প্রথম সপ্তাহে নতুন বই ৬৯২, ‘মাশরাফি’ও আগ্রহে

বাংলাদেশে বই বিক্রির সবচেয়ে বড় মৌসুম অমর একুশে বইমেলা; এই বাজার ধরতে নতুন বই প্রকাশের জন্য বইমেলার অপেক্ষায় থাকেন লেখক-প্রকাশকরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Feb 2016, 05:38 PM
Updated : 7 Feb 2016, 05:52 PM

প্রতিবছর বইমেলা চলাকালে নতুন বই প্রকাশের রীতির ব্যতিক্রম ঘটেনি এবারও। মাসব্যাপী মেলার প্রথম সপ্তাহে ৬৯২টি নতুন বই এসেছে বলে রোববার আয়োজক বাংলা একাডেমি জানিয়েছে।

খুলনার একটি হোটেলে গত ১৮ জানুয়ারি মাশরাফি বিন মুর্তজাকে নিয়ে লেখা ‘মাশরাফি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়।

তাদের তথ্য অনুযায়ী, নতুন বইয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কবিতার বই ১৫৯টি। উপন্যাস এসেছে ১২৭টি, গল্পের বইয়ের সংখ্যা ১১৫।

এছাড়া প্রবন্ধগ্রন্থ ৪৩টি, গবেষণাগ্রন্থ ১০টি, ছড়ার বই ২৫টি, শিশুতোষ ৩১টি, জীবনী ১১টি, রচনাবলী একটি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ১৩টি, নাটক একটি, বিজ্ঞান বিষয়ক ১৩টি, ভ্রমণ বিষয়ক ১১টি, ইতিহাসের বই ১১টি, রাজনীতি নিয়ে চারটি, স্বাস্থ্য বিষয়ক পাঁচটি, কম্পিউটার নিয়ে দুটি, রম্য/ধাঁধা চারটি, ধর্মীয় আটটি, অনুবাদ একটি, অভিধান ছয়টি, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি ছয়টি এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর এসেছে ৮৫টি বই।

প্রকাশনা সংস্থার মালিক ও বিক্রয়কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার বিক্রির শীর্ষে রয়েছে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর বইগুলো। পাশাপাশি চলছে উপন্যাস আর কবিতার বই।  মননশীল বইয়ের পাঠকরা বেছে নিচ্ছেন প্রবন্ধ আর গবেষণার বই।

শুক্র ও শনিবার মেলার শিশু প্রহরে শিশুদের পছন্দের শীর্ষে ছিল বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর বই। এ ধরনের বইয়ের বিক্রি এখন পর্যন্ত বেশি বলে জানিয়েছেন প্রকাশনা সংস্থা সংশ্লিষ্টরা।

মেলায় মুহম্মদ জাফর ইকবালের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর বই এসেছে দুটি- তাম্রলিপি থেকে  ‘ক্রেনিয়াল’, আর কাকলী প্রকাশনী থেকে ‘তিতুনি এবং তিতুনি’।

তাম্রলিপির প্রকাশক তরিকুল ইসলাম রনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জাফর ইকবালের বইয়ের প্রতি সব সময়ই পাঠকের চাহিদা বেশি থাকে। বিশেষ করে তার বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির বইগুলোর প্রতি। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।”

‘তিতুনি এবং তিতুনি’ বইটিরও বিক্রি বেশি বলে কাকলী প্রকাশনীর স্টলের বিক্রয়কর্মী জাহিদ হোসেন জানান।

অন্যদিকে হুমায়ুন আহমেদের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর পুনর্মুদ্রণগুলো বেশ বিক্রি হচ্ছে বলে অন্যপ্রকাশের বিক্রয়কর্মী নূরুদ্দিন জানান।

অবসর প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, তার প্রকাশনী থেকে হুমায়ুন আহমেদের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির সমগ্রটিও বেশ চলছে।

অনন্যা প্রকাশনী থেকে বের হওয়া ইমদাদুল হক মিলনের কল্পকাহিনির বই ‘ছোট সবুজ মানুষ’ বইটিরও বেশ কাটতি বলে জানিয়েছেন সেখানকার এক বিক্রয়কর্মী।

“একই সঙ্গে লেখকের নতুন উপন্যাস ‘রেশমি’ও বেশ বিক্রি হচ্ছে।”

বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির পাশাপাশি জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে নিয়ে ক্রীড়া সাংবাদিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায়ের ‘মাশরাফি’ বইয়ের বিক্রিও বেশ।

মেলায় বাংলাদেশ ক্রিকেট সাপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশিত বইয়ের একমাত্র পরিবেশক হিসাবে রয়েছে ঐতিহ্য প্রকাশনী।

প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক আমজাদ হোসেন কাজল বলেন, “স্টলে আসা বেশিরভাগ পাঠকই প্রথমে ‘মাশরাফি’ বইটি খোঁজে।”

এছাড়া অন্বেষা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত আহসান হাবীবের ’পলিটিক্যাল জোকস’, সময় প্রকাশনের আনিসুল হকের ‘লিফটে আটকে পড়া যুবক-যুবতীরা’ ও মাসুদ আহমেদের ‘নিজের সঙ্গে একা’, আগামী প্রকাশনীর হাসনাত আবদুল হাইয়ের ‘সুচিতা’, ঐতিহ্য থেকে রফিক হারিরি অনূদিত ’প্রাইভেট লাইফ অব ইয়াহিয়া খান’ বইগুলোরও কাটতি বেশ বলে জানিয়েছেন সেখানকার প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা।

সপ্তম দিনে রোববার মেলায় নতুন ১১৮টি বই এসেছে। এর মধ্যে গল্প ১৪টি, উপন্যাস ২০টি, প্রবন্ধ আটটি, কবিতা ৩৩টি, গবেষণা নয়টি, ছড়া তিনটি, শিশুসাহিত্য তিনটি, জীবনী দুটি, মুক্তিযুদ্ধ চারটি, ভ্রমণ দুটি, ইতিহাস দুটি, রম্য/ধাঁধা চারটি, ধর্মীয় দুটি, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি দুটি এবং অন্যান্য বিষয়ের ওপর বই এসেছে ১৯টি।