চা দোকানির মৃত্যু: তদন্তে পুলিশের গাফিলতির প্রমাণ

রাজধানীতে চুলার আগুনে দগ্ধ চা দোকানি বাবুল মাতুব্বরের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের গফিলতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি।

অপরাধ বিষয়ক প্রধান প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Feb 2016, 11:14 AM
Updated : 7 Feb 2016, 03:08 PM

এছাড়া বছর জুড়ে মাদক ব্যবসার নামে তাকে পুলিশের হয়রানির সত্যতাও মিলেছে। 

গত বুধবার রাতে শাহ আলী থানাধীন মিরপুরের গুদারা ঘাট এলাকায় চা দোকানি বাবুল তার দোকানে অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পরের দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাতালে মারা যান।

এ ঘটনা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে শাহ আলী থানার ওসিকে প্রত্যাহার এবং পুলিশের পাঁচ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

পরে ঘটনা তদন্তে মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মাসুদ আহমেদ (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এবং সহকারী কমিশনার মাহবুব হোসেনকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়।

এছাড়া মহানগর পুলিশের সদর দপ্তরের উপ-কমিশনার (ডিসিপ্লিন) টুটুল চক্রবর্তী সরেজমিন প্রতিবেদন তৈরির দায়িত্ব পান।

এই দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা একটি প্রতিবেদন রোববার পুলিশ কমিশনারের কাছে জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন।

তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন পুলিশ কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তদন্তে পুলিশের গফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেছে।

“গাফিলতির প্রমাণের ভিত্তিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও এসেছে প্রতিবেদনে।”

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের অগাস্টে শাহ আলী থানা পুলিশের হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য বাবুল উপ-কমিশনার মিরপুর বিভাগের কাছে আবেদন করেছিলেন। 

এর আগে ২০১৪ সালেও একই অভিযোগ জানিয়ে একটি আবেদন করেছিলেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার কাউয়ুমুজ্জামান দ্বিতীয় দফা আবেদন পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, “এই আবেদন পাওয়ার পরের দিনই থানায় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়।”

আবেদনের বিষয়টি কীভাবে দেখা হচ্ছে- প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “অবশ্যই গুরুত্বের সাথে নেওয়া হয়েছে। গাফলতি বা অন্য কোনোভাবে দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তি পেতে হবে।”

বাবুল মাতুব্বরের মৃত্যুর পর গঠিত তদন্ত কমিটি এই আবেদনটি নিয়েও তদন্ত করে দেখছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত সংশ্লিষ্ট ওই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, “আবেদনের বিষয়টি প্রমাণ পাওয়ার পরই ওসিকে ক্লোজ করার সিদ্ধান্ত হয়। না হলে বাবুল মাতুব্বরের মৃত্যুর বিষয়ে বরখাস্ত হওয়া ‍ওই পাঁচ পুলিশ সদস্যদের নিয়েই তদন্ত ঘুরপাক খেত।”

“তদন্তে ঘটনার সময় পুলিশ থাকলেও বাবুলকে হাসপাতালে না নেওয়া, তড়িঘড়ি করে মামলা দায়ের, মাদক ব্যবসায়ী সাজানোর চেষ্টা, সোর্সের সাথে ঘনিষ্ঠতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে উঠে এসেছে।”

সাময়িক বরখাস্ত এবং ক্লোজ হওয়া পুলিশ সদস্যরা তাদের পক্ষে কোনো শক্ত যুক্তি দিতে পারেননি বলেও জানান তিনি।