জাতিসংঘে ‘গণতন্ত্রায়ন’ চাইলেন তথ্যমন্ত্রী

জাতিসংঘসহ সব আন্তর্জাতিক সংস্থার গণতন্ত্রায়ন চেয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2015, 03:29 PM
Updated : 29 Nov 2015, 03:29 PM

রোববার আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিন সংহতি দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ শান্তি পরিষদ আয়োজিত এক সভায় বক্তব্যে এই দাবি তুলে ধরেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বক্তব্যে ঢাকায় ফিলিস্তিনের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ইউসুফ এস রামাদান বলেন, ১৯৪৭ সালের জাতিসংঘে গৃহীত প্রস্তাবে ফিলিস্তিনিরা ‘চরম অন্যায়’র শিকার হয়েছিল।

তার বক্তব্যের পর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ইনু বলেন, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এখন পর্যন্ত গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না।

“সেই জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভিন্ন রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ, অনাচার অথবা প্রভাব বিস্তারের অগণতান্ত্রিক প্রয়াসগুলো যদি আটকাতে চান, সেই দেশের জনগণ ও পৃথিবীর গণতান্ত্রিক জনগণের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের পাশাপাশি জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে বর্তমান পরিচালনা পদ্ধতি পরিবর্তন করে গণতান্ত্রিক পরিচালনা পদ্ধতি চালুর পক্ষে মত প্রকাশ করা দরকার।”

এই দাবির পক্ষে বিশ্বজুড়ে জোরালো জনমত গঠনে সচেষ্ট হওয়ার উপরও জোর দেন তথ্যমন্ত্রী।

জাতিসংঘের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনি জনগণের বিপক্ষে গেছে বলে বিভিন্ন বক্তাদের বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, কিন্তু আন্তর্জাতিক সংস্থা যে সিদ্ধান্তই নিক না কেন, মুক্তিকামী জনগণ তার হৃদয় দিয়ে, শক্তি দিয়ে এই সব অন্যায়ের প্রতিকার করে থাকে। 

“১৯৭১ সালে আন্তর্জাতিক সকল সংস্থার উদাসীনতার মুখে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হয়ে প্রমাণ করেছে, জাতিসংঘ যা পারে না, জনগণ তা পারে।”

‘গণতান্ত্রিক’ নয় বলেই জাতিসংঘের কাছ থেকে একতরফা বিবৃতি আসে দাবি করে এর সপক্ষে বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না করতে বিশ্ব সংস্থাটির আহ্বানের কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। 

“আজকের ফিলিস্তিনের জন্য আমরা সংহতি প্রকাশ করতে দাঁড়িয়েছি, দুইদিন আগে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিক বিবৃতির মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে দরদ দেখিয়েছে।”

ফিলিস্তিনের প্রতি জাতিসংঘের বৈষম্যের দৃষ্টান্ত দিতে গিয়ে তিনি বলেন, তাদের প্রতি ১৯৪৭ সালের রেজুলেশন ১৮১ ছিল পক্ষপাতদুষ্ট এবং ফিলিস্তিনের প্রতি পূর্ণ অবিচার।

“স্বাধীন ফিলিস্তিনের রাজধানী জেরুজালেম হতে হবে, এটা যুক্তিযুক্ত দাবি,” বলেন তিনি।  

১৯৮১ সালে ইরাকের বাগদাদে ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাতের সঙ্গে দেখা হওয়ার কথাও বলেন জাসদ সভাপতি ইনু।

“আমাদের দল জাসদ থেকে আমরা ১৯৮০-৮১-৮২ সালে ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ফিলিস্তিনে স্বেচ্ছাসেবক পাঠিয়েছিলাম। আমাদের সেই সময়কার স্বেচ্ছাসেবকদের একজন বর্তমান আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হাসান বেলাল, সেও কিন্তু ফিলিস্তিনের মুক্তিযোদ্ধা।”

বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সাজ্জাদ হায়দার প্রমুখ।