তালাক ‘শাস্ত্রবিরোধী’, আইন না করার দাবি

তালাক ব্যবস্থা ‘শাস্ত্রবিরোধী’ জানিয়ে তা হিন্দু আইনে অন্তর্ভুক্ত না করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহিলা মহাজোট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Feb 2016, 03:27 PM
Updated : 7 Feb 2016, 03:27 PM

রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি সোনালী দাস লিখিত বক্তব্যে বলেন, “হিন্দু শাস্ত্র আনুসারে বিয়ের মধ্য দিয়ে নারী স্বামীর পরিবারের স্থায়ী সদস্য হয় এবং আজীবন ওই পরিবার থেকে ভরণ-পোষণসহ যাবতীয় সুবিধা পাওয়ার অধিকারী হয়।

“এমনকি স্বামী থেকে পৃথক বসবাস করেও আজীবন মর্যাদার সঙ্গে ভরণ-পোষণ পাওয়ার অধিকারী।”

শাস্ত্র অনুযায়ী স্বামীর মৃত্যুর পরও তার পরিবার স্ত্রীকে ভরণ-পোষণ দিতে বাধ্য দাবি করে তিনি বলেন, “বিবাহ বিচ্ছেদের আইন করা হলে হিন্দু নারীর স্বামীর পরিবারে স্থায়ী পদ বিলুপ্ত হবে এবং সেই পরিবারে অস্থায়ী সদস্য হবে।”

বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে এনজিওর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এনজিও কর্মীদের দীর্ঘদিনের প্ররোচনায় পারিবারিক ভাঙন আজ মহামারি আকারে সমাজে বিস্তার লাভ করছে।”

বিভিন্ন এনজিও শাস্ত্রীয় বিধি ব্যবস্থা বিলুপ্ত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

“এনজিওদের কুপ্ররোচনার ফলেই কিছু কিছু মনোমালিন্য, অসন্তোষ সৃষ্টি হচ্ছে। যদিও সে সমস্যা সমাধানের পথ আছে। বিবাহ যদি বৈধভাবে না হয়, স্বামী যদি দুশ্চরিত্র হয় অথবা বহুদিন বিদেশে থাকে, স্ত্রীর পক্ষে বিপজ্জনক হয় বা জাতিচ্যুত হয় বা পুরুষত্বহীন হয় তো স্ত্রী তাকে পরিত্যাগ করতে পারে।

“এ বিধান যেমন শাস্ত্রে আছে, আইনেও আছে। সিভিল কোর্টে গিয়ে মামলা করে অভিযোগ প্রমাণ করে তা করতে হয়। এর জন্য নতুন কোনো আইনের দরকার নেই।”

বাংলাদেশে মুসলিম আইন অনুযায়ী বিয়ে বিচ্ছেদের মামলার নিষ্পত্তি হলেও হিন্দু আইনে তা নেই। হিন্দু আইনে শুধু স্বামী-স্ত্রীর আলাদা বসবাসের আবেদনের নিষ্পত্তির সুযোগ রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে এনজিওকে ‘পরিবার, সমাজ ও ধর্মবিরোধী’ কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখতে আইন করার দাবি জানানো হয়।

দাবি আদায়ে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে জাতীয় হিন্দু মহিলা মহাজোট।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি প্রীতিলতা বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক প্রতীভা বাগচী, বীনা বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।