নিজামীর আপিলে যুক্তি উপস্থাপন শুরু

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর আপিলে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেছে আসামিপক্ষ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2015, 05:30 AM
Updated : 30 Nov 2015, 05:47 PM

সোমবার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চে সপ্তম দিনের শুনানিতে আসামিপক্ষ যুক্তি উপস্থাপন শুরু করে।

আপিল বেঞ্চের অন্য তিন সদস্য হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

মঙ্গলবার ও বুধবারও আসামিপক্ষ যুক্তি উপস্থাপন করার সুযোগ পাবে। এরপর ৭ ডিসেম্বর যুক্তি দেবে রাষ্ট্রপক্ষ। আসামিপক্ষ এর উত্তর দিতে চাইলে সময় পাবে ৮ ডিসেম্বর।

গত ২৫ নভেম্বর নিজামীর আপিল নিয়ে ষষ্ঠ দিনের শুনানিতে আসামিপক্ষের পেপারবুক উপস্থাপন শেষে আদালত সোমবারসহ এই দিনগুলি ঠিক করে দেয়।

এর ধারাবাহিকতায় সকাল সাড়ে ১০টায় যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন নিজামীর আইনজীবী এস এম শাজাহান; সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির।

রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও সহকারী অ্যার্টনি জেনারেল বশির আহমেদ।

এস এম শাজাহান নিজামীর বিরুদ্ধে আনা প্রথম ও দ্বিতীয় অভিযোগের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের স্বাক্ষীদের দেওয়া বক্তব্যের অসঙ্গতি তুলে ধরেন। পরে তৃতীয় অভিযোগের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের দুই সাক্ষীর বক্তব্যের অসঙ্গতি তুলে ধরেন।

সাড়ে ১০টা থেকে মাঝে আধঘণ্টা বিরতি দিয়ে বেলা সোয়া একটা পর্যন্ত শুনানি চলে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আসা ষষ্ঠ মামলা এটি, যার ওপর শুনানি চলছে।

বুদ্ধিজীবী গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, সম্পত্তি ধ্বংস, দেশত্যাগে বাধ্য করা, আটক, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র ও সংঘটনে সহযোগিতার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় গত ২৯ অক্টোবর নিজামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় ট্রাইব্যুনাল।

জামায়াতে ইসলামীর আমির নিজামী একাত্তরে ছিলেন দলটির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নাজিমে আলা বা সভাপতি এবং সেই সূত্রে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত আল বদর বাহিনীর প্রধান।

স্বাধীনতাকামী বাঙলির ওপর দমন-পীড়ন চালাতে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত রাজাকার বাহিনী ও শান্তি কমিটিতেও তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে ট্রাইব্যুনালের রায়ে উঠে আসে।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে গত ২৩ নভেম্বর সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেন নিজামী। ছয় হাজার ২৫২ পৃষ্ঠার নথিপত্রসহ নিজামীর করা আপিলে ১৬৮টি যুক্তি তুলে ধরে সাজার আদেশ বাতিল করে খালাস চাওয়া হয়। সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ায় রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেনি রাষ্ট্রপক্ষ।

ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে সুপ্রিম কোর্টে অবকাশের আগেই এ শুনানি শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।