়িত্বশীলতার সঙ্গে টাকা ফেরত দিয়ে বেইনি কাজ থেকে নিজেদের সরিয়ে আনবেন।”

মন্ত্রণালয়ে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে যারা অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দেবে তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে অন্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।

সভার শুরুতে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল অতিরিক্ত ফি আদায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি পড়ে শোনান। এতে বিভিন্ন অঙ্গনের ২৮ বিশিষ্ট ব্যক্তির স্বাক্ষর রয়েছে।

নাহিদ বলেন, “এবার আমরা অনেক বেশি শক্তিশালী। সামাজিক সমর্থন এর আগে আমরা এভাবে পাইনি। অপরদিকে রয়েছে হাই কোর্টের রায়। কেউ যাতে মনে না করেন আমাদের শক্তি নেই, আমরা কিছু করতে পারব না।”

বৈঠকে অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, “অতিরিক্ত ভর্তি ফি অবশ্যই ফেরত দিতে হবে। কারণ তারা নিজেরাই নিয়ম তৈরি করে নিয়েছেন।”

শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন, শিক্ষাবিদ হায়াত মামুদ, গণসাক্ষরতা অভিযান কার্যক্রমের ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান ছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।