এদিন সকাল থেকেই মেলায় দর্শনার্থীদের উপস্থিতি দেখা যায়। বেলা ১১টায় মেলামুখী যে যাত্রা শুরু হয়েছিল তা চলে রাতে মেলা ভাঙার কিছুক্ষণ আগ পর্যন্ত।
সময় যত গড়িয়েছে বইমেলায় ভিড়ও তত বেড়েছে। উদ্যানের বিশাল পরিসরের মাঝেও নজরে আসে বইপ্রেমীদের ঢল।
তবে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা ‘শিশুপ্রহর’ নামের সময়টা বরাদ্দ ছিল শিশুদের জন্য। ওই সময় মেলায় শিশুদের সরব উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
বিকালের দিকে মেলা চলে যায় বড়দের হাতে। এদিন মেলার প্রবেশ পথগুলোতে দর্শনার্থীদের দীর্ঘ সারিও দেখা গেছে, যা আগের চারদিন ছিল অনুপস্থিত।
বিকেলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মেলায় আসেন সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলাপ্রাঙ্গণে ইউপিএলের স্টলের সামনে তার সঙ্গে কথা হয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
ইসমাইল বলেন, “আমরা চাকরিজীবীরা তো ছুটির দিনের অপেক্ষায়-ই থাকি। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে আজ প্রথম মেলায় আসলাম। ঘুরে দেখব, বইও কিনব।”
মেলায় ধুলোর উড়োউড়ি আগতদের অস্বস্তির মধ্যে ফেলেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বড় পরিসরের মেলায় খোলামেলা পরিবেশ আছে তা ঠিক। সকলের জন্য স্বচ্ছন্দ পরিবেশ তৈরি করতে ধুলোবালিতে পানি ছিটানো দরকার। সেটা তো দেখছি না।”
বেশি সমাগমে বিক্রি বাড়ায় প্রকাশকদের মুখে ‘হাসি ফোটার’ কথা জানান নালন্দা প্রকাশনীর সত্বাধিকারী রেদয়ানুর রহমান জুয়েল।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি মনে করি, আজ থেকেই মেলা শুরু হলো। প্রচুর মানুষ আসছেন, গেল চারদিনের তুলনায় বেচাবিক্রিও ভাল।”
একাডেমির তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার মেলায় নতুন ২৫৬টি বই এসেছে। এর মধ্যে গল্প ৪০, উপন্যাস ৪৯, প্রবন্ধ ৮, কবিতা ৬৪, গবেষণা ৪, ছড়া ৮, শিশুসাহিত্য ১৩, জীবনী ৮, মুক্তিযুদ্ধ ৪, নাটক ১, বিজ্ঞান ৩, ভ্রমণ ৪, ইতিহাস ৫, রাজনীতি ৪, কম্পিউটার ১, ধর্মীয় ২, অনুবাদ ১, অভিধান ৫, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী ২ এবং অন্যান্য বিষয়ে ৩০টি।
শনিবারও বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিশুপ্রহর রয়েছে।
মেলার মূলমঞ্চ
শুক্রবার বিকালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বইমেলার মূলমঞ্চে ‘বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী: অভিধান ও ব্যাকরণ কর্মসূচি, অতীত থেকে বর্তমান’ শিরোনামে আলোচনা সভা হয়।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক স্বরোচিষ সরকার। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক হাকিম আরিফ ও মোহাম্মদ আজম। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আহমদ কবির।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রাহিজা খানম ঝুনুর পরিচালনায় ‘বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টস লি.’-এর শিল্পীবৃন্দ নৃত্য পরিবেশন করেন।
সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী আবদুল লতিফ শাহ্, শফি মণ্ডল, রণজিত দাস বাউল, মমতা দাসী বাউল, ভজন কুমার ব্যাধ ও কোহিনুর আকতার গোলাপী।