কল্যাণপুরের সেই বস্তিতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ

উচ্ছেদ অভিযানের পরদিন ঢাকার কল্যাণপুর নতুনবাজার এলাকায় পোড়াবস্তির একটি অংশ আগুনে পুড়েছে, যার পেছনে নাশকতার কোনো ঘটনা থাকতে পারে বলে স্থানীয়দের সন্দেহ। 

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Jan 2016, 05:30 AM
Updated : 22 Jan 2016, 06:58 AM

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তারা কল্যাণপুর পোড়া বস্তিতে ‘আগুন দেওয়ার’ খবর পান। এরপর দুটি ইউনিটকে সেখানে পাঠানো হয়।

মিরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভানোর আগেই কয়েক ডজন ঘর পুড়ে যায়।

অবশ্য স্থানীয়দের দাবি, এ ঘটনায় অন্তত একশটি ঘর পুড়ে গেছে।  

বস্তির বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাদের ঘরে ইচ্ছে করে আগুন লাগানো হয়েছে। ‘সরকারি দলের লোকদের’ সন্দেহ করছেন তারা।

পারভীন আক্তার নামে এক নারী বলেন, সকাল ৮টার পরপর বস্তিতে আগুন লাগে। বেশ কয়েক দফা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হলেও তারা আসতে অনেক দেরি করেছে।

ওই বস্তির আরেক বাসিন্দা কামাল হোসেন বলন, “সরকারদলীয় লোকজন মিরপুর বাংলা কলেজ ও হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সামনে এবং বস্তিতে ঢোকার মুখে ফায়ারের গাড়িকে বাধা দিয়েছে।”

সকালে আগুন লাগার পর বস্তিবাসী ডোবা থেকে পানি এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছিলেন জানিয়ে কামাল বলেন, “দমকল বাহিনীর সদস্যরা আরও আগে ঘটনাস্থলে এলে ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হতো।”

বস্তিবাসীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পরিদর্শক শফিক বলেন, “কারা আগুন লাগিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার মো. কাইয়ুমুজ্জামান খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাই নাকি? খোঁজ নিয়ে দেখছি।”

কল্যাণপুরে হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বেদখল জমি উদ্ধারে এই বস্তির একটি অংশে বৃহস্পতিবার উচ্ছেদ অভিযান চালায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। সে সময় বস্তিবাসীর সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।

বস্তির এক-চতুর্থাংশ উচ্ছেদের পর হাই কোর্টের নিষেধাজ্ঞায় দুপুরে ওই অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই বস্তির অন্য মাথায় বেলতলী মাঠ এলাকার আট নম্বর বস্তিতে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটল।

হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মালিকানায় থাকা প্রায় ৫০ একর ওই জমির মধ্যে ১৫ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে এই বস্তি।

বেশ কয়েক বছর আগে একবার আগুন লাগায় এর নাম হয়ে যায় পোড়া বস্তি। সেখানে কয়েক হাজার ঘরে অন্তত ২০ হাজার মানুষ এতোদিন বসবাস করে আসছিলেন বলে স্থানীয়দের তথ্য।

২০০৩ সালে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ওই জমি থেকে বস্তি উচ্ছেদের উদ্যোগ নিলে আদালতের স্থগিতাদেশ আসে। এরপর আরও দুই দফর সেই উদ্যোগ নেওয়া হলেও আইন ও সালিশ কেন্দ্রসহ কয়েকটি বেসরকারি সংগঠনের চেষ্টায় তা আটকে যায়।