যুদ্ধাপরাধী জামায়াত আমির নিজামীর ফাঁসি বহাল

মুক্তিযুদ্ধকালে যার পরিকল্পনা, নির্দেশনা ও নেতৃত্বে আলবদর বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়ন করেছিল, সেই মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় সর্বোচ্চ আদালতের চূড়ান্ত রায়েও বহাল রয়েছে।

মহিউদ্দিন ফারুকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Jan 2016, 03:08 AM
Updated : 6 Jan 2016, 04:28 PM

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ বুধবার সকালে এক মিনিটের মধ্যে দুটি বাক্যে এই রায়ের সংক্ষিপ্তসার জানিয়ে দেন।

বেঞ্চের অপর তিন সদস্য হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাবনায় হত্যা, ধর্ষণ এবং বুদ্ধিজীবী গণহত্যার দায়ে দেড় বছর আগে নিজামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আপিল আংশিক মঞ্জুর করে সেই দণ্ডাদেশই বহাল রেখেছে সর্বোচ্চ আদালত।

২, ৬ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে পাবনার বাউশগাড়ি, ডেমরা ও রূপসী গ্রামের প্রায় সাড়ে ৪০০ মানুষকে হত্যা ও ৩০-৪০ জন নারীকে ধর্ষণ; পাবনার ধুলাউড়ি গ্রামে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ৫২ জনকে হত্যা এবং পরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবী গণহত্যার দায়ে নিজামীর ফাঁসির রায় বহাল রাখা হয়েছে।

আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা বহাল রাখা হয়েছে ৭ ও ৮ নম্বর অভিযোগে হত্যায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে। 

ট্রাইব্যুনালের রায়ে ৪ নম্বর অভিযোগে নিজামীর মৃত্যুদণ্ড এবং ১ ও ৩ নম্বর অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হলেও আপিল বিভাগ এসব অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দিয়েছে। 

অ্যার্টর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এই রায়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। শাহবাগে হয়েছে আনন্দ মিছিল, নিজামীর নিজের জেলা পাবনায় হয়েছে মিষ্টি বিতরণ। 

অন্যদিকে নিজামীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, এই রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য আবেদন করা হবে কি না, মক্কেলের সঙ্গে আলোচনা করে সে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা।

আর নিজামীর দল জামায়াতে ইসলামী বরাবরের মতোই প্রতিবাদ জানিয়ে হরতাল ডেকেছে। 

জামায়াত আমির নিজামী একাত্তরে ছিলেন দলটির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নাজিমে আলা বা সভাপতি এবং সেই সূত্রে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত আল বদর বাহিনীর প্রধান।

স্বাধীনতাকামী বাঙালির ওপর দমন-পীড়ন চালাতে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত রাজাকার বাহিনী ও শান্তি কমিটিতেও তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে এ মামলার বিচারে উঠে আসে।

এই রায় যখন হয়, ৭২ বছর বয়সী নিজামী তখন গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে। বিগত চার দলীয় জোট সরকারের এই মন্ত্রী চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র মামলারও মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামি।

২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধের বহু প্রতীক্ষিত বিচার শুরুর পর ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিতদের মধ্যে নিজামী হলেন ষষ্ঠ ব্যক্তি, আপিল বিভাগে যার মামলার নিষ্পত্তি হল।

নিজামী হলেন বাংলাদেশের মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করা তৃতীয় ব্যক্তি, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে যার সামনে অপেক্ষা করছে ফাঁসির দড়ি। আর বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে এটি সর্বোচ্চ আদালতের দ্বিতীয় রায়।

চূড়ান্ত রায়

উচ্চ আদালতের রায় বলে আসামি নিজামীকে এদিন আদালতে হাজির করা হয়নি। তারপরও সকাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বিচারকরা এজলাসে আসেন সকাল ৯টা ৩ মিনিটে।

তারা আসনগ্রহণের পর কার্যতালিকার এক নম্বর ক্রমিকে থাকা নিজামীর আপিল মামলাটি ডাকা হয়। আদালত কক্ষে রাখা ঘড়িতে তখন ৯টা ৫ মিনিট। এরপর রায় ঘোষণা শুরু করেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা।

রায়ে বলা হয়, “আপিল আংশিক মঞ্জুর করা হল। আপিলকারী মতিউর রহমান নিজামীকে অভিযোগ নম্বর ১, ৩ ও ৪ থেকে খালাস দেওয়া হলো অভিযোগ নম্বর ২, ৬, ৭, ৮ ও ১৬ এর ক্ষেত্রে দোষী সাব্যস্ত করে দণ্ড বহাল রাখা হল।”

