আয়োজকরা আশা করছেন, সাবেক শিক্ষার্থী, তাদের পরিবারের সদস্য এবং বর্তমান শিক্ষার্থী মিলিয়ে মোহাম্মদপুরের স্কুল ক্যাম্পাসে সেদিন আনন্দে মাতবে অন্তত ৫ হাজার মানুষ।
দিনব্যাপী এ আনন্দযজ্ঞের সূচনা হবে ৮টায়, সকালের নাস্তার মধ্য দিয়ে। থাকবে ক্রিকেট, ফুটবল ও ভলিবল খেলার ব্যবস্থা; মেজবান রীতিতে মধ্যাহ্নভোজ, র্যাফেল ড্র, আর জনপ্রিয় শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক আয়োজন এবং নৈশভোজ।
এ অনুষ্ঠানেই কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘ওল্ড রেমিয়ান্স অ্যাসোসিয়েশন’ এর বার্ষিক সাধারণ সভা হবে। সন্ধ্যায় স্কুল মিলনায়তনে ওই সভায় নির্বাচিত করা হবে সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব।
সাবেক শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্য, শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্যও পুনর্মিলনীতে রয়েছে আনন্দের নানা আয়োজন।
“সারা দিনের এ আয়োজনে আড্ডা, আনন্দ, স্মৃতিচারণ, খাবার কোনো কিছুর কমতি থাকবে না,” বলেন আয়োজকদের একজন মশিউর রহমান।
বর্তমানে সফল ব্যবসায়ী মশিউর ১৯৭৭ সালে এ স্কুল থেকেই এসএসসি পাশ করেন।
পুনর্মিলনীতে অংশ নিতে সাবেক শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হবে এক হাজার টাকা করে। স্ত্রী ও প্রত্যেক সন্তানের জন্য দিতে হবে আরও ৫০০ টাকা করে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এই স্কুল থেকে এইচএসসি পাস করেন ১৯৮২ সালে।
তিনি বলেন, “আমরা এমনভাবে এ আয়োজন করতে চাই, যার জন্য রেমিয়ানরা অপেক্ষা করে আছে।”
পুনর্মিলনীতে ফ্যাশন শো ছাড়াও থাকবে জনপ্রিয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে মরোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যা মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে।
ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের ‘পাবলিক স্কুলগুলোর’ আদলে তৈরি রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬০ সালে। সে সময় পাকিস্তানের চার প্রদেশের রাজধানীতে এরকম চারটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।
পুরোপুরি আবাসিক স্কুল হিসেবে যাত্রা শুরু হলেও এক পর্যায়ে কিছু অনাবাসিক ছাত্রও ভর্তি করা শুরু হয়। এখন এই স্কুলে আবাসিক ও অনাবাসিক দুই ধরনের শিক্ষার্থীই ভর্তি করা হয়।
এই স্কুলের বিশাল সীমানার মধ্যে ফুটবল ও ক্রিকেট মাঠ; হকি, ভলিবল ও বাস্কেটবল খেলারও ব্যবস্থা রয়েছে। ১৯৬০ এর দশকে ছাত্ররা এখানে রাগবিও খেলতো।
পরে ‘রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল’ এর নাম বদলে হয় ‘ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ’। আগের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি শিক্ষার্থী এখন এ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয় প্রতিবছর।
প্রতিটি ক্ষেত্রে নতুন নেতা তৈরি করতেই প্রতিষ্ঠার সময় এ স্কুলে বিপুল বিনিয়োগ করা হয়েছিল, যা ছিল সেই সময়ের তুলনায় অনেক বেশি।
১৯৭০ এর দশকে এই ক্যাম্পাসে শৈশব, কৈশোর কেটেছে, এমন একজন সাবেক ছাত্র বলেন, “পাঠক্রম বহির্ভূত বিস্তৃত কর্মকাণ্ডের জন্য রেসিডেন্সিয়াল মডেল বিখ্যাত, যা বাংলাদেশের অন্য স্কুলগুলোতে খুব একটা দেখা যায় না।”
আরেক সাবেক শিক্ষার্থী বলেন, “যে কোনো বিবেচনায় দেশের অন্যতম সেরা এই স্কুলের আবেদন তথাকথিত ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলোর আবির্ভাবের পর খানিকটা হয়তো কমে গেছে, কিন্তু গৌরবের সেই সোনালী দিনগুলোতে নিঃসন্দেহে এই স্কুল ছিল সবার সেরা।”