সরকারি দপ্তরের বিরোধ মেটাতে কমিটি হচ্ছে

সরকারের দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বিরোধ হলে আদালতে না গিয়ে নিজেরাই তা নিষ্পত্তি করার জন্য দুটি কমিটি গঠনের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2015, 09:41 AM
Updated : 30 Nov 2015, 09:41 AM

সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই সচিব ও মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, “দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে আদালতে না গিয়ে তারা সরাসরি এ কমিটির (সচিব) কাছে নালিশ করবে।

“এই কমিটি যদি নিষ্পত্তি করতে না পারে, তাহলে সেটা মন্ত্রিসভা কমিটিতে যাবে। সেটাই হলো আপিল কর্তৃপক্ষ।

এরপর কেউ চাইলে আদালতেও যেতে পারবে।”

বিরোধ নিষ্পত্তিতে যেসব মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে আদালতে গেছে, তারাও এ কমিটিতে আসতে পারবে জানিয়ে সচিব বলেন, “সেক্ষেত্রে মামলা প্রত্যাহার করা হবে।”

শফিউল আলম জানান, ‘আন্তঃমন্ত্রণালয় আইনগত বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটি’ নামে সচিব কমিটির প্রধান হবেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সংস্কার ও সমন্বয়)।

পাঁচ সদস্যের এই কমিটিতে আরও থাকবেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন প্রতিনিধি, যিনি অন্তত মহাপরিচালক পদমর্যাদার হবেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব (সমন্বয়) এ কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।

এছাড়া যেসব মন্ত্রণালয়ের বিরোধ, তাদের সচিব বা প্রতিনিধিও কমিটিতে থাকবেন বলে জানান তিনি।

কমিটি প্রয়োজন মনে করলে কাউকে সদস্য হিসাবে নেওয়ার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ মতামত নিতে পারবে।

আর আপিল কমিটিতে সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী সভাপতি হবেন। এর সদস্য হবেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব বা প্রধানমন্ত্রীর সচিব, আইন সচিব ও সচিব সমন্বয়। বিরোধ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরাও কমিটিতে থাকবেন।

কোনো মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিরোধ দেখা দিলে এই কমিটি এড়িয়ে অন্য কোনো মন্ত্রণালয় সরাসরি আদালতে যেতে পারবে কি-না জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “কেউ যাতে এভাবে আদালতে যেতে না পারে, সেজন্য একটি অনুশাসন জারি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

“সকল মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দেওয়া হবে যে তাদের আগে এই কমিটিগুলোতে আসতে হবে। সেখানে সন্তষ্ট না হলে আদালতে যাওয়ার সুযোগতো আছেই। মূল বিষয় হলো- আপিলে যে সিদ্ধান্ত হবে, সেটা চূড়ান্ত। এরপর আর কোথাও যাওয়ার কথা নয়। ডিসিপ্লিনের জন্য।”

বর্তমানে সরকারের দপ্তরগুলোর মধ্যে কতগুলো মামলা চলছে তার কোনো পরিসংখ্যান জানাতে না পারলেও সচিব বলেন, “সংখ্যাটি অনেক।”

কমিটি করার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর অফিসের অনুশাসন হলো, দুই মন্ত্রণালয় একে অপরের সহযোগী। তারা বিবাদে লিপ্ত হবে কেন? আমরা বিরোধে লিপ্ত হব না। নিজেদের মধ্যে আপোসে এটা নিষ্পত্তি করব।”

মন্ত্রিসভার নির্ধারিত আলোচনার আগে এদিন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব আবু বকর সিদ্দিকের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব পাস হয়। তার আত্মার শান্তি কামনা করে মন্ত্রিসভা।

এছাড়া শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান এবং নৌ-পরিবহন সচিব শফিক আলম মেহেদির অবসর উপলক্ষে দীর্ঘ চাকরিজীবনের অবদানের জন্য তাদের অভিনন্দন জানানো হয়।