এখন যা হবে

নিয়ম অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্ট এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর তা ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে। সেটি হাতে পেলে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করবে ট্রাইব্যুনাল। সেই মৃত্যু পরোয়ানা ফাঁসির আসামিকে পড়ে শোনাবে কারা কর্তৃপক্ষ।

পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবে আসামিপক্ষ। তবে রিভিউ যে আপিলের সমকক্ষ হবে না, তা যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার ‘রিভিউ’ খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায়েই স্পষ্ট করা হয়েছে।

রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তি হয়ে গেলে এবং তাতে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকলে আসামিকে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার সুযোগ দেওয়া হবে। তিনি স্বজনদের সঙ্গে দেখাও করতে পারবেন।

রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিষয়টি ফয়সালা হয়ে গেলে সরকার কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে।

প্রতিক্রিয়া

রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নিজামীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, “নিজামী সাহেব যদি পর্যালোচনা করে আমাদের পরবর্তী কর্মকাণ্ড, অর্থাৎ রিভিউ করতে বলেন, অবশ্যই আমরা রিভিউ করব। তবে এই মুহূর্তে এটা বলা যাচ্ছে না।

অন্যদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, “আমি সবচেয়ে স্বস্তি অনুভব করছি এই কারণে যে বুদ্ধিজীবী হত্যার ব্যাপারে নিজামীর যে ভূমিকা, তার যে দায়-দায়িত্ব, সেটি আজ প্রতিষ্ঠিত হলো।”

এর আগে বিভিন্ন মামলায় ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের ‘দক্ষতা’ নিয়ে সমালোচনা হলেও আপিল বিভাগে নিজামীর ফাঁসি বহালের রায়কে নিজেদের ‘অর্জন’ বলে মনে করেন প্রসিকিউশন দলের অন্যতম সদস্য তুরিন আফরোজ

রায়ের পর শাহবাগে আনন্দ মিছিল শেষে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেন, “এই নিজামী বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, যেটি ত্রিশ লাখ মানুষের রক্তে রঞ্জিত, সেই জাতীয় পতাকা তার গাড়িতেও লাগানোর ধৃষ্টতা দেখিয়েছিল। সেই রাজনীতিবিদ- যারা অপশক্তি, রাজাকারদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা লাগিয়ে দিয়েছিল, আজকের এই ফাঁসির রায় তাদের জন্য চপেটাঘাত, তাদের জন্য উপযুক্ত জবাব।”

জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় আপিল বিভাগে বহাল থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে তার এলাকা পাবনার সাঁথিয়ার মানুষও। সেখানে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ হয়েছে।

সাঁথিয়ার ধূলাউড়ী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গফুর বলেন, “অবিলম্বে আমি এই নৃশংস রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।” 

মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডারদের সংগঠন সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামও ‘সময় নষ্ট না করে’ নিজামীর ফাঁসির রায় কার্যকর করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

অন্যদিকে নিজামীর দূর সম্পর্কের ভাতিজা কামাল পাশা বলেন, “মন্ত্রী হয়েও অবৈধ সম্পদ গড়ে তোলেননি নিজামী। তিনি একজন ভালো মানুষ।”

যুদ্ধাপরাধী, গাড়িতে উড়িয়েছিলেন পতাকা

শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের উত্তরসূরি হিসাবে ২০০০ সালে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে আসা মতিউর রহমান নিজামীর জন্ম ১৯৪৩ সালের ৩১ মার্চ, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার মনমথপুর গ্রামে।

মাদ্রাসার ছাত্র থাকা অবস্থায় নিজামী ১৯৬১ সালে জামায়াতে ইসলামীর তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৬৬ থেকে তিন বছর পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতির দায়িত্ব পালনের পর একাত্তরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিখিল পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি ছিলেন নিজামী। বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের স্বাধীনতার লড়াই তখন চূড়ান্ত পর্যায়ে।

১৯৭১ সালের মার্চে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর এপ্রিলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করতে মূলত ছাত্রসংঘের কর্মীদের নিয়ে গড়ে তোলা হয় আলবদর বাহিনী। ছাত্রসংঘের নেতা হিসাবে আলবদরের নেতৃত্বও নিজামীর কাঁধে বর্তায়।

