শান্তির প্রত্যাশায় শুরু কবিতা উৎসব

বিশ্বশান্তির স্লোগানে ঢাকায় শুরু হয়েছে দুদিনব্যাপী কবিতা উৎসব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2016, 12:04 PM
Updated : 1 Feb 2016, 02:56 PM

সোমবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বরে উৎসব  উদ্বোধন করেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক।

এর আগে জাতীয় কবিতা পরিষদের নেতারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, পটুয়া কামরুল হাসানের সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।

‘কবিতা মৈত্রীর কবিতা শান্তির’ স্লোগানে এই উৎসবের আয়োজক জাতীয় কবিতা পরিষদ। এবারের উৎসব কবি ও ভাষা-সংগ্রামী তোফাজ্জল হোসেনকে উৎসর্গ করা হয়েছে।

জাতীয় সঙ্গীত ও উৎসব সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন হওয়ার পর উৎসবের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

বক্তব্য রাখেন উৎসবের আহ্বায়ক কবি রবিউল হুসাইন, যুগ্ম-আহ্বায়ক কবি কাজী রোজী, পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কবি তারিক সুজাত।

জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিল্প-সংস্কৃতি ও রাজনীতিক অঙ্গনে অবদান রেখে যারা প্রয়াত হয়েছিলেন তাদের স্মরণ করে ২০১৫ সালে নিহত শোক প্রস্তাব পাঠ করেন কবি আমিনুর রহমান সুলতান।

সৈয়দ শামসুল হক বলেন, “কবিতা স্বপ্ন চেতনা ও প্রত্যয়ের কথা বলে। যখন সেটা আঘাতপ্রাপ্ত হয় তখন কবিরাই হয়ে ওঠে প্রতিবাদী।

“অনেক বলতে পারেন কবিতার সঙ্গে সংগ্রামের কী সম্পর্ক? আমি বলব, কবিতার সঙ্গে সংগ্রামের সম্পর্ক আছে, কারণ কবিতা মানবতার কথা বলে।”

কবিতার মাধ্যমে মানবতাকে জাগিয়ে তুলতে কবিদের আহ্বান জানান এই সাহিত্যিক।

রবিউল হুসাইন বলেন, “কবিদের পুণ্যশোণিত আপনাদের সকলের ধমনীতে নতুন শক্তির সঞ্চার করুক। কবিদের সুন্দর স্বপ্ন সকলের চোখে উদ্ভাসিত হয়ে; আমাদের প্রিয় পৃথিবী হোক শান্তিময় ও সমৃদ্ধ।”

তারিক সুজাত বলেন, “অশান্ত পৃথিবীর শান্তিপ্রিয় মানুষের পাশে আমাদের কবিতা মোমের শিখা হয়ে জ্বলবে, ত্রিশতম উৎসবে এই প্রত্যাশা।”

মুহাম্মদ সামাদ বলেন, “স্বৈরাচার, সন্ত্রাস, মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদের অবসান এবং যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে তিমির বিনাশী কবিতার উদাত্ত আহ্বান।

“এভাবেই আমরা দানব-যাতনার বিপরীতে নতুন কবিতার, নতুন সময়ের আবাহনের উৎসবকে সত্য সুন্দরের উৎসবের রূপ দেওয়ার সচেষ্ট রয়েছি।”

উদ্বোধন পর্ব শেষে সকাল সাড়ে ১১টায় অনুবাদক ফকরুল আলমের সভাপতিত্বে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেবেন বাংলাদেশ, ভারত, সুইডেন, নরওয়ে, স্লোভাকিয়া, মরক্কো, তাইওয়ান, নেপাল থেকে আমন্ত্রিত কবি-লেখক-প্রতিনিধিরা।

দ্বিতীয় পর্বে দুপুর ১টায় সাযযাদ কাদিরের সভাপতিত্বে কবিতা পাঠে অংশ নেবেন নিবন্ধিত কবিরা। তৃতীয় পর্বে বিকালে  কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে অংশ নেন অন্যভাষার কবিরা।

চতুর্থ পর্বে বিকাল ৫টায় কবি রুবী রহমানের সভাপতিত্বে আমন্ত্রিত কবিরা কবিতা পাঠ করেন। পঞ্চম পর্বে সন্ধ্যায় কবি মহাদেব সাহার সভাপতিত্বে ভারত থেকে আমন্ত্রিত কবিদের কবিতা পাঠের কথা রয়েছে।

আবৃত্তি পর্বে রামেন্দু মজুমদারের সভাপতিত্বে রাত ৮টায় আমন্ত্রিত অতিথি আবৃত্তিশিল্পীরা আবৃত্তি করবেন। প্রথম দিনের আয়োজন চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। দু’দিনব্যাপী উৎসবের সমাপনী হবে ২ জানুয়ারি।