পৌর ভোট: চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সোমবার জানাবে ইসি

আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে পৌরসভায় ভোট ৩০ ডিসেম্বর থেকে পেছাতে রাজি না হলেও কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দাবির প্রেক্ষাপটে সোমবার এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন।  

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2015, 12:08 PM
Updated : 29 Nov 2015, 01:17 PM

রোববার আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পর বিকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের একথা জানান।

৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন রেখে তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি ভোট পেছানোর দাবি তোলে। তফসিল পুনর্বিন্যাসের দাবি জানায় ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টি ও ওয়ার্কার্স পার্টিও।

রোববার আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির প্রতিনিধি দল ইসিতে গিয়ে সিইসির সঙ্গে আলোচনা করে।

তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর কাজী রকিব সাংবাদিকদের বলেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই ডিসেম্বরের মধ্যে ২৩৬ পৌরসভায় ৩০ ডিসেম্বর ভোট করা হচ্ছে।

“যথেষ্ট সময় রেখেছি, যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর ভোট করার লাস্ট চান্স।”

বৈঠকেও বিএনপি ও জাতীয় পার্টি নেতাদের পেছানোর সমস্যার কথা জানান সিইসি।

তার সঙ্গে বৈঠক করে বেরিয়ে বিএনপি নেতা ওসমান ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, “ভোট পেছানোর বিষয়ে আইনি বাধার কথা সিইসি আমাদের জানিয়েছেন।

“আমরা বলেছি, প্রয়োজনে আইন সংশোধন করা যেতে পারে। মানুষের প্রয়োজনে আইন। ইসি চাইলে তা সরকারেরও কোনো বিষয় নয়।”

সিইসি বলেন, “আমরা সবার কথা শুনেছি। নিবন্ধিত দলগুলো যেসব দাবি করেন তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। অন্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়ে সোমবার আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।”

ভোট পেছানোর সমস্যা তুলে ধরে তিনি বলেন, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ, বিশ্ব ইজতেমা ও পরীক্ষার কারণে ডিসেম্বরে ভোট করার বাধ্যবাধকতার বিষয়টি সবার জানা।

“যদি ৩০ ডিসেম্বর ভোট করতে পারি, তা হবে লাস্ট চান্স। তা না হলে আইন ভঙ্গ হয়ে যাবে। ভোট ভোট যদি পেছাতে না পারি, তার কারণ কী, জানিয়ে দেব আমরা।” 

বিএনপি পৌর ভোট ১৫ দিন পেছানোর দাবির সঙ্গে এমপিদের প্রচারণার সুযোগ না দেওয়ার বিধি বহাল রাখার দাবি জানায়। গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিও জানিয়েছে তারা।  

নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবির বিষয়ে সিইসি বলেন, এটা আইনি বিষয়। আদালত রয়েছে এ সংক্রান্ত বিষয় দেখতে। আদালত যা নির্দেশনা দেবে, তা মানতে হবে।

“কাউকে অযথা যেনো কেউ হয়রানি না করে, কেউ যদি হয়রানির শিকার হয়-তা না করার আহ্বান থাকবে সংশ্লিষ্টদের কাছে।”

আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি এমপিদের প্রচারের সুযোগ দেওয়ার দাবি তুলে ধরে।

এবিষয়ে কাজী রকিব বলেন, “সার্বিক বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তারপর কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে জানানো হবে।”

প্রধান তিন দলের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে সিইসির সঙ্গে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম থাকলেও ছিলেন না অন্য চার নির্বাচন কমিশনার।

আরও ৬টি দলের প্রত্যয়নকারীর নাম জমা

খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, এলডিপি, বাসদ ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি রোববার পৌর মেয়র পদে প্রত্যয়নকারী ব্যক্তির তালিকা জমা দিয়েছে।

এ নিয়ে ১৮টি দল নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে। বর্তমানে ৪০টি নিবন্ধিত দল রয়েছে।

এখন মনোনয়নপত্র দাখিলের অপেক্ষা। ৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ।

২৪ নভেম্বর পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই দলগুলোকে একক প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার বিধান উল্লেখ করে চিঠি দেয় ইসি।

নতুন বিধি অনুযায়ী, দলের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক/সমপদাধিকারী/ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির প্রত্যয়নে দলকে প্রার্থী মনোনয়ন দিতে হবে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, এখন পর্যন্ত কোনো দল কেন্দ্রের বাইরে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি নির্বাচন করেনি।

সেক্ষেত্রে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের মনোনয়নে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় রয়েছে দলগুলোর।

মেয়র পদে দলভিত্তিক হলেও সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্দলীয় ভোট হবে।