আলবদর গঠিত হওয়ার পর ২৩ শে এপ্রিল দৈনিক পাকিস্তানে ছাত্রসংঘের সভাপতি নিজামীর একটি  বিবৃতি প্রকাশিত হয়, যাতে বলা হয়, “আলবদর একটি নাম, একটি বিস্ময়। আলবদর একটি প্রতিজ্ঞা। যেখানে তথাকথিত মুক্তিবাহিনী সেখানেই আলবদর। যেখানে দুস্কৃতকারী সেখানেই আলবদর। ভারতীয় চরদের কাছে আলবদর সাক্ষাৎ আজরাইল।”

স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয়ের পর বাংলাদেশ সরকার জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করে।

বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর জিয়াউর রহমানের আমলে দেশে ফেরার সুযোগ পান জামায়াতের মুক্তিযুদ্ধকালীন আমির গোলাম আযম। স্বাধীন বাংলায় প্রকাশ্যে রাজনীতিতে ফেরে স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দলটি।

ওই সময় ১৯৭৮ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত জামায়াতের ঢাকা মহানগর শাখার আমির ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন মতিউর রহমান নিজামী। এরপর ১৯৮৩ সালে পদোন্নতি পেয়ে দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হন।

১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ওই পদে থেকে দলের সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পান নিজামী। গোলাম আযম আমিরের পদ থেকে অবসরে গেলে ২০০০ সাল থেকে নিজামীর নেতৃত্বেই পরিচালিত হয় জামায়াতে ইসলামী।

পাবনা-১ আসন থেকে তিনবার সাংসদ নির্বাচিত হওয়া নিজামীকে ২০০১ সালে মন্ত্রিত্ব দেন বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া। প্রথমে দুই বছর কৃষি মন্ত্রীর দায়িত্বে থেকে সরকারের পরের তিন বছর ছিলেন শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্বে।

ওই সময়েই ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার জন্য পাচারের পথে চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়ে, যে মামলার রায়ে গতবছর নিজামীর ফাঁসির আদেশ হয়। কন্টেইনার ডিপোর ইজারা নিয়ে গেটকো দুর্নীতি মামলারও আসামি সাবেক শিল্পমন্ত্রী নিজামী।

বিচার পরিক্রমা

২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের একটি মামলায় মতিউর রহমান নিজামীকে গ্রেপ্তার করার পর একই বছরের ২ অগাস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এরপর ২০১২ সালের ২৮ মে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে জামায়াত আমিরের যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হয়।

তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক খানসহ প্রসিকিউশনের পক্ষে মোট ২৬ জন এ মামলায় সাক্ষ্য দেন। নিজামীর পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দেন তার ছেলে মো. নাজিবুর রহমানসহ মোট চারজন।

বিচার শেষে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল যে রায় দেয় তাতে প্রসিকিউশনের আনা ১৬ অভিযোগের মধ্যে আটটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। এই আট অভিযোগের মধ্যে ২, ৪, ৬ ও ১৬ নম্বর ঘটনায় নিজামীর ফাঁসির রায় হয়।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেন নিজামী। নিজামীর করা আপিলে ১৬৮টি যুক্তি তুলে ধরে সাজার আদেশ বাতিল করে খালাস চাওয়া হয়। সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ায় রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেনি রাষ্ট্রপক্ষ।

এই আপিলের ওপর গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর শুনানি শুরু হয় চলে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দ্বাদশ দিনে শুনানি নিয়ে ৮ ডিসেম্বর আদালত রায়ের দিন ঠিক করে দেয়।

আপিলে ষষ্ঠ রায়

মতিউর রহমান নিজামীর মামলাসহ চূড়ান্ত রায় এসেছে  যুদ্ধাপরাধের ছয় মামলায়। এর মধ্যে ২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত রায়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির আদেশ হলে ওই বছর ১২ ডিসেম্বর দণ্ড কার্যকর করা হয়।

ঠিক এক বছর পর আপিলের দ্বিতীয় রায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয় আপিল বিভাগ। ৩১ ডিসেম্বর ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষ রিভিউ আবেদন করবে বলে জানিয়েছে।

২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর আপিল বিভাগ তৃতীয় রায়ে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে সর্বোচ্চ সাজা দিলে ২০১৪ সালের ১১ এপ্রিল তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

২০১৫ সালের বছর  ১৬ জুন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া ফাঁসির রায়ই বহাল রাখে আপিল বিভাগ।  আর বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আপিলের রায় আসে ২৯ জুলাই। গতবছর ২১ নভেম্বর রাতে একইসঙ্গে তাদের দুজনের দণ্ড কার্যকর করা হয়। 

এছাড়া শুনানি চলার মধ্যেই মুক্তিযুদ্ধকালীন জামায়াত আমির গোলাম আযম ও বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমের মৃত্যু হওয়ায় তাদের আপিলের নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।