উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে হকারদের সমাবেশ

পুনর্বাসনের আগে উচ্ছেদ অভিযান চালানো পরিকল্পনা বাতিলের দাবিতে ঢাকায় সমাবেশ করেছে ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা বা হকারদের একটি সংগঠন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2015, 01:16 PM
Updated : 1 Dec 2015, 01:16 PM

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের এই সমাবেশে সংহতি জানান বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা।

সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ করা বেআইনি, মানবাধিকার লঙ্ঘন।”

হকার উচ্ছেদের পরিকল্পনা ঠেকাতে রাজপথে এবং প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়েও আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি সহিদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, “ঢাকার মেয়র সাঈদ খোকন ও আনিসুল হককে বলি, বড়লোকদের কারণে রাস্তায় যানজট হয়। রাস্তা থেকে কিছু উচ্ছেদ করতে হলে গাড়ি উচ্ছেদ করুন, গণপরিবহন চালু করুন।”

১০ দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হকারদের প্রতি আহ্বান জানান এই শ্রমিক নেতা।

সিপিবি সভাপতি সেলিম হকারদের উদ্দেশে বলেন, “কে কোন মার্কায় ভোট দিলেন, তার চেয়ে বড় কথা হল, হকারদের দাবি এক। ঐক্যবদ্ধভাবে দাবি আদায়ের চেষ্টা করতে হবে। সুশৃঙ্খলভাবে আন্দোলন করতে হবে।”

পুনর্বাসনের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদী মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ ১০ দফা দাবি সমাবেশে তুলে ধরেন হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল হাসেম কবির।

দাবির মধ্যে রয়েছে- পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ বন্ধ, হকারদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া, হকারদের উপর পুলিশের নির্যাতন বন্ধ, হকারদের কাছে থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ, প্রকৃত হকারদের তালিকা তৈরি করে সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করে তাদের বরাদ্দ দেওয়া ইত্যাদি।

“ফুটপাত থেকে হকারদের উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের আন্দোলন এগিয়ে নিতে হবে,” বলেন হকার নেতা কবির।

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে নগর ভবন প্রদক্ষিণ করে, পরে মিছিলটি পল্টনে গিয়ে শেষ হয়।

‘শেখ হাসিনা, স্মরণ করুন’

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্যে ডাকসুর সাবেক ভিপি সেলিম ছাত্র আন্দোলনে থাকার সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হকারদের পক্ষে দাঁড়ানোর একটি ঘটনা তুলে ধরেন।

“আইয়ুব মোনায়েমের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সময় আমি করতাম ছাত্র ইউনিয়ন আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করতেন ছাত্রলীগ। তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, তখন রাজপথে স্লোগান দিয়েছিলেন ‘ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ করা চলবে না’।”

“ওই স্লোগান যদি একবার আপনার মুখ থেকে উচ্চারিত হয়ে থাকে, তাহলে এক সপ্তাহের ভেতর জনসভা করে দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেবেন, আপনার চেলা চামুণ্ডাদের, প্রশাসনের লোকদের। স্মরণ করিয়ে দেবেন, হকার উচ্ছেদ করা চলবে না।”

রাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়াই নিজস্ব উদ্যোগে কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী হকারদের নানা প্রতিবন্ধকতার কথাও তুলে ধরেন এই বাম নেতা।

হকারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “টোকেন দিয়ে, চাঁদা দিয়ে দেশ স্বাধীন করিনি। রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি। কেউ চাঁদা চাইতে আসলে বলবেন, এটা স্বাধীনতাবিরোধীদের কাজ। এটার বিরুদ্ধে সচেতন ও সজাগ থাকার অনুরোধ রইল।”

হকারদের পক্ষে আন্দোলনে ছাত্র সমাজকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান সাবেক এই ছাত্রনেতা।

“ছাত্র ভাইদের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা পরীক্ষা দেবেন, আর হকার ভাইদের ছেলে-মেয়েরা পরীক্ষা দিতে পারবে না, তা কোনো ছাত্রের কাম্য হতে পারে না।”