ইসলামের অপব্যাখ্যা রোধে সোচ্চার হতে বিচারপতি সিনহার আহ্বান

কতিপয় মানুষের জন্য ইসলাম সম্পর্কে ভুল বার্তা পশ্চিমা বিশ্বে যাচ্ছে মন্তব্য করে তা রোধে মুসলিম পণ্ডিতদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Dec 2015, 04:36 PM
Updated : 24 Dec 2015, 04:36 PM

ঈদে মিলাদুন্নবি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট মাজার ও মসজিদের আয়োজনে দুদিনব্যাপী  অনুষ্ঠানের উদ্বোধন পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।

আধুনিক বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য, দর্শন ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ইসলামের এক গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরে বিচারপতি সিনহা বলেন, “সেদিনের মুসলমানরা যে মানবতাবাদী সমাজের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল, আজ তা প্রায় ভূলুণ্ঠিত।

“কেবল কতেক ধর্মান্ধ পথভ্রষ্ট উগ্রবাদীর আচরণে সারা বিশ্বজুড়ে, বিশেষ করে পশ্চিমা দৃষ্টিতে ইসলাম ধর্ম এবং মুসলমানদের সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হয়েছে।”

তিনি বলেন, “পশ্চিমা অনেকের কাছে ইসলামের প্রকৃত পরিচয় অজানা। কেননা ইসলাম তাদের ঐতিহ্যগত সংস্কৃতির কোনো উপাদান নয়।

“এই অজ্ঞতার পাশাপাশি যখন কিছু কিছু মুসলিমের ইসলাম পরিপন্থি আচরণ তাদের সামনে প্রকাশ পায়, পশ্চিমা লোকের তার বিরুদ্ধে যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়, তাতে ইসলাম সম্পর্কে তাদের ভুল বোঝার মাত্রা আরও বেড়ে যায়।”

এই অবস্থার অবসানে যাদের কারণে ইসলাম সম্পর্কে ইসলাম সম্পর্কে ভুল বার্তা যাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ইসলামে বিজ্ঞ ব্যক্তিদের, শিক্ষিত মুসলিমদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি।

ব্রিটিশ আমলে ইংরেজি শিক্ষা নিয়ে কিছু মুসলিম ধর্মান্ধতার পরিচয় দেওয়ায় এই উপমহাদেশে মুসলমানরা পিছিয়ে পড়ে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধান বিচারপতি বলেন, “এটাই সঠিক সময়। আপনারা যারা শিক্ষিত আছেন, যারা সমাজ নিয়ে চিন্তা করেন, তারা শিক্ষা দেন, এই অপব্যাখ্যা থেকে আমরা কীভাবে পরিত্রাণ পাই।”

“আল্লাহর নবীগণ যেভাবে মানুষকে নৈতিকভাবে সংশোধন করেছেন, তেমনিভাবে তাদেরকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। আমাদের এমন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যেখানে ধর্মীয় বিশ্বাস, গোত্র, বর্ণ, ধনী-দরিদ্র সকলেই সমান অধিকার ভোগ করবে,” বলেন তিনি।

ইসলামের প্রবর্তক মুহাম্মদ (স.) এর জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আজকের এই বিশেষ দিনে আমি আহ্বান জানাব, আসুন আমরা সবাই মিলে দেশ ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করি।”

মাজার কমিটির সদস্য হাই কোